• মঙ্গলবার , ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

ইন্দোনেশিয়ায় যৌনতায় সৌভাগ্য লাভ হয় কেমুকাস পাহাড়ে


প্রকাশিত: ৭:১৯ এএম, ১০ জানুয়ারী ১৭ , মঙ্গলবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ২৮৭ বার

আন্তজার্তিক ডেস্ক  রিপোর্টার  :   ইন্দোনেশিয়ায় ‘যৌনতার পাহাড়ে’ ভিড় করেন অসংখ্য তীর্থযাত্রী। pপাহাড়চূড়ায় পৌঁছে অপরিচিতের সঙ্গে অবাধ যৌনতায় মেতে ওঠেন পুণ্যার্থীরা। দৈহিক চাহিদা নয়, পুণ্য অর্জনের কারণেই বহাল এই রীতি।

ইন্দোনেশিয়ার মাউন্ট কেমুকাস বা গুনুং কেমুকাসের পরিচিতি যৌনতার পাহাড় নামে। সোলো শহর থেকে ২৮ কিমি দূরে স্রাগেন রিজেন্সির এই পাহাড়চূড়ার ওপরে রয়েছে সুবিখ্যাত এক জাভানিজ তীর্থক্ষেত্র। প্রতি বছর সেখানে কয়েক হাজার তীর্থযাত্রী ভিড় করেন পুণ্যের আশায়। এখানে পুণ্য অর্জনের জন্য এক অভিনব রীতি চালু রয়েছে। কথিত, ৩৫ দিন অন্তর দুই অপরিচিত যুগল যৌনতায় লিপ্ত হলে তবেই পুণ্য অর্জন করা সম্ভব।pp

কিংবদন্তী অনুযায়ী, রাজকুমার প্যাঙ্গেরান সামোদ্রো তার সত্‍মা নিয়াই অনত্রোউলানের প্রেমে পড়েন। রাজরোষ থেকে বাঁচতে কেমুকাস পাহাড়ের ওপর আশ্রয় নেন যুগল। সেখানে তারা যৌন মিলনে মেতে ওঠেন। কিন্তু চরম শারীরিক তৃপ্তি লাভের সময় রাজার বাহিনী এসে তাদের ধরে ফেলে। তাদের হাতেই নিহত হয় প্রেমিক যুগল। স্থানীয় বিশ্বাস, পাহাড়চূড়ায় অপরিচিতের যৌন সঙ্গম করলে অশেষ পুণ্যলাভ করেন।

প্রাচীন রীতি অনুসারে, পাহাড়ের ওপরে সামোদ্রো ও অনত্রোউলানের সমাধিতে প্রথমে ফুল অর্পণ করা হয়। তারপরে ঝর্নায় গোসল সেরে যৌন সঙ্গীর তালাশে বেরোনোই নিয়ম। ৩৫ দিন পর পর প্রতি শুক্রবার মোট ৭ বার পুণ্যকামী যুগলকে যৌন মিলনে রত হতে হয়। জাভানিয়ান ক্যালেন্ডার ভেটোনন সাইকেল অনুসারে মিলনের দিন ধার্য হয়। এর জন্য ইচ্ছুক যুগলের মধ্যে এক অলিখিত চুক্তি হয়, পরস্পরের মোবাইল নম্বর ইত্যাদি বিনিময় করে নির্দিষ্ট সময়সীমা পর্যন্ত সম্পর্ক টিকিয়ে রাখাই নিয়ম। পুণ্যার্থীদের মধ্যে অধিকাংশই ইন্দোনেশীয় ব্যবসায়ী, যারা সৌভাগ্য লাভের আশায় কেমুকাস পাহাড়ে হাজির হন।

প্রাচীন এই রীতি নিয়ে অবশ্য ইদানীং তীব্র আপত্তি জানিয়েছেন কট্টরপন্থী মুসলিমরা। বিষয়টি নিয়ে আরও তোলপাড় হয় যখন কয়েক বছর আগে কেমুকাস পাহাড়ের প্রাচীন পরম্পরা নিয়ে ছবি তৈরি করে প্রচার করেন অস্ট্রেলিয়ার এক সাংবাদিক। ২০১৪ সালের নভেম্বর মাসে প্রবল প্রতিবাদ করেন মধ্য জাভার এই অঞ্চলের গভর্নর গঞ্জর প্রানোউও। বিশ্বের নজরে ইন্দোনেশিয়াকে কলুষিত করার এই প্রচেষ্টার নিন্দা করে তিনি এই ধর্মীয় আচরণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার চেষ্টাও করেন। গভর্নরের দাবি, অপরিচিতদের মধ্যে যৌন মিলনের ফলে দ্রুত বাড়ছে যৌনরোগের দাপট।

গভর্নরের নিষেধাজ্ঞার জেরে পাহাড়ের ওপর তীর্থযাত্রীদের ঘর ভাড়া দেওয়াও বন্ধ হয়ে যায়। এর ফলে কেমুকাস পাহাড়ে পুণ্যার্থীদের আনাগোনায় ভাটা পড়ে। মার খায় স্থানীয় অর্থনীতি। অবাধ যৌনতার প্রয়োজনে ঘর ভাড়া দিয়ে রোজগারের পথে বাধা তৈরি হলে এলাকা ছেড়ে চলে যায় ২৬২টি পরিবার। ঝাঁপ ফেলতে বাধ্য হয় বেশির ভাগ দোকানও।