ঈদে রাতভর মদ খেয়ে ফূর্তিবাজি গাড়ি চালাচ্ছিল ঠিকাদার পুত্র অনি
এস রহমান : ঈদে রাতভর মদ খেয়ে ফূর্তিবাজি করে গাড়ি চালাচ্ছিল ঠিকাদার পুত্র নাসিফ খান অনি।বেসামাল অবস্থায় অনির গাড়িচাপায় শেওড়াপাড়ায় মারা যায় আতাউর রহমান দম্পতি। ঘটনা বেগতিক দেখে শেওড়াপাড়া বাসস্ট্যান্ডসংলগ্ন এলাকায় গাড়ি ফেলে ওরা পালিয়ে যায়।
পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে গাড়িটি জব্দ করে। এর ভেতর থেকে মদের বোতলসহ ফূর্তিবাজি করার জিনিষপত্র উদ্ধার করা হয়।সূত্র জানায়, কোরবানির ঈদের দিন রাত দেড়টার দিকে নাসিফ তাঁর এক বন্ধুর সঙ্গে গাড়িটি নিয়ে বের হন। এরপর মদ্যপ অবস্থায় ঘটে দূর্ঘটনা।
এর আগে প্রাইভেট কারের ধাক্কায় বুধবার সকালে রাজধানীর শেওড়াপাড়ায় এক বৃদ্ধ দম্পতির মৃত্যু হয়। রাজধানীর শেওড়াপাড়ায় গতকাল বুধবার যে প্রাইভেট কারের চাপায় আতাউর রহমান ও রওশন আরা দম্পতি প্রাণ হারিয়েছেন, এর মালিক আশিকুর রহমান খান নামের এক ব্যক্তি।
তবে ঘটনার সময় গাড়িতে ছিলেন তাঁর ছেলে নাসিফ খান ওরফে অনি। এ সময় ওই প্রাইভেট কারে নাসিফের সঙ্গে তাঁর কয়েকজন বন্ধু ছিলেন। গাড়িটি দুমড়ে-মুচড়ে যাওয়ার পর নাসিফ তাঁর শাহীনবাগের বাসায় ফেরেন। ঘণ্টা দুয়েক পর মা-বাবার সঙ্গে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে বাড়ি ছাড়েন তিনি।
ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের নাম প্রকাশ করছে না পুলিশ। তদন্তে অগ্রগতির খবরও জানেন না আতাউর রহমানের ছেলে মো. রায়হান। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কাফরুল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামীম শিকদার বলেন, ‘আমরা সবকিছুরই সন্ধান পেয়েছি। এখন ধরার অপেক্ষায়। তদন্তের স্বার্থে এর চেয়ে কিছু বলা যাবে না।
জানা গেছে, গতকাল সকাল ৬টা ৯ মিনিটে শেওড়াপাড়ার নিজ বাড়ি থেকে স্ত্রী রওশন আরার সঙ্গে বের হন আতাউর রহমান। মোহাম্মদপুরে মেয়ের বাসায় যাচ্ছিলেন তাঁরা। শেওড়াপাড়া বাসস্ট্যান্ডসংলগ্ন ফুটপাতে তাঁরা দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় দ্রুতগতির একটি প্রাইভেট কার (ঢাকা মেট্রো গ ২১-৮৫৭১) তাঁদের ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলে মারা যান আতাউর রহমান ও রওশন আরা।
দুমড়ে-মুচড়ে যাওয়া গাড়ি থেকে বের হয়ে আসেন যাত্রীরা। তবে গাড়িটি কে চালাচ্ছিলেন এবং কতজন গাড়িতে ছিলেন, এ ব্যাপারে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। সকাল সাড়ে ছয়টায় দিকে নাসিফ তাঁর শাহীনবাগের বাসা ফেরেন। ঘণ্টা দুয়েক পর মা-বাবার সঙ্গে বাসা ছাড়েন তিনি।
বাংলাদেশ রোড অ্যান্ড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) সূত্রে জানা গেছে, যে প্রাইভেট কারের চাপায় দুজন মারা গেছেন, এটি ২০০৮ সালে রেজিস্ট্রেশন করা হয়। এরপর লিখিতভাবে দুবার মালিকানা পরিবর্তন হয় গাড়িটির। সবশেষ মালিক ছিলেন হাসান হায়দার। রেজিস্ট্রেশন-প্রক্রিয়া শেষ না হলেও তাঁর কাছ থেকে গাড়িটি নাঈম নামের এক ব্যক্তি কেনেন, যিনি পুরোনো গাড়ি কেনাবেচার ব্যবসা করেন। হাসান হায়দার বলেন, নাইমের কাছ থেকে গাড়িটি কেনেন আশিকুর রহমান খান।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আশিকুর রহমান খান পেশায় একজন ঠিকাদার। তাঁর পরিচয়পত্রটি প্রাইভেট কারের ভেতর পাওয়া গেছে। গাড়িটির ভেতর থেকে মদের বোতলও উদ্ধার করা হয়। কোরবানির ঈদের দিন রাত দেড়টার দিকে নাসিফ তাঁর এক বন্ধুর সঙ্গে গাড়িটি নিয়ে বের হন। এরপর গাড়ি ছাড়াই ফিরে আসেন। তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে আতাউর রহমানের ছেলে মো. রায়হান বলেন, ‘ঘটনার সঙ্গে কারা জড়িত, এ ব্যাপারে পুলিশ আমাকে কিছু জানায়নি। জানলেও কি বিচার পাব?