• সোমবার , ২৫ নভেম্বর ২০২৪

এখনো ‘অমানুষ’ ঢাকা-৪ আসন


প্রকাশিত: ১১:২৭ পিএম, ১০ জানুয়ারী ২৪ , বুধবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৩৮ বার

তাঁর প্রতিক্রিয়ায় প্রথমেই মহান আল্লাহ’র কাছে শুকরিয়া আদায় করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান ব্যতিক্রমী নির্বাচনের মাধ্যমে তাঁকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে যোগ্যতা যাচাইয়ের মাধ্যমে জনগনকে সেবা করার সুযোগ করে দেয়ার জন্যে।

স্বতন্ত্র ড.আওলাদ এমপির যুদ্ধ জয়ের শপথ-

শফিক রহমান : অবশেষে স্বতন্ত্র ড.আওলাদ হোসেন এমপি’র যুদ্ধে জিতলেন এবং আদালতের নির্দেশে বুধবার (১০ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিনের কাছে শপথ গ্রহণ করেন তিনি। এর আগে গত কটা দিন তাঁকে অহেতুক হেনস্তার শিকার হতে হয়েছে। কিন্তু শেষমেষ তিনি জিতেছেন উচ্চ আদালতের মহান রায়ের মাধ্যমে।

এ সম্পর্কে তিনি দৈনিক সত্যকথা প্রতিদিন এর কাছে তাঁর প্রতিক্রিয়ায় প্রথমেই মহান আল্লাহ’র কাছে শুকরিয়া আদায় করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান ব্যতিক্রমী নির্বাচনের মাধ্যমে তাঁকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে যোগ্যতা যাচাইয়ের মাধ্যমে জনগনকে সেবা করার সুযোগ করে দেয়ার জন্যে।

ড. আওলাদ বলেন, রাজধানীর ঢাকা ৪ আসনে ইতিপূর্বে যারা নেতৃত্ব দিয়েছেন তারা এই এলাকার তেমন উন্নয়ন করেন নাই বললেই চলে। এখানকার সবচেয়ে বড় সমস্যা গ্যাস নাই। এরপরও অসংখ্য বেকার মানুষ। কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা নেন নাই ইতিপূর্বেকার জনপ্রতিনিধিরা। তার ওপর সন্ত্রাস চাঁদাবাজি প্রকট আকার ধারণ করেছে এলাকাটিতে। এককথায় ঢাকার ভিতর অন্ধকার অমানুষ-ময় এলাকা যেনো ঢাকা-৪ আসন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশের কাছে বড়ই বেমানান রাজধানীর ডেমরা শ্যামপুর কদমতলী যাত্রাবাড়ি এলাকার ঢাকা ৪ আসন। একসময়কার ঢাকার ডেমরা এলাকা বর্তমান ঢাকা-৪ আসনটি ঢাকা জেলার ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৪৭, ৫১, ৫২, ৫৩, ৫৪ নং ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত।এসব ওয়ার্ডে এখনও তেমন কোনো
উন্নয়ন ছোঁয়া লাগেনি।

যাহোক, ঢাকা-৪ আসনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফল স্থগিত করে হাইকোর্টের দেয়া আদেশ স্থগিত করেছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের চেম্বার কোর্ট। আপিল বিভাগের চেম্বার কোর্ট বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম বুধবার শপথ পড়নোর আদেশ দেন। আদালতে আওলাদ হোসেনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।

তিনি দৈনিক সত্যকথা প্রতিদিন কে জানান, নির্বাচনে বিজয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থী আওলাদ হোসেনকে অবিলম্বে শপথ দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। সংসদ সচিবালয়ের সচিবকে তার শপথের আয়োজন করতে বলা হয়েছে। আদালত হাইকোর্ট আদেশ ৮ সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেছে। আমাদেরকে নিয়মিত লিভ টু আপিল দাখিল করতে বলেছে।

