• রোববার , ১৭ নভেম্বর ২০২৪

ইসলামী ব্যাংকে চরম রেশারেশি পদ হারালেন মাবুদ-পারভেজ


প্রকাশিত: ৩:২০ পিএম, ২৪ মে ১৭ , বুধবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৪২ বার

বিশেষ প্রতিনিধি :  ইসলামী ব্যাংকে ক্ষমতার নানা দ্বন্দ্ব চরম আকার ধারণ করেছে। এই রেশারেশির জের ধরে এবার Islami bank-Mabud-Pervej-www.jatirkhantha.com.bdপদ হারালেন মাবুদ ও পারভেজ। একইসঙ্গে ব্যাংকের রিস্ক ম্যানেজমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান আবদুল মাবুদকেও তার পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার ব্যাংকের বোর্ড সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ দুইজনই এখন স্বতন্ত্র পরিচালক হিসাবে থাকবেন।

এর আগে ব্যাংকের বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) ব্যাংকের শেয়ারহোল্ডাররা এ দুই পরিচালককে পরিচালনা পর্ষদ থেকে অপসারণের জন্য জোর দাবি তুলে বক্তব্য দেন। এদিকে ভাড়া করা লোক দিয়ে এজিএমের নামে নাটক মঞ্চস্থ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন পদ হারানো ভাইস চেয়ারম্যান।

এসব ঘটনার মাঝে ইসলামী ব্যাংক থেকে ইসলামিক উন্নয়ন ব্যাংক (আইডিবি) শেয়ার ছেড়ে দিচ্ছে বলে যেসব কথা হচ্ছিল সে বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছেন আইডিবি মনোনীত পরিচালক আরিফ সুলেমান। এজিএম শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। আইডিবির হাতে থাকা সাড়ে ৭ শতাংশ শেয়ারের মধ্যে ২ দশমিক ১ শতাংশ রেখে বাকিটা বিক্রি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে তিনি জানান। তবে ইসলামী ব্যাংকের পরিবর্তিত পরিস্থিতি নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।

ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের মধ্যে তীব্র প্রকাশ্য দ্বন্দ্বের মধ্যে গতকাল সুষ্ঠুভাবে ব্যাংকের এজিএম অনুষ্ঠিত হয়েছে। ঢাকা সেনানিবাসের কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের অল্প কিছুসংখ্যক উপস্থিত থাকার সুযোগ পান। অডিটোরিয়ামের অর্ধেক আসনই খালি ছিল। এতে সভাপতিত্ব করেন ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান আরাস্তু খান। ১৯ জন পরিচালকের মধ্যে ১৮ জন উপস্থিত ছিলেন। তবে স্বতন্ত্র পরিচালক ও ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক সৈয়দ আহসানুল আলম উপস্থিত ছিলেন না।

সভায় সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে ১২ জনকে বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়। যারা বক্তব্য দেন তাদের অধিকাংশই রাজনৈতিক ভঙ্গিমায় বক্তব্য রাখেন। এদের মধ্যে আবু সুফিয়ান টিটু নামে একজন নিজেকে মতিঝিল থানা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি হিসেবে পরিচয় দেন। শেয়ারহোল্ডাররা বক্তব্যে বলেন, ভাইস চেয়ারম্যান সৈয়দ আহসানুল আলম ও পরিচালক আব্দুল মাবুদ ব্যাংকের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন। তাদেরকে বোর্ড থেকে সরাতে ১৫ দিনের আল্টিমেটাম দেন বক্তব্যদানকারী শেয়ারহোল্ডাররা।

এজিএম শেষে একই জায়গায় পরিচালনা পর্ষদের সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভা শেষে চেয়ারম্যান আরাস্তু খান সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের ইসলামী ব্যাংকে দুইজন ভাইস চেয়ারম্যান আছেন। কিন্তু এখন থেকে থাকবেন একজন। তিনি আল রাজি গ্রুপের প্রতিনিধি ইউসুফ আবদুল্লাহ আল-রাজি। অধ্যাপক আহসানুল আলম পারভেজ আর ভাইস চেয়ারম্যান থাকবেন না, ইনডিপেনডেন্ট ডিরেক্টর থাকবেন। একইসঙ্গে রিস্ক ম্যানেজমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান পদে পরিবর্তন এসেছে। শামীম মোহাম্মদ আফজালকে এ কমিটির নতুন চেয়ারম্যান করা হয়েছে।

এদিকে এজিএম পরবর্তী প্রতিক্রিয়া হিসাবে গণমাধ্যমে একটি বিবৃতি পাঠান অধ্যাপক সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ। বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘পার্টির লোক, নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী, শেয়ারহোল্ডার নন- এমন লোকজন ভাড়া করে এনে বার্ষিক সাধারণ সভায় কয়েকজন পরিচালকের বিরুদ্ধে বিষোদগার করা হয়েছে। এজিএমের নামে নজিরবিহীন নাটক মঞ্চস্থ হয়েছে।’

ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনায় বড় পরিবর্তন আসে গত ৫ জানুয়ারি। এরপর থেকে ব্যাংকটিতে নানা পর্যায়ে অস্থিরতা দেখা যায়। গত ১৩ মে পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকের পর থেকেই পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান এবং ভাইস চেয়ারম্যানের মধ্যে দ্বন্দ্ব স্পষ্ট হয়ে উঠে। এরপর একে অপরের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মিডিয়াতে। গতকালের ঘটনার মাধ্যমে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে আরো একটি পরিবর্তন আসল।