এটিএম জালিয়াত ফরিদ-সিটি ব্যাংকের ৩ কর্মকর্তা নাটেরগুরু
বিশেষ প্রতিবেদক : সিটি ব্যাংকের কার্ড ডিভিশনের তিন কর্মকর্তাকে রিমান্ডে নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছেন গোয়েন্দারা। জালিয়াত চক্রের এক রাঘববোয়াল ইতিমধ্যে দেশ থেকে পালিয়ে গেলেও সহযোগীরা রয়েছে বহাল তবিয়তে।
ব্যাংকের এটিএম বুথে কার্ড জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে পিটার সিজোফেন মাজুরেক নামের এক বিদেশি নাগরিক ও সিটি ব্যাংকের তিন কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার হলেও ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছেন ফরিদ নাবির।
গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) কর্মকর্তাদের ভাষ্য, বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক ফরিদ নাবির পুরো ঘটনার ‘মূল পরিকল্পনাকারী’ ছিলেন। বাংলাদেশে তাঁর বাড়ি সিলেটে শহরের পীরমহল্লা এলাকায়। জালিয়াতির এই কাজে প্রযুক্তিগত সহায়তা দিয়েছেন আন্তর্জাতিক জালিয়াত চক্রের সদস্য ও ইউক্রেনের এএনডি এবং রোমানিয়ার রোমিও।
বাংলাদেশে ৩১ জানুয়ারি আসেন এএনডি ও রোমিও। রোমিও ১৩ ফেব্রুয়ারি দেশ ছাড়েন। পরের দিন ১৪ ফেব্রুয়ারি চলে যান এএনডি। আর পিওটার তো এক বছরের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশে অবস্থান করছেন। এ দেশের এক নারীকে বিয়ে করে গুলশান-২ নম্বরের একটি ফ্ল্যাটে সংসারও পেতেছিলেন তিনি।
ডিবি কর্মকর্তাদের ভাষ্য, পরিকল্পনার পাশাপাশি জালিয়াতি চক্রের সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করছেন ফরিদ নাবির। এ জন্য একাধিকবার বাংলাদেশে আসেন তিনি। প্রথমে পিওটরের সঙ্গে ২০১৪ সালের ১৩ ডিসেম্বর বাংলাদেশে আসেন ফরিদ নাবির। গুলশানের হলিডে প্লানেটে অবস্থান করে ২০১৪ সালের ২৪ ডিসেম্বর ঢাকা ছাড়েন তিনি।
তবে পিওটর বাংলাদেশে থেকে যান। এর পর দীর্ঘ এক বছর পর সর্বশেষ কার্ড জালিয়াতির জন্য ২০ জানুয়ারি ঢাকায় এসে আবারও হলিডে প্লানেট হোটেলে ওঠেন। হলিডে প্লানেটের কাগজপত্র ঘেঁটে দেখা গেছে, ১৫ দিন অবস্থান করে ব্যাংকের কার্ড জালিয়াতির পর ৩ ফেব্রুয়ারি সকালে ঢাকা থেকে লন্ডনে চলে যান ফরিদ নাবির।
হোটেলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, ওই দিন সকাল ৮টা ১০ মিনিটে হলিডে হোটেল ছাড়েন ফরিদ। একটি নীল রঙের পাজেরো জিপে চড়ে বিমানবন্দরের দিকে রওনা হন তিনি। নীল শার্ট পরা ফরিদের সঙ্গে চালকসহ আরও দুজনকে গাড়িতে উঠতে দেখা গেছে।
এক ডিবি কর্মকর্তা দাবি করেন, লন্ডনে বাংলাদেশ সরকারবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত ফরিদ নাবির। ফরিদের সঙ্গে সিটি ব্যাংকের তিন কর্মকর্তার প্রথমে পরিচয় হয়। ফরিদের মাধ্যমে তাঁদের সঙ্গে পিওটরের পরিচয় হয়।
এ ব্যাপারে ডিবি অতিরিক্ত উপকমিশনার মো. শাহজাহান বলেন, এই চক্রটি বাংলাদেশে আরও বড় ধরনের জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত। পিওটারসহ সিটি ব্যাংকের তিন কর্মকর্তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য বের করার চেষ্টা করা হচ্ছে।