‘উপযুক্ত কারণছাড়া আটককৃত ব্যক্তিকে রিমান্ড বা শোন অ্যারেস্ট চলবে না’
বিশেষ প্রতিনিধি : উপযুক্ত কারণ এবং মামলার নথি পর্যালোচনা ছাড়া আটককৃত ব্যক্তিকে রিমান্ড আদেশ না দিতে অধস্তন আদালতের বিচারকদের নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। একই সঙ্গে মুক্তি পাবার পরপরই জেলগেট থেকে গ্রেফতার নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
শোন অ্যারেস্ট দেখাতে হলে অবশ্যই আসামিকে আদালতে হাজির করে অনুমতি নিতে হবে বলেও পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন সর্বোচ্চ আদালত।বিনা পরোয়ানায় ৫৪ ধারায় গ্রেফতার এবং রিমান্ডে নেয়া সংক্রান্ত মামলার রায়ে এসব নীতিমালা মেনে চলতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং বিচারকদের আদেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
মানবাধিকার সংগঠন আইন ও শালিস কেন্দ্রের সবশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এ বছরের অক্টোবর পর্যন্ত নিরাপত্তা হেফাজতে মারা গেছে ৫৭ জন। আর ১২৯ জন নিহত হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে। এমন প্রেক্ষাপটে আসামি গ্রেফতার এবং জিজ্ঞাসাবাদে সুস্পষ্ট কিছু নির্দেশনা এলো সর্বোচ্চ আদালত থেকে।
৫৪ ধারায় গ্রেফতার এবং রিমান্ডের বিষয়ে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায়ে দেয়া নীতিমালায় বলা হয়, আটককৃত ব্যক্তির মানবাধিকার নিশ্চিত করতে। পুলিশ হেফাজতে নির্যাতন ও মৃত্যু হলে দায়ীদের বিরুদ্ধে সরাসরি আইনগত ব্যবস্থা নিতে বিচারককে নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ। অন্য মামলায় শোন অ্যারেস্ট দেখাতে হলে আসামিকে অবশ্যই আদালতে হাজির করে বিচারকের অনুমতি নিতে বলা হয়েছে।
ভারপ্রাপ্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট মুরাদ রেজা বলেন, ‘হাই কোর্টের রায়টি মোডিফাই করে আপিল বিভাগ কিছু নির্দেশনা দিয়েছে।’কেন, কি কারণে আটককৃত ব্যক্তিতে রিমান্ডে নেয়া প্রয়োজন তা সুস্পষ্টভাবে কাগজপত্র’সহ আদালতকে জানাতে হবে এবং আদালত তা সূক্ষ্মভাবে পর্যালোচনা করেই কেবল রিমান্ড মঞ্জুর করতে পারবেন। সিনিয়র আইনজীবী শাহদীন মালিকের মত, আদালতের এ গাইড লাইন মানবাধিকার রক্ষায় মাইলফলক হয়ে থাকবে।
তিনি বলেন, ‘পুলিশ রিমাণ্ড চাইলে কেন রিমান্ড চাইছে, তার বিরুদ্ধে কি ধরণের অভিযোগ, কি প্রমাণ আছে এগুলো বিস্তারিত পুলিশকে কোর্টে উপস্থাপন করতে হবে। আর এই বিস্তারিত দেখে কোর্ট সিদ্ধান্ত নেবে।’
এ নীতিমালা সকল অধস্তন আদালতের বিচারক, আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে দ্রুত পাঠাতে বলা হয়েছে এবং সকল থানা এবং আদালতকে এ নীতিমালা মেনে চলতে বলেছেন আপিল বিভাগ।