ইনু ও ভিসি আনোয়ার ৭৪ সালে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এম মনসুর আলীর বাড়িতে গুলিবর্ষণ করেছিলেন-গয়েশ্বর চন্দ্র
লাবণ্য চৌধুরী.ঢাকা: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন ১৯৭৪ সালে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এম মনসুর আলীর বাড়িতে গুলিবর্ষণ করেছেন। তিনি বলেন, গুলিটা প্রথম আনোয়ার হোসেন ও হাসানুল হক ইনুর নেতৃত্বেই শুরু হয়।
গয়েশ্বর বলেন, ১৯৭৪ সালে আমি জাসদে ছিলাম। আমাদের একটা সিদ্ধান্ত হলো, আমরা গ্রেপ্তার-অত্যাচার-অনাচারের বিরুদ্ধে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাড়ি ঘেরাও করব। কিন্তু ঘেরাও কর্মসূচিতে সশস্ত্র আক্রমণ, এটা আমাদের জানা ছিল না। আমরা জানি, মন্ত্রীর বাড়ির গেটের সামনে যাব, সরকারের পক্ষ থেকে কেউ আসবে, স্মারকলিপি নেবে।
কিন্তু গুলিটা প্রথম আনোয়ার হোসেন ও হাসানুল হক ইনুর নেতৃত্বেই শুরু হলো।যখন আত্মরক্ষার্থে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাসভবন থেকে পাল্টা গুলি এলো, তখন আমরা দিগ্বিদিক ছোটাছুটি করছি। কারও হাত নেই, কারও পা নেই। কতজন মারা গেছে- তখন জানার সুযোগ ছিল না।
এক সময়ের এই জাসদ নেতা বলেন, আওয়ামী লীগ যদি বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাস করে তাহলে জাসদকে ক্ষমতার অংশীদার হিসেবে রাখতে পারে না। কারণ ১৫ আগস্টের ঘটনার প্রেক্ষাপট জাসদই তৈরি করেছিল।যারা বঙ্গবন্ধুর চামড়া দিয়ে ডুগডুগি বাজাতে চেয়েছিল আওয়ামী লীগের দুর্ভাগ্য তারাই আজ ফ্রন্ট লাইনে রয়েছেন। আওয়ামী লীগ মূলত শত্রুর সঙ্গে বাস করছে।সম্প্রতি ক্ষমতাসীন জোটের অন্যতম শরিক জাসদকে নিয়ে ৪০ বছর আগের বিষয়টির বিতর্ক ওঠায় সে সময়ের নানা দিক নিয়ে কথা বলেন সাবেক এই জাসদ নেতা।
গয়েশ্বর রায় বলেন, আওয়ামী লীগ কী এতই দেউলিয়া হয়ে গেছে যে, যারা বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রেক্ষাপট তৈরি করেছিলেন তাদের ক্ষমতার অংশীদার রাখতে হবে!জাসদের এই ইনু-বাদলরা এখনো বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রে বিশ্বাস করেন। তারা সশস্ত্র সংগ্রামের বিশ্বাস থেকে এখনো ফিরে আসেননি। জাতির কাছে তাদের অতীত কর্মকাণ্ডের জন্য ক্ষমাও চাননি।
গয়েশ্বর বলেন, ইনু-বাদলদের মুখে গণতন্ত্রের সবক মানায় না। ইনুরা বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে বোমা ও আগুন সন্ত্রাসী আখ্যা দেন, এটা শুধু সরকার প্রধানকে খুশি রাখতেই। আওয়ামী লীগের বাঘা বাঘা নেতা পেছনের সারিতে থাকলেও এই সশস্ত্র বিপ্লবীদের ফ্রন্ট লাইনে রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, হাসানুল হক ইনু তার নিজের চামড়া বাঁচানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রীকে সন্তুষ্ট করতে বিএনপিকে প্রতিনিয়ত গালাগাল করছেন। এভাবে শেষ রক্ষা হবে না।১৫ আগস্টের আগ পর্যন্ত জাসদ যা করেছিল সবই ছিল বঙ্গবন্ধু সরকারের বিরুদ্ধে।
এ নিয়ে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম বললেন, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রেক্ষাপট তৈরি করে জাসদ’ তা অবশ্যই যৌক্তিক। তিনি এই জাসদকে চেনার জন্য মহিউদ্দীন আহমেদের ‘জাসদের উত্থান পতন: অস্থির সময়ের রাজনীতি’ বইটি পড়ার পরামর্শ দেন।
গয়েশ্বর রায় বলেন, নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান আজ বড় বড় কথা বলেন। তার ভূমিকা কী ছিল? তিনি গণবাহিনীর প্রধান ছিলেন। সুতরাং ইনু-বাদল, শাজাহানরা গণতন্ত্র নিয়ে কী বললেন না বললেন তাতে কিছুই যায় আসে না।
তিনি বলেন, ৫ জানুয়ারি ভোটারবিহীন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশীদার হয়ে আজ ক্ষমতায় জাসদ।
ভোটারবিহীন নির্বাচনে ক্ষমতায় এসে তারাই (জাসদ) আজকে মুখে গণতন্ত্রের কথা বলে। জাতি তাদের কোনো দিনই ক্ষমা করবে না। দেশবাসীর ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়ার উপযুক্ত জবাব দেবে। তখন ইনু-বাদলরা কী করবেন? তা আগে থেকে ঠিক করে রাখুন।