• রোববার , ২২ ডিসেম্বর ২০২৪

ইসলামী ব্যাংকে অস্থিরতা-অতিরিক্ত এমডির পদত্যাগ


প্রকাশিত: ১০:৫৬ পিএম, ৭ আগস্ট ২৪ , বুধবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৭৯ বার

 

অর্থনৈতিক রিপোর্টার : ইসলামী ব্যাংকে শুরু হওয়া অস্থিরতা অব্যাহত রয়েছে। ২০১৭ সালে ব্যাংকের মালিকানা পরিবর্তনের পর বাদ পড়া ও বঞ্চিত কর্মকর্তারা আজ বুধবারও বিক্ষোভ করেছেন। বিক্ষোভের সময় তাঁরা ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এএমডি) মুহাম্মদ কায়সার আলীকে পদত্যাগের জন্য চাপ দেন। পরে তিনি ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) কাছে পদত্যাগ করে সেনাবাহিনীর নিরাপত্তায় প্রধান কার্যালয় ত্যাগ করেন।

প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশে অস্থিরতা শুরু হয়। গতকাল মঙ্গলবার ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে। বিক্ষুব্ধ কর্মকর্তারা মালিকপক্ষের কাছ থেকে পাওয়া বিশেষ সুবিধাভোগী কর্মকর্তাদের পদত্যাগের পাশাপাশি গত সাত বছরে যোগ দেওয়া কর্মকর্তাদের বাদ দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছেন।

জানা যায়, ২০১৭ সালে এস আলম গ্রুপ যখন ব্যাংকটির কর্তৃত্ব নেয়, তখন মুহাম্মদ কায়সার আলী ছিলেন চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ শাখা ব্যবস্থাপক। এস আলম গ্রুপও ব্যাংকটির ওই শাখার গ্রাহক। অল্প সময়ে তাঁকে একাধিক পদোন্নতি দিয়ে ব্যাংকের অতিরিক্ত এমডি করা হয়। ফলে ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনেকে তাঁর ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন। এসব কর্মকর্তার দাবি ছিল, মুহাম্মদ কায়সার আলী ব্যাংক থেকে বের হয়ে যান। চাপে পড়ে গতকাল তিনি পদত্যাগ করে ব্যাংক থেকে চলে যান। এ ব্যাপারে ইসলামী ব্যাংকের বক্তব্য জানার জন্য যোগাযোগ করা হলেও কর্মকর্তাদের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ব্যাংকের কার্যালয়ে ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছাড়া অন্য কোনো শীর্ষ কর্মকর্তা যাচ্ছেন না। এসব কর্মকর্তার বেশির ভাগই এস আলম গ্রুপের সমর্থনপুষ্ট হিসেবে পরিচিত। ইতিমধ্যে ব্যাংকটির ডিএমডি ও এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলমের ব্যক্তিগত সহকারী আকিজ উদ্দিন, ডিএমডি মিফতাহ উদ্দিন ও কাজী মো. রেজাউল করিমের নামফলক ভাঙচুর করেছেন কিছু বিক্ষুব্ধ কর্মকর্তা।

এদিকে গতকাল ইসলামী ব্যাংক ফাউন্ডেশন ২০১৬ সালের জানুয়ারি থেকে স্বেচ্ছায়, জোরপূর্বক ও বাধ্যতামূলকভাবে পদত্যাগে বাধ্য হওয়া কর্মকর্তাদের দ্রুত কাজে যোগদান করতে বলেছে। ফাউন্ডেশনের এক সিদ্ধান্তে বলা হয়েছে, এসব কর্মকর্তার পদত্যাগপত্র বাতিল করা হয়েছে। ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল, মেডিকেল কলেজ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ট্রেনিং সেন্টারসহ আরও কিছু উদ্যোগ রয়েছে ইসলামী ব্যাংক ফাউন্ডেশনের।

গতকাল ব্যাংকের কিছু কর্মকর্তা যখন বিক্ষোভ সমাবেশ করেন, তখন সিবিএ নেতা আনিসুর রহমান তাঁদের উদ্দেশে বলেছিলেন, ২০১৭ সালের পরে যত নির্বাহী এসেছেন, তাঁরা আর ব্যাংকে ঢুকতে পারবেন না। কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তখন তিনি বলেন, ‘আপনারা শান্ত হোন। যে ইসলামী ব্যাংক দখল হয়েছে, তা আবার ফিরে আসবে।’

আনিসুর রহমান বলেন, ২০১৭ সালের পর থেকে পরীক্ষা ছাড়া অনিয়মের মাধ্যমে যেসব নিয়োগ হয়েছে, সেসব নিয়োগ বাতিল করা হবে। একই সঙ্গে ওই সময়ের পরে যাঁদের চাকরি অবৈধভাবে বাতিল করা হয়েছে, তাঁদের চাকরি পুনরায় ফিরিয়ে দেওয়া হবে। এ ছাড়া গত সাত বছরে যাঁরা পদোন্নতি থেকে বঞ্চিত হয়েছেন, তাঁদের যথাযথভাবে পদোন্নতি দেওয়া হবে।

ইসলামী ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালে ব্যাংকটির মালিকানা পরিবর্তনের পর গত সাত বছরে অনেক কর্মকর্তাকে জোরপূর্বক চাকরি ছাড়তে বাধ্য করার অভিযোগ রয়েছে। আবার অনেক জুনিয়র কর্মকর্তাকে সিনিয়র পদে বসানো হয়। এ ছাড়া ব্যাংকটি থেকে বড় অঙ্কের অর্থ বের করে নেওয়া হয়েছে বলে মালিকদের একটি পক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে।