• সোমবার , ১৮ নভেম্বর ২০২৪

একাধিক মন্ত্রীসহ দেড় শতাধিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকে হুমকিদাতা হারামি হ্যাক সাইজ


প্রকাশিত: ৮:৩৬ পিএম, ১৩ মে ১৬ , শুক্রবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৮৯ বার

 

সাইফুল বারী মাসুম : একাধিক মন্ত্রীসহ দেড় শতাধিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকে হুমকিদাতা ‘হারামি হ্যাক’ abdul-haque-www.jatirkhantha.com.bdঅবশেষ সাইজ হয়েছে। তার বিরুদ্ধে চাজসিট দেয়া হয়েছে আদালতে। অন্যর ক্ষতি করাই লোকটির ধর্ম বলে তাকে এলাকায় হারিম হ্যাক বলে সবাই। এই হারামি হ্যাক বা আসামি আবদুল হক অর্থ, আইন, শিক্ষা, ও কৃষিমন্ত্রীসহ দেড় শতাধিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকে হত্যার হুমকিদাতা আবদুল হকের বিরুদ্ধে ঢাকার আদালতে গত ৩১ মার্চ অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ।

আজ আদালতে খোঁজ নিয়ে এর সত্যতা মিলে। অভিযোগত্রে দুই আসামি হলেন হাফেজ আবদুল হক ও তাঁর বন্ধু আমিনুর রহমান। বিভিন্ন সময়ে ফেসবুক, ইমেইল হ্যাক করার কারণে আবদুল হক এলাকা এবং বন্ধুদের কাছে ‘আবদুল হ্যাক’ নামেই পরিচিত।

আদালতে দেওয়া অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, আবদুল হক তাঁর দুই বন্ধুকে ফাঁসানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নম্বর সংগ্রহ করে প্রযুক্তি ব্যবহার করে মোবাইলে তাদের হত্যার হুমকি দিতেন। এই দুই বন্ধু হলেন সিলেটের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফয়জুর রহমান ও সালেহ আহম্মেদ ওরফে ফোয়াদ।তবে ফয়জুর রহমান আদালতকে বলেছেন, ২০০৭ সালে আবদুল হককে নিয়ে একটি সাংস্কৃতিক ফোরাম করেন।

একসঙ্গে তাঁরা লেখালেখি ও সাহিত্য চর্চা করতেন। কিন্তু আবদুল হক সরকার বিরোধী লেখালেখি করায় তাকে ওই ফোরাম থেকে বের করে দেন। এরপর প্রযুক্তির সাহায্যে তাঁর মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে হক প্রথমে অর্থমন্ত্রী আবদুল মাল আবদুল মুহিতকে হত্যার হুমকি দেন। পরে ২০১৩ সালে তাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে।

এরপর একইভাবে সে আইনমন্ত্রীকে হত্যার হুমকি দিলে র‍্যাব তাকে গ্রেপ্তার করে। কিন্তু পরে প্রমাণিত হয়, হত্যার হুমকি তিনি দেননি।
আবদুল হকের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ফয়জুর রহমান আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে বলেছেন, আবদুল হক ইন্টারনেট ব্যবহার করে অনেক মানুষের ফেসবুক, ইমেইল হ্যাক করে।

তাই এলাকার লোকে তাকে ‘আবদুল হ্যাক’ নামে ডাকে। এ নামে তাকে সবাই চেনে। আসামি আবদুল হক, আমিনুর রহমান ও তাদের বন্ধু ফয়জুরের বাড়ি সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার নোয়াকোট গ্রামে। আবদুল হক ও ফয়জুর একই মাদ্রাসা থেকে হাফেজ হন।

গত বছরের ২৫ নভেম্বর অর্থমন্ত্রী, কৃষিমন্ত্রী, শিক্ষাবিদ, সাংবাদিকসহ ১৫৩ জনকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগে রাজধানীর কারওয়ান বাজার এলাকা থেকে আবদুল হককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আর তাঁর বন্ধু আমিনুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয় ২৭ নভেম্বর। ডিবির পুলিশ পরিদর্শক শাহ মো. আক্তারুজ্জামান ইলিয়াস বাদী হয়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে আবদুল হকের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

আবদুল হক আদালতের কাছে দেওয়া জবানবন্দিতে বলেছেন, ‘সিলেট শহরে আমি আমার বন্ধু ও প্রতিবেশী ফয়জুর ও নোমান তিনজন মিলে মুক্তস্বর সাংস্কৃতিক ফোরাম নামে একটি সাহিত্য ফোরাম গঠন করি। পরবর্তী সময়ে ফয়জুরের সঙ্গে আমার বিরোধ দেখা দেয় এবং বন্ধুত্বে ফাটল ধরে।

আমি তথ্য প্রযুক্তির প্রতি প্রবল আগ্রহী। সেই সুবাদে প্রযুক্তিগত উপায়ে ফয়জুরকে শায়েস্তা করতে উপায় খুঁজতে থাকি। পরে আমি আবিষ্কার করি, অন্যের মোবাইল নম্বর ব্যবহার এসএমএস পাঠানো যায়। এতে আমি সফল হই। পরে ফয়জুর ও তার সহযোগী ফুয়াদের নম্বর ব্যবহার করে আমি অর্থমন্ত্রী, আইনমন্ত্রী, কৃষিমন্ত্রী, অধ্যাপক আনিসুজ্জামানসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকে হুমকি মূলক বার্তা পাঠাই।’

অভিযোগপত্রে তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির উপপরিদর্শক সনত দেব উল্লেখ করেন, ‘আবদুল হক জানতে পারে যে, বিনু নামের একটি অ্যাপসসহ অন্যান্য ‘স্ফুফিং’ দ্বারা অন্যের মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে বার্তা পাঠানো সম্ভব। যে মোবাইল সিম নম্বর ব্যবহার করে বার্তা পাঠানো হয় সেই মোবাইল সিম নম্বরে বার্তার একটা পিন নম্বর যায়। সেই পিন নম্বর সংগ্রহ করে বিনু অ্যাপসের মাধ্যমে অন্যের মোবাইল সিম নম্বর ব্যবহার করে বার্তা পাঠানো যায়।

পরে আসামি আমিনুর রহমানকে আবদুল হক এ বিষয়টি খুলে বলে। পরে আমিনুর ফয়জুরের মোবাইলের পিন নম্বর সংগ্রহ করে। এরপর আবদুল হক ফয়জুরের পিন নম্বর সংগ্রহ করে বিনু অ্যাপসহ অন্যান্য স্ফুফিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে দেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের হত্যার হুমকি দিয়েছেন।’