ইউনাইটেড হাসপাতালের লাশ কেলেংকারি’র রফা..
অবশেষে ইউনাইটেড হাসপাতালের লাশ আটকে রাখা কেলেংকারি’র একটা আপোষ রফা হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলেছে, আসলামের স্বজনরা ৫ মাসে ১৫ লাখ শোধ করবেন এমন শর্তে লাশ ছেড়ে দেয়া হয়েছে। লিখিতভাবে এমন প্রতিশ্রুতি দিয়ে আজ রোববার সন্ধ্যায় মরদেহ বুঝে নেন স্বজনেরা।
হাসপাতালের জনসংযোগ কর্মকর্তা মুস্তাফিজুর রহমান ও আসলামের স্বজনেরা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
রাজধানীর মগবাজারের দিলু রোডের বাসিন্দা আসলামকে গত ৩ জুলাই ফুসফুসে সমস্যাজনিত কারণে ওই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত শুক্রবার রাত তিনটার দিকে চিকিত্সাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। তাঁর চিকিত্সা বাবদ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ স্বজনদের কাছে প্রায় ৩১ লাখ টাকার একটি বিল দেন। স্বজনেরা প্রাথমিকভাবে প্রায় ১২ লাখ টাকা দিয়ে বাকি টাকা পরে পরিশোধ করার প্রতিশ্রুতি দেন।
কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ টাকা ছাড়া মরদেহ দেবে না বলে স্বজনদের সাফ জানিয়ে দেয় বলে অভিযোগ করেন আসলামের স্বজনেরা। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচারিত হয়।
আজ ইউনাইটেড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আসলামের স্বজনদের সঙ্গে আলোচনায় বসে একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আসলামের পরিবারকে আগামী পাঁচ মাসে ১৫ লাখ টাকা পরিশোধ করতে হবে। স্ট্যাম্পে এ প্রতিশ্রুতি লিখে সেখানে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও আসলামের স্বজনেরা স্বাক্ষর করেন। সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে স্বজনদের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়। লাশ হস্তান্তরের সময় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নগদ ৪০ হাজার টাকা দেন আসলামের স্বজনেরা।
হাসপাতালের জনসংযোগ কর্মকর্তা মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, আসলামের চিকিত্সা বাবদ ৩১ লাখ ৮২ হাজার টাকা বিল এসেছে। তাঁর স্বজনেরা ১২ লাখ টাকা শোধ করেছেন। মানবিক বিবেচনায় বাকি প্রায় ১৯ লাখ টাকার মধ্যে চার লাখ টাকা কমিয়ে ১৫ লাখ টাকা করা হয়েছে। তাঁরা ৪০ হাজার টাকা দিয়েছেন। বাকি ১৪ লাখ ৬০ হাজার টাকা পাঁচ মাসে শোধ করবেন।
হাসপাতালের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রোগীর স্বজনদের দ্বারা সৃষ্ট পরিস্থিতি আমাদের আস্থায় ভীষণভাবে নাড়া দিয়েছে। মুমূর্ষু রোগীকে সারিয়ে তোলাটাই আমাদের মুখ্য কাজ। টাকা আদায় করে চিকিত্সা দেওয়া নয়। হাসপাতালে চিকিত্সা শেষে বিল দেওয়া হয়। বিলের ব্যাপারে শুরু থেকেই আসলামের স্বজনেরা হাসপাতালকে আশ্বস্ত করেছিলেন।
যোগাযোগ করা হলে আসলামের মেয়ে সাদিয়া বলেন, তাঁরা মরদেহ বুঝে পেয়েছেন। বাসায় নিয়ে যাওয়ার পর তাঁর জানাজা ও দাফনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হবে। তিনি বলেন, বাবার চিকিত্সা করাতে গিয়ে প্রায় নিঃস্ব হয়ে গেছেন তাঁরা। এ মুহূর্তে সমাজের বিত্তবানদের প্রতি আর্থিক সহায়তার আকুল আবেদনও জানিয়েছেন সাদিয়া।