এক যুগের বেশি কারাগারে-৫ তরুণকে জামিন দিয়েছে হাইকোর্ট
হাইকোর্ট রিপোর্টার : এক যুগের বেশি সময় ধরে কারাগারে থাকা এক গারো তরুণসহ পাঁচজনকে জামিন দিয়েছে হাই কোর্ট। এছাড়া আরও দুই আসামির মামলা তিন মাসের মধ্যে নিষ্পত্তির আদেশ দিয়েছে আদালত।এই সাতজনকে বৃহস্পতিবার কারাগার থেকে আদালতে হাজির করার পর তাদের বক্তব্য শুনে বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান ও বিচারপতি এসএইচ মো. নুরুল হুদা জায়গীরদারের হাই কোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেয়।সাত আসামির পক্ষে আদালতে শুনানি করেন সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড কমিটির প্যানেল আইনজীবী বেহেশতী মারজান।
জামিন পাওয়া পাঁচজন হলেন- কুষ্টিয়ার রাসেল শেখ, মতিঝিলের মাসুদ, গাজীপুরের বোর্ড বাজারের বাবু, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পারভেজ ও নেত্রকোণার গারো তরুণ লিটন।দুটি হত্যা মামলায় রাজধানীর বাড্ডার সাইদুর রহমান ও কেরানীগঞ্জের রাজীব হোসেন এর আগে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ায় তাদের জামিন না দিয়ে আগামী তিন মাসের মধ্যে তাদের মামলা নিষ্পত্তির নির্দেশ দেয় আদালত।
একটি টেলিভিশন চ্যানেল এই সাতজনকে নিয়ে একটি প্রতিবেদন সম্প্রচার করলে সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড কমিটির প্যানেল আইনজীবী বেহেশতী মারজান বিষয়টি আদালতের নজরে আনেন। এরপর গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর কারাবন্দি সাতজনকে হাজিরের নির্দেশ দিয়ে রুল জারি করে আদালত।
কেন তাদের জামিন দেওয়া হবে না- রুলে তা জানতে চায় বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি জে বি এম হাসানের হাই কোর্ট বেঞ্চ।ওই সাতজনই বিভিন্ন মামলায় এক যুগের বেশি সময় ধরে কাশিমপুর-২ কারাগারে রয়েছেন।
আদালতের আদেশের পর আইনজীবী বেহেশতী মারজান সাংবাদিকদের বলেন, সাইদুর ও রাজীব হোসেন এর আগে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এছাড়া তাদের বিরুদ্ধে স্ত্রী হত্যার অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে আদালত তাদের জামিনের বিষয়টি বিবেচনা করেনি।
রাসেল শেখ
কুষ্টিয়া সদরের আইয়ুব শেখের ছেলে রাসেল শেখ ২০০৪ সালে কাফরুল থানায় একটি মামলায় ওই বছরের ১১ ডিসেম্বর থেকে কারাগারে রয়েছেন। অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত-৩ ঢাকায় বিচারাধীন এ মামলায় তাকে এ পযন্ত ৫৫ কার্যদিবস হাজির করা হয়।
সাইদুর রহমান
বাড্ডার আদর্শনগরের তাইবুর রহমানের ছেলে সাইদুর রহমান নারী নির্যাতনের এক মামলায় ২০০৫ সালের ৬ সেপ্টেম্বর থেকে কারাগারে রয়েছেন। ঢাকার নারী ও শিশু আদালত-৪ বিচারাধীন এ মামলায় সাইদুরকে ৫৯ বার আদালতে হাজির করা হয়।
রাজীব হোসেন
কেরাণীগঞ্জের ইমানদীপুরের মাহবুব আলমের ছেলে রাজীব হোসেন খিলগাঁও থানায় দায়ের করা এক মামলায় ২০০৩ সালের ৬ ডিসেম্বর থেকে কারাগারে রয়েছেন। অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত-৪ ঢাকায় বিচারাধীন এ মামলায় ৪৪ কার্যদিবস হাজির করা হয়েছে।
মো. পারভেজ
বি বাড়িয়ার পৈতলার চান মিয়ার ছেলে মো.পারভেজ কোতোয়ালী থানায় নারী নির্যাতনের অভিযোগে করা এক মামলায় ২০০৪ সালের ২ জুলাই থেকে কারাগারে রয়েছেন। ঢাকার নারী ও শিশু আদালত-৩ বিচারাধীন এ মামলায় পারভেজকে ৪২ কার্যদিবসে আদালতে হাজির করা হয়েছে।
মাসুদ
মতিঝিলের ওবায়দুর রহমানের ছেলে মাসুদ শ্যামপুর থানার এক মামলায় ২০০৩ সালের ০১ এপ্রিল থেকে কারাগারে রয়েছেন। অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত-২ ঢাকায় মামলাটি বিচারাধীন রয়েছে।
লিটন
নেত্রকোনার কমলাকান্দার চেংগিনি এলাকার প্রসেন সাংমার ছেলে লিটন উত্তরা থানায় দায়ের হওয়া এক মামলায় ২০০৫ সালের ২৩ জানুয়ারি থেকে কারাগারে রয়েছেন।অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত-৮ ঢাকায় বিচারাধীন এ মামলায় ৫৮ কার্যদিবস হাজির করা হয়েছে।
বাবু
গাজীপুরের জয়দেবপুরের বোর্ডবাজার এলাকার শাহাবুদ্দিনের ছেলে বাবু রমনা থানায় দায়ের হওয়া নারী নির্যাতনের এক মামলায় ২০০৩ সালের ১১ ডিসেম্বর থেকে কারাগারে রয়েছেন।ঢাকার নারী ও শিশু আদালত-৩ বিচারাধীন এ মামলায় বাবুকে ৪৪ কার্যদিবসে আদালতে হাজির করা হয়েছে।