এদেশে কিছু ব্যবসায়ী ভেজাল ওষুধ তৈরী করেন:স্বাস্থ্যমন্ত্রী-ওয়ান ফার্মার ওষুধ গুণগত মানে বিশ্বমানের: মোস্তাফিজুর
এস রহমান: ওষুধের দোকানের লাইসেন্স নবায়ন করা না হলে দোকান বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। তিনি বলেন, ‘মুড়ি-মুড়কির দোকানে ওষুধ বিক্রি চলবে না।’ শনিবার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে ওয়ান ফার্মার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন মন্ত্রী।
বিশেষ অতিথি ছিলেন কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশের সভাপতি কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান, আর্মড ফোর্সেস মেডিকেল কলেজ কমান্ড্যান্ট মেজর জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর হোসেন মল্লিক, ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোস্তাফিজুর রহমান।
মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা যে হাসিমুখ দেখতে চান, তারই একটি যাত্রা শুরু করেছে ওয়ান ফার্মা। যমুনা সেতুর কারণে আজ উত্তরাঞ্চলের চেহারা পরিবর্তন হয়েছে, কৃষকদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়েছে।
যোগাযোগব্যবস্থার পরিবর্তনের কারণে কৃষকের হাসিমুখ দেখছি। যোগাযোগ এবং বিদ্যুৎ ছাড়া শিল্প উন্নয়ন কল্পনা সম্ভব নয়। বাংলাদেশের ওষুধশিল্পে যাঁরা জড়িত ছিলেন, তাঁরা দুনিয়ায় ছড়িয়ে গেছেন। শ্রীলঙ্কা, ভুটান, মালদ্বীপ, এমনকি ইউরোপের অনেক দেশ আমাদের ওষুধ নিতে চায়। এমনকি ইরান, তুরস্কও আমাদের ওষুধ নিতে এগিয়ে এসেছে। যাঁরা ওষুধ রপ্তানি করে আয় করছেন, তাঁদের দাম কমানো উচিত।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ওষুধের মধ্যেও ভেজাল আছে। এ দেশে কিছু ব্যবসায়ী আছে, তারা ভেজাল ওষুধ তৈরি করে। বিষাক্ত প্যারাসিটামল খেয়ে মারা গেছে এমন একজনের বিচার হয়েছে ২০ বছর পর। বাংলাদেশে যারা ভুয়া ক্লিনিক করেছে, তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
স্বাগত বক্তব্যে ওয়ান ফার্মা লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কে এস এম মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘সমাজের সর্বস্তরের মানুষ, বিশেষ করে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর মুখে হাসি ফোটানোর লক্ষ্যেই ওয়ান ফার্মার যাত্রা। ওয়ান ফার্মা থেকে উৎপাদিত প্রতিটি ওষুধ গুণগত মানের দিক থেকে হবে বিশ্বমানের, যা দেশের স্বাস্থ্য খাতে এক বিশেষ ভূমিকা পালন করবে। সে সঙ্গে দেশের অর্থনীতিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করবে।’
মোস্তাফিজুর রহমান আরো বলেন, ‘আমরা ন্যাশনাল অ্যাগ্রিকেয়ার-এর মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের কৃষকদের সুবিধা দিয়ে এসেছি। আমরা স্বাস্থ্যসেবায়ও নিজেদের নিয়োজিত করতে চাই। আমরা কোয়ালিটি সম্পন্ন মেডিসিন উৎপাদন করার জন্য সব ব্যবস্থা নিয়েছি। বগুড়া, দিনাজপুর, কুমিল্লা, ঢাকাসহ দেশের ৪০টি জেলায় আমরা আমাদের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে যাচ্ছি। সারা পৃথিবীর ১০০টি দেশে বাংলাদেশের ওষুধ রপ্তানি হচ্ছে। তাই এর সম্ভাবনাও বেশি। তবে উন্নত বিশ্বের অনেক ওষুধ এখনো আমাদের দেশে আসেনি। সবার সহযোগিতা পেলে ওয়ান ফার্মা তাদের সেবা দেশ ও দেশের বাইরে পৌঁছে দেবে। আমাদের দেশের স্বাস্থ্যসেবা প্রত্যন্ত অঞ্চলে পৌঁছে যাবে, সে লক্ষ্যে যেমন সরকার কাজ করছে, সে স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হলে সবার সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে।’
ফুড ও মেডিসিনকে একই মন্ত্রণালয়ে আনার প্রস্তাব রেখে মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘পৃথিবীর উন্নত দেশে স্বাস্থ্যসেবায় ফুড ও মেডিসিন একসঙ্গে কাজ করছে। সত্যিকারের স্বাস্থ্যসেবা পেতে হলে আমাদের খাদ্য ও ওষুধ খাতকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।’
বিশেষ অতিথি আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ‘সেদিন আর বেশি দূরে নয়, যেদিন আমাদের ওষুধ আমরাই তৈরি করতে পারব। বিদেশিদের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে না।’ ওয়ান ফার্মা শুধু ওষুধ উৎপাদনই নয়, তারা কাঁচামাল তৈরি করবে—এমন প্রত্যাশা করেন তিনি।