• মঙ্গলবার , ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

একেই বলে দাদির ভালবাসা-এক শিশুর অবিশ্বাস্য অভিযান!


প্রকাশিত: ৬:৪২ পিএম, ১৬ মার্চ ১৭ , বৃহস্পতিবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ২৫৭ বার

gggঅনলাইন ডেস্ক রিপোর্টার  : একেই বলে দাদির ভালবাসা-। শূন্যের ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস নিচে হাড় জমে যাওয়া ঠান্ডা। বরফ চারদিকে। ঘুটঘুটে অন্ধকার। আলো ঢোকার সুযোগ না পাওয়া ঘন জঙ্গলে সারাক্ষণ দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ভয়ঙ্কর নেকড়ে। এসব কোনো কিছুই আটকে রাখতে পারেনি ৪ বছরের ছোট্ট শিশুকে। দাদীকে বাঁচাতে এসব অগ্রাহ্য করে পাশের গ্রামে পৌঁছতে ১২ মাইল রাস্তা পায়ে হেঁটে পাড়ি দিয়েছে সে।

সাইবেরিয়ার তুভা প্রজাতন্ত্রের এই ঘটনা এখন বিশ্বে সাড়া ফেলে দিয়েছে। স্থানীয় দৈনিক ‘কমস্কোমলোস্কোয়া প্রাভদা’র এক সাংবাদিক জানান, ওই শিশুকন্যার নাম সাগলানা সালচাক। মঙ্গোলিয়া সীমান্তে সাইবেরিয়ার এক দুর্গম এলাকায় অন্ধ দাদা ও প্রায় অথর্ব দাদির কাছে থাকে মেয়েটি। সাগলানার মা তার দ্বিতীয় স্বামীকে নিয়ে থাকেন পাঁচ মাইল দূরের একটি জায়গায়। এক দিন ভোরে হঠাৎ ঘুম ভেঙে যায় সাগলানার। ঘুম ভেঙে সে দেখে তার দাদি বিছানা থেকে উঠতে পারছেন না। প্রায় অচৈতন্য অবস্থা তার।

বাড়িতে টেলিফোন নেই, ইন্টারনেট নেই, আশপাশে পাঁচ-ছয় মাইলের মধ্যে কোনো ঘরবাড়িও নেই। তাই দাদির অসুস্থ হয়ে পড়ার খবর কোনো আত্মীয়-পরিজন বা পড়শিদের জানানো সম্ভবও ছিল না। তা বুঝে রাতের অন্ধকারেই হাড়জমানো ঠাণ্ডা উপেক্ষা করে, নেকড়ের ভয় না পেয়ে ঘন জঙ্গল পেরিয়ে ১২ মাইল দূরে আত্মীয়দের খবর দেওয়ার জন্য ঘর ছেড়ে বেরিয়ে পড়ে শিশুকন্যা সাগলানা।

পাঁচ মাইল দূরে মা যেখানে থাকেন, সেই জায়গাটা ভালভাবে চেনা ছিল না সাগলানার। ১২ মাইল দূরের আত্মীয়দের বাড়িটা তার মোটামুটি চেনা ছিল। দাদির সঙ্গে সে বেশ কয়েকবার গেছে ওই আত্মীয়দের বাড়িতে। কিন্তু বাড়িটা সে পেরিয়ে গিয়েছিল। সেখানেই এক আত্মীয় ভোরে রাস্তায় বেরিয়ে সাগলানাকে ওই রাস্তা ধরে হেঁটে যেতে দেখে। সাগলানাকে বাড়িতে আনতেই অসুস্থ হয়ে পড়ে সে। হাড়জমানো ঠাণ্ডায় অতটা রাস্তা হেঁটে আসার ধকল সইতে পারেনি বলেই অসুস্থ হয়ে পড়েছিল শিশু মেয়েটি।

পরে আত্মীয়স্বজনরা সাগলানার দাদির বাড়িতে গিয়ে জানতে পারেন, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তার দাদী মারা গেছেন। প্রায় অথর্ব দাদি ও দাদার ওপর শিশু মেয়েটিকে দেখভালের দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে কীভাবে সাগলানার মা দূরে থাকতে পারেন, তা নিয়েও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। শিশুর প্রতি অবহেলার দায়ে সাগলানার মায়ের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছে পুলিশ।