ইংল্যান্ড সিরিজ-কপাল খুলছে ইমরুলের মন্দ-সৌম্য’র-নাসির টপকাতেও পারেন
স্পোর্টস রিপোর্টার : ইংল্যান্ড সিরিজে কপাল খুলছে ইমরুলের তবে মন্দ-সৌম্য’র-নাসির টপকাতেও পারেন। আজ চোখ জুড়ানো সব শটে সেঞ্চুরি করলেন ইমরুল কায়েস। আদিল রশিদের বলটা পয়েন্টে ঠেলেই যখন দৌড় শুরু করলেন ইমরুল, ড্রেসিংরুম থেকে নিশ্চয় তালি দিয়ে অভিনন্দন জানিয়েছেন সৌম্য। তারপরই নির্ঘাত হতাশায় মাথা নেড়েছেন সৌম্য, তাঁকে যে পেছনে ফেলে দিলেন ইমরুল! ইমরুলের অনবদ্য সেঞ্চুরিতে ভর করে প্রস্তুতি ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৯ উইকেটে ৩০৯ রান করেছে বিসিবি একাদশ।
দুজন আজ একসঙ্গে নেমেছিলেন। দুজনেরই লক্ষ্য অভিন্ন। বাংলাদেশ দলে তামিম ইকবালের সঙ্গী হতে হবে। আফগানিস্তান সিরিজে সে দায়িত্বটা ছিল সৌম্যের কাঁধে। সে কাজে পুরোপুরি ব্যর্থ তিনি। আর ইমরুল কায়েস এক ম্যাচে তিনে নেমে ভালো খেললেও পরে আর জায়গা পেলেন না একাদশে। ইংল্যান্ড সিরিজে একাদশে জায়গা পেতে দুজনকেই আজ কিছু করে দেখাতে হতো।
তা ‘কিছু’ করে দেখালেন ইমরুল। ইনিংসের প্রথম বলেই ক্রিস ওকসকে কভার দিয়ে চার মেরে শুরু করলেন, তৃতীয় বলেই আবার, এবার পয়েন্ট দিয়ে। পঞ্চম বলে স্ট্রাইক পেয়ে সৌম্যরও প্রথম বলে চার, তাঁর শটটিও কভার দিয়ে। জমজমাট লড়াইয়ের অপেক্ষায় সবাই। দুই প্রান্তে নিজেকে প্রমাণ করার চেষ্টায় নামা দুই ওপেনারের এমন লড়াইয়ে যে দলেরই লাভ!
সব সম্ভাবনায় জল ঢেলে সৌম্য আউট মাত্র ৭ রানে। অন্য প্রান্তে ইমরুল ততক্ষণেই ২৬ রান করে ফেলেছেন। চারটি চার ও ডেভিড উইলিকে ডিপ স্কয়ার লেগ দিয়ে মারা ছক্কায় দিচ্ছেন ঝড়ের ইঙ্গিত। নতুন সঙ্গী নাজমুল হোসেনকে পেয়ে একটু শান্ত হলেন কিছুক্ষণের জন্য। ওই সময়টাই তাঁর ইনিংসের একমাত্র কালো দাগ। ১১তম ওভারে লিয়াম প্লাঙ্কেটের বলে শর্ট কভারে ক্যাচ দিয়েও বেঁচে গেলেন। ব্যস, এরপর আর ফিরে তাকাননি।
একের পর এক চোখজুড়ানো সব কভার ড্রাইভ, সুইপ আর সে সঙ্গে দ্রুত প্রান্ত বদল করে সিঙ্গল-ডাবলস; নাজমুলের সঙ্গে ৮৫ রানের জুটিতে ব্যাকফুটে পাঠিয়ে দেন ইংল্যান্ডকে। এর মাঝেই ফিফটি পেয়ে গেলেন, মাত্র ৪৬ বলে। তাতে ৬টি চার ও ১ ছক্কা। ফিফটির পর যেন আরও আগ্রাসী হয়ে উঠলেন ইমরুল। মঈন আলী ও আদিল রশিদকে রীতিমতো পাড়ার বোলারদের পর্যায়ে নামিয়ে আনলেন। ১২০ রান নাজমুল (৩৬) ফিরলেও বিসিবি একাদশের তাই কোনো অসুবিধা হলো না। রশিদ ও মঈনকে ডিপ স্কয়ার লেগ ও মিড উইকেট দিয়ে তিন ছক্কায় বুঝিয়ে দিলেন ইংলিশ স্পিনারদের নিয়ে ভাবনার কিছু নেই।
২৭তম ওভারে যখন সেঞ্চুরি পেলেন, তখন তাঁর নামের পাশে ৯টি চার, ৪টি ছক্কা। বল? মাত্র ৮১! সেঞ্চুরির পর অবশ্য খুব বেশিক্ষণ থাকলেন না। দুই স্পিনারকে একটি করে চার ও উইলিকে এক ওভারেই দুই ছক্কা মেরে ৯০ বলেই পৌঁছে গেলেন ১২১ রানে। দুই ছক্কার ওই ওভারেই একটা ফুলটসে নিজেকে ইয়র্কড করে ফিরলেন ২৯তম ওভারে। পুরো এলাকায় তখন হাহাকার, আহা একটা ডাবল সেঞ্চুরি দেখার সুযোগ হাতছাড়া হলো সবার।
অবশ্য ততক্ষণে বিসিবির রানরেট ছয় ছাড়িয়ে গেছে। মুশফিকের সঙ্গে ৮ ওভারের জুটিতে যে ৭১ রান যোগ করে গেছেন ইমরুল। ভুল পড়েননি, মুশফিকুর রহিম। সবাইকে অবাক করে প্রস্তুতি ম্যাচে খেলতে নেমেছেন তিনি। ফর্মে ফেরার চেষ্টাটা ভালোই কাজে লাগিয়েছেন, ৫৭ বলে ৫১ রান করেছেন। ৪১তম ওভারের প্রথম বলে মুশফিক ফিরলেও উইকেটে ছিলেন নাসির হোসেন।
আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে জাতীয় দলের মূল দল একাদশে ফেরার ইচ্ছাটা জানাচ্ছিলেন নাসিরও।
কিন্তু ৪৫ বলে ৪৬ রান করে ৪৫তম ওভারে নাসিরও ফিরলেন, বিসিবি একাদশের সাড়ে তিন শ ছোঁয়ার স্বপ্নটাও শেষ হয়ে যায়। শেষ দিকে একের পর এক উইকেট হারিয়ে খোঁড়াতে খোঁড়াতে ৩০০ পেরোয় বিসিবি একাদশ।