‘উপদেষ্টা কম্প্রোমাইজে আসতে বলেছিল-কিন্তু ইশরাক বেঈমান না’
ইশরাক বেঈমান না, তাই কোনো আপস করিনি। আমি স্পষ্টত বলে দিয়েছি, আইনত আমি এখনো মেয়র। আগামী মেয়র নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব গ্রহণ না করা পর্যন্ত। তারা শপথ গ্রহণ করাল নাকি করাল না, এটি তাদের সমস্যা।
বিশেষ প্রতিনিধি : নিজেকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র দাবি করে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন বলেছেন, ‘উপদেষ্টা কম্প্রোমাইজে আসতে বলেছিল-কিন্তু ইশরাক বেঈমান না, তাই কোনো আপস করিনি। আমি স্পষ্টত বলে দিয়েছি, আইনত আমি এখনো মেয়র। আগামী মেয়র নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব গ্রহণ না করা পর্যন্ত। তারা শপথ গ্রহণ করাল নাকি করাল না, এটি তাদের সমস্যা।আজ শুক্রবার সকালে পবিত্র ঈদুল আজহার প্রধান জামাতের জন্য জাতীয় ঈদগাহ ময়দান পরিদর্শনে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন ।
এ সময় ইশরাক হোসেন বলেন, ‘নগর ভবনে কোনো প্রশাসক বসবে না, কোনো উপদেষ্টা বসবে না। সেখানে যদি কোনো ধরনের প্রশাসনিক সমস্যা হয়, তখন আমরা ৭৫ ওয়ার্ড থেকে যারা সাবেক কমিশনার ও কাউন্সিলর ছিলাম, ভোটার, গণ্যমান্য ব্যক্তি ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রিন্সিপালদের নিয়ে প্রয়োজনে “বিপ্লবী ঢাকা কাউন্সিল” টাইপের (ধরন) কিছু করে সেখানে সাময়িকভাবে নিয়োগ দিয়ে নগর ভবন চালাব। কিন্তু এখান থেকে ফিরে আসার কোনো সুযোগ নেই। হার মানার কোনো সুযোগ নেই।’
নির্বাচন কমিশনেও শপথ পড়ানোর ব্যবস্থা থাকা উচিত বলে মনে করেন ইশরাক হোসেন। তিনি বলেন, ‘শপথরুম একটি নির্বাচন কমিশনেও থাকতে পারত। সেটি (শপথ) নির্বাচন কমিশনেই পড়া যেত। কিন্তু আইনে সেই এখতিয়ার তাদের দেওয়া নেই। এই বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলা দরকার রয়েছে ভবিষ্যতে।জাতীয় ঈদগাহ ময়দান পরিদর্শনের বিষয়ে ইশরাক হোসেন বলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচিত এবং সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের পরে ঘোষিত মেয়র হিসেবে এখানে এসেছি। এটা দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। আগামীকালও পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের সঙ্গে মাঠে থাকব।
অনেকেই তাঁর বিষয়ে ভুল ধারণা করছেন উল্লেখ করে ইশরাক হোসেন বলেন, ‘আজ অনেকটা ভুল বোঝা হচ্ছে আমাকে। কিন্তু রাজনীতি এমন একটি জিনিস, এখানে যখন মাঠের বাস্তবতা চলে আসে এবং আপনি যখন রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের সঙ্গে লড়াই করবেন, তখন আর আপনার রাজনৈতিকভাবে কর্মসূচি পালন করা ছাড়া অন্য কোনো উপায় থাকে না। যার কারণে কিছু জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে।’
ইশরাক হোসেন বলেন, ‘আমিও (মেয়রের চেয়ারে) বসতে পারতাম, যদি তাদের (উপদেষ্টা) সঙ্গে আলোচনায় বসে কোনো একটা কম্প্রোমাইজে (আপসে) যেতাম। যেটির সম্ভাবনাও আমার কাছে নিয়ে আসা হয়েছিল। স্পষ্ট বলে দিয়েছি, এ ধরনের শপথ আমার বাসার সামনে এসে নিচে দাঁড়িয়ে থাকলেও আমি পড়ব না। আমি দেশ, জনগণ ও দলের সঙ্গে বেইমানি করব না। যেটা নিয়ম, সেটি আইনিভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, সেটি দিতে তাদের অসুবিধা কোথায়? এমনও তো হতে পারত, আমি ওখানে গিয়ে এক ঘণ্টা পর নিজেই ছেড়ে দিতাম।’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁকে ভিলেন বানানোর চেষ্টা করা হচ্ছে দাবি করে ইশরাক হোসেন বলেন, ‘এখন তো সোশ্যাল মিডিয়ার জাতীয় ভিলেনে পরিণত হয়ে গিয়েছি আমি একপ্রকার। কিন্তু আমার বিশ্বাস, একদিন সাধারণ জনগণ আমার পদক্ষেপ বা ভূমিকাটা বুঝতে পারবে যে কেন আমি আজ এই পদক্ষেপ নিয়েছিলাম।’
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ তাঁদের নিরপেক্ষতা হারিয়েছে দাবি করে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন বলেন, এই পরিষদ বহাল থাকা অবস্থায় কোনোভাবেই একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে না। উপদেষ্টাদের যদি রাজনীতি করার ইচ্ছা থাকে, তাহলে পদত্যাগ করে রাজনৈতিক দলে যোগ দিতে পারে।