‘উত্তরে-আমরা উইনেবল কেন্ডিডেট দেব’
বিশেষ প্রতিনিধি : আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) নির্বাচনে বিএনপির প্রস্তুতি নেই, সে কারণে তারা বিভিন্ন কথা বলছে। তবে উত্তর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আমরা উইনেবল কেন্ডিডেট দেব।আজ মঙ্গলবার সকালে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতালে ইডেন কলেজের ইতিহাস বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী অসুস্থ আঁখি মনিকে দেখতে গিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।
উত্তর সিটি করপোরেশনের নির্বাচন নিয়ে গতকাল সোমবার ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সমালোচনা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের এ কথা বলেন।ওবায়দুল কাদের বলেন, নিয়ম-নীতি উপেক্ষা করে নির্বাচন শুরু করে দেওয়ার জন্য উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো তোড়জোড় নেই।
নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী কেউ অযোগ্য ঘোষণা হলে বা কেউ মারা গেলে সে অবস্থায় তাঁর আসন শূন্য ঘোষণা করতে হয়। এটার একটি নিয়ম-নীতি আছে। নির্বাচন কমিশন নিয়ম অনুযায়ী আসন শূন্য ঘোষণা করেছে, এখানে আওয়ামী লীগ বা সরকার কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ করছে না। সেতুমন্ত্রী বলেন, এখানে সরকারের কিছু নেই। সরকারের এত তাড়াহুড়া করার দরকার নেই। নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী সব চলবে।
উত্তর সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী বাছাই করেছে কি না—এ প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে আমরা উইনেবল ক্যান্ডিডেট দেব।’
বিএনপির প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি আসলে কখন যে কী বলে, এটা কেবল তারাই জানে। তাদের নেতারা বলেন, যেকোনো পরিস্থিতিতে তাঁরা নির্বাচনে যাবেন। আবার খালেদা জিয়ার যদি সাজা হয়, তাহলে নির্বাচনে যাবেন না।
তিনি বলেন, সাজা হলে তা আদালত দেবেন। আর এই মামলা তো ফখরুদ্দিন-মইনুদ্দিন সরকারের সময়। এই মামলা করার সঙ্গে তো সরকারের কোনো সম্পর্ক নেই।
খালেদা জিয়ার বিচার সম্পর্কে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমাদের বক্তব্য হচ্ছে, খালেদা জিয়ার সাজা হবে কি হবে না, এটা আমাদের কোনো ব্যাপার নয়। এটা আমাদের সরকারের কোনো ব্যাপার নয়। এটা আদালতের বিষয়। আদালত সাজা দেবে কি দেবে না, এটা তাদের ব্যাপার। এখানে সাজা হলে তিনি উচ্চ আদালতে আপিল করতে পারবেন, এরপর রিভিউ আছে।’
আওয়ামী লীগ প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন নির্বাচন চায় না দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচন গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া। নির্বাচন আওয়ামী লীগও চায়, বিএনপিও চায়। প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন নির্বাচন আওয়ামী লীগ করতে চায় না। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারিতেও আওয়ামী লীগ চায়নি। তিনি বলেন, নির্বাচনের ট্রেন এবারও বিএনপির জন্য থেমে থাকবে না।
আওয়ামী লীগে সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এবারও আমরা বলছি, বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেবে, এটা আমরা জানি।
তারা এটা-সেটা বলছে, বিভিন্ন কারণে। আরও কিছু আদায় করা যায় কি না, সে জন্য হয়তো তারা এসব বলছে। তারা নির্বাচনে আসবে, তারা আসুক, এটাতে আমরা স্বাগত জানাই। কারণ, নির্বাচনটা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হোক, এটা আমরা চাই।’রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ প্রত্যাবর্তনই চাইছে।
আওয়ামী লীগ প্রত্যাবর্তন চেয়েছে, প্রত্যাবর্তনের তো একটা প্রক্রিয়া আছে, এটা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। উখিয়া টেকনাফের জনসংখ্যা হলো সাড়ে চার লাখ। সেখানে নতুন করে আরও সাত লাখেরও বেশি মিয়ানমারের রোহিঙ্গারা এসেছে। এখন সেখানে রোহিঙ্গাদের সংখ্যা মোট সাড়ে ১০ লাখেরও বেশি। ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সেখানে আমাদের সাড়ে চার লাখ লোক এখন উদ্বিগ্ন, তারা আতঙ্কিত। আমাদের পরিবেশ আজ হুমকির মুখে।
মাদের প্রকৃতি আজকে হুমকির মুখে। আমরা ভারসাম্য চাই।’ তিনি বলেন, এখনো রোহিঙ্গা আসছে, এ অবস্থায় প্রক্রিয়াটি বিলম্বিত হতে পারে। এই লোকগুলোকে যদি স্থানান্তরিত না করা যায়, তাহলে ওখানে স্থানীয়ভাবে সবদিক থেকে বিশেষ করে অর্থনৈতিকভাবে প্রচণ্ড চাপের সম্মুখীন হবে দেশ।থানীয় জনগণের বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তনের বিষয়টি যতই বিলম্বিত হচ্ছে, স্থানীয় জনগণ ততই ধৈর্যহারা হচ্ছে। জনগণ আর ধৈর্য ধরতে পারছে না। তাদের ধৈর্যের সীমা অতিক্রম করে যাচ্ছে। সে কারণে কিছু কিছু বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।