• রোববার , ১৭ নভেম্বর ২০২৪

উত্তরায় আলাউদ্দিন টাওয়ারে ভয়াবহ বিস্ফোরণ-কমপক্ষে ছয়জন নিহত


প্রকাশিত: ৬:৫০ পিএম, ২৪ জুন ১৬ , শুক্রবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৫৯ বার

বিশেষ প্রতিনিধি  :  রাজধানীর উত্তরার ট্রপিক্যাল আলাউদ্দিন টাওয়ার নামে একটি বহুতল শপিং Alauddin-Tower-www.jatirkhantha.com.bdকমপ্লেক্সে শুক্রবার সন্ধ্যায় লিফট ছিঁড়ে বিস্ফোরণ ও ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড হয়েছে। এতে কমপক্ষে ছয়জন নিহত হয়েছেন বলে ঘটনাস্থল থেকে জাতিরকন্ঠ প্রতিনিধি জানিয়েছেন। তাদের মধ্যে একজন নারী ও দুই শিশু রয়েছে।

লিফটের ভেতর প্রায় ১২ জন ছিলেন, তাদের সবারই নিহত হওয়ার আশংকা করছেন মার্কেটের লোকজন। ফায়ার সার্ভিস ভেতরে কাউকে প্রবেশ করতে না দেয়ায় ভেতরের পরিস্থিতি রাত ৯টা পর্যন্ত জানা সম্ভব হয়নি।

এছাড়া আগুনে পুড়ে এবং হুড়োহুড়ি করে বের হতে গিয়ে কমপক্ষে অর্ধশত ব্যক্তি আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি ইউনিট গিয়ে উদ্ধার কাজ শুরু করে। আশংকাজনক অবস্থায় একই পরিবারের দগ্ধ তিনজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, উত্তরার রাজলক্ষ্মী মার্কেট সংলগ্ন তিন নম্বর সেক্টরের ২ নম্বর সড়কে মার্কেটটির অবস্থান। ১৫ তলা ভবনের ৬ তলা পর্যন্ত মার্কেট। ওপরের ৯টি ফ্লোরে আবাসিক ভবন। ইফতারের আগমুহূর্তে মার্কেটের লিফটে ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত লোক ওঠে। এতে লিফটি ছিঁড়ে বিকট শব্দে আগুন ধরে যায়। লিফটের কাচ ও অন্যান্য সরঞ্জাম ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে এতে লোকজন আহত হয়।

আহতদের মধ্যে প্রকৌশলী মাহমুদুল হাসান, তার মেয়ে মেহনাজ হাসান মাইসা ও ছেলে মুস্তাকিম হাসান আহত হন। তারা একই পরিবারের সদস্য। মাহমুদুল হাসানের স্ত্রী মেহবুবা হাসান ভবনের ওপরে ছিলেন। তার অবস্থা জানা যায়নি। প্রকৌশলী মাহমুদুল হাসানের শরীরের ৮০ শতাংশ পুড়ে গেছে। মুস্তাকিম হাসানের দগ্ধ হয়েছে ২৩ শতাংশ। তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে।

পারিবারিক সূত্র জানায়, প্রকৌশলী মাহমুদুল হাসান ওই ভবনেরই প্রকৌশলী। নিচেই তার অফিস। সন্ধ্যায় পরিবারের সঙ্গে ইফতার করতে যান। সেখানেই তারা দুর্ঘটনায় পড়েন। তার স্ত্রী মেহবুবা হাসান ভবনের ওপরে ছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গুরুতরও আহত ও নিহতরা সবাই লিফটের ভেতরে ছিলেন। সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত লোক ওঠার কারণে লিফটি ছিঁড়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে। রাত ৯টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত উদ্ধার কাজ চলছিল। এলাকাটি বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। আশপাশের মার্কেট ও ভবনের বাসিন্দাদের মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। আহতরা হুড়োহুড়ি করে নামতে গিয়ে আহত হন। আগুনে মার্কেটের ভেতরে কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। বাইরে কিছু দোকানের কাচ ভেঙে গেছে। খবর পেয়ে পুলিশ, র‌্যাব ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা উদ্ধার কাজে অংশ নেন।

প্রত্যক্ষদর্শী মাজহারুল ইসলাম বলেন, দুর্ঘটনার ৪৫ মিনিট পর ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিস পৌঁছায়। এসেও তাদের উদ্ধার কাজ শুরু করতে ত্রিশ মিনিটের বেশি সময় নেয়। এতে লোকজন ক্ষুব্ধ হয়ে পড়েন। অনেকে নিজ উদ্যোগে আকটে পড়া লোকজনকে উদ্ধারের চেষ্টা করেন। ভবনের অপর বাসিন্দারাও চিৎকার শুরু করেন।

ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ কক্ষ জানায়, ভবনে মার্কেট ছাড়াও কয়েকটি অফিস ও আবাসিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তাদের ১৩ ইউনিট আগুন নেভানো ও উদ্ধারের কাজ করছে।

এপিএনের এডিশনাল এসপি মিজানুর রহমান জানান, প্রথমেই এক মেয়ে শিশুকে বের করে আনা হয়েছে। তার পুরো মুখ পোড়া ছিল। ঘটনাস্থলেই ওই শিশু মারা গেছে বলে জানান তিনি।