তিনি বলেন, নির্বাচন হয়ে যাওয়ার পর এই সংক্রান্ত যেকোনো অভিযোগ বিষয়ে আগে ট্রাইব্যুনালে যেতে হয়। আওলাদ হোসেনের শপথ নেয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে মঙ্গলবার হাইকোর্টের দেয়া আদেশ স্থগিতে আমরা আবেদন (সিএমপি) দাখিল করি। বুধবার উভয়পক্ষকে শুনে আদালত আদেশ দেয়। আদালতে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার খান মোহাম্মদ শামীম আজিজ। সানজিদা খানমের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এবিএম আলতাফ হোসেন, মোতাহার হোসেন সাজু, আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৪ আসনের গেজেট প্রকাশে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে মঙ্গলবার আদেশ দেয় হাইকোর্ট। ইসির প্রতি এ আদেশ দেয় উচ্চ আদালত। বিচারপতি আবু তাহের সাইফুর রহমান ও বিচারপতি ড. বশির উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।ঢাকা-৪ আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সানজিদা খানম আদালতের আদেশের বিষয়টি মঙ্গলবার জানান। তিনি দাবি করে বলেন, নানা অনিয়মের জন্য ঢাকা-৪ আসনের ১৮টি ভোটকেন্দ্র পুনরায় নির্বাচন চেয়ে ইসিতে আবেদন করা হয়েছে। এ আবেদন ১০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে ইসির প্রতি নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে তিন সপ্তাহের রুলও জারি করেছিল আদালত।

পরে এই আদেশ স্থগিতে আপিল বিভাগে আবেদন করে ড.আওলাদ তাঁর পক্ষে রায় পান এবং আজ বুধবার শপথ পড়নোর নির্দেশ দেন আদালত। আপিল বিভাগের নির্দেশানুযায়ী জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. আওলাদকে আজ বুধবার শপথ পড়ান। নির্বাচনে ঢাকা-৪ আসনে ট্রাক প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী আওলাদ হোসেন ২৪ হাজার ৭৭৫ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে সানজিদা খানম পান ২২ হাজার ৫৭৭ ভোট।

এত্তসব ঝক্কিঝামেলার পেরিয়ে শপথ নিয়েই ড. আওলাদ এলাকায় চলে যান বলে দৈনিক সত্যকথা প্রতিদিনকে জানান তিনি। ঢাকা-৪ আসন নিয়ে তিনি খোলাখুলি মত প্রকাশ করে বলেন, এখানকার সবচেয়ে বড় সমস্যা গ্যাস নাই। ঢাকার ভিতর অথচ এই এলাকার মানুষ এখনও গ্যাস পায়নি। গ্যাস না থাকায় এখানকার শ্যামপুর শিল্প এলাকা ঘোষণা হলেও তেমন শিল্প কারখানা নেই বললেই চলে।
অসংখ্য কর্মচঞ্চল বেকার মানুষ এখানে। এদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা নেন নাই ইতিপূর্বেকার জনপ্রতিনিধিরা।ফলে সন্ত্রাস চাঁদাবাজি প্রকট আকার ধারণ করেছে এলাকাটিতে।

এ অবস্থা থেকে উত্তরণে তিনি কি পদক্ষেপ নেবেন জানতে চাইলে ড. আওলাদ বলেন, প্রথমেই এসব এলাকায় গ্যাস নিয়ে আসতে হবে। নিম্নবিত্ত মানুষদের কর্ম সংস্থানের ব্যবস্থা করব। এলাকার সব সম্প্রদায় বিশেষ করে যুব সমাজের কাজের ব্যবস্থা করব। শিক্ষার প্রসার ঘটাতে হবে। কর্মসংস্থানের জন্য যুবক যুবতীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য উপযোগী করার ব্যবস্থা নেবো। এজন্য ড. আওলাদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সকল মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীদেরও সহযোগীতা কামনা করেছেন।