• মঙ্গলবার , ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

আয়রন লেডি শেখ হাসিনা’র বলিষ্ঠ পদক্ষেপে ভারত-বাংলাদেশের মজবুত সম্পর্ক জোরদার


প্রকাশিত: ১:০২ এএম, ৭ জুন ১৫ , রোববার

নিউজটি পড়া হয়েছে ২৮৯ বার

pm Modi-Hasina-Momota-www.jatirkhantha.com.bdশফিক রহমান.ঢাকা:  আয়রন লেডি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র বলিষ্ঠ পদক্ষেপে ভারত-বাংলাদেশের মজবুত সম্পর্ক আরো জোরদার হলো।এ সম্পর্ক যেন পারস্পরিক সহযোগিতার মজবুত সোপান।যা রচনা করলেন বাংলাদেশ ও ভারতের দুই নেতা শেখ হাসিনা ও নরেদ্্র মোদি। দেশের বিশিষ্ঠ নাগরিকরা বলেছেন, দেশরত্ম শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ পররাষ্ঠ্রনীতি, গতিশীল নেতৃত্ব এবং দুই দেশের পারস্পরিক সহযোগিতার কারণে নতুন সম্পর্ক, আরো জোরদার হয়েছে।
modi-hasina-meet-www.jatirkhantha.com.bd-3এর আগে আওয়ামী লীগ সরকার ভারতের সঙ্গে ১৯৯৬ সালে গঙ্গা পানি চুক্তি সম্পন্ন করে। এছাড়া ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্র সীমা বিরোধ নিস্পত্তি করে বাংলাদেশ। যা সম্ভব হয় হেগের আন্তর্জাতিক আদালত থেকে ফয়সালার মাধ্যমে এবং আয়রন লেডি শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ পদক্ষেপের কারণে।
শেখ হাসিনার কারণেই বাংলাদেশ ১ লাখ ৩০ হাজার বর্গকিলোমিটারের সমুদ্র সীমা নিশ্চিত করতে সক্ষম হয়েছে; যা বাংলাদেশের হাসিনা সরকারের গতিশীল নেতৃত্ব ও আস্থার পরিচয় বহন করে।
Modi Hasina----www.jatirkhantha.com.bdখোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, প্রতিবেশি দুটি দেশের সঙ্গে সমুদ্র সীমা নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল দশকের পর দশক ধরে। এটা সম্ভব হয় একটি রাষ্ট্র যখন সহযোগিতা ও স্বচ্ছতার সঙ্গে নির্ভয়ে এগিয়ে যাওয়ার জন্যে একটি ‘রুলস অব গেম’ অনুসরণ করে এবং অব্যাহতভাবে পররাষ্ট্রনীতি এমনভাবে পরিচালনা করে যা ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের তিস্তা, বাণিজ্য, নিরাপত্তা, জ্বালানি, যোগাযোগ অবকাঠামো, বিদ্যুৎ নিয়ে আরো সহযোগিতার পথ উম্মোচন করেছে।
ঢাকায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে নিয়ে বিমানটি যখন রানওয়ে ছুঁয়ে নেমে এল তখন বলা যায় সম্পর্কের নতুন মাত্রা সংযোজন হল দুটি দেশের মধ্যে। ভারতের রাজনৈতিক চিন্তাশীল হিসেবে ঐতিহ্যগতভাবে যিনি পরিচিত সেই চানক্যের কূটনীতিতে বলা আছে যে, প্রতিটি প্রতিবেশি দেশ হতে পারে শত্রু। তবে সেই শত্রুর শত্রুকে আবার চানক্য দেখেছেন বন্ধু হিসেবেই। দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে এখন এই চানক্যের কূটকৌশল কতটা কার্যকর বা অকার্যকর তা বলার আগে এটা বলা যায় ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও এমনকি শ্রীলংকা দীর্ঘদিন ধরেই সম্পর্কের অনেক তিক্ততা নিজেদের মধ্যে বিনিময় করে আসছে। এর বিপরীতে আঞ্চলিক সহযোগিতার কথা দীর্ঘদিন ধরে এ অঞ্চলের মানুষ শুনে আসলেও কার্যত তা দৃশ্যমান হয়ে ওঠেনি।

হ্যা অবশ্যই, এমন আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে যদি কিছু অভাবনীয় পরিবর্তন দেখা যায়, তা যদিও বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ঘটে থাকে তাহলেও তা উদাহরণ সৃষ্টি করছে। একে কি বলা যায়, ‘হাসিনা ডকট্রিন’, যদি আমরা তাই বলি তাহলে বলতে হয়, ২০০৯ সাল থেকে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে বাংলাদেশে যে ধর্মনিরপেক্ষতার একটি সরকার যাত্রা শুরু করে, তারই ধারাবাহিকতায়, গঠনমূলক কূটনৈতিক তৎপরতার ফলেই বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে একটা সদিচ্ছার নিরন্তর চেষ্টার মাধ্যমে এটা সম্ভব হয়েছে। সম্ভব হয়েছে দুটি দেশের মধ্যে অমীমাংসিত ইস্যুর জটগুলো নিয়ে একটা মীমাংসিত পথে এগিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টা নেয়া।

modi-hasina--www.jatirkhantha.com.bd...4গত সাড়ে ৬ বছর ধরে দেখা যাচ্ছে হাসিনা ডকট্রিন বা একে যদি হাসিনা মতবাদও বলা যায় তাহলে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে অমীমাংসিত ইস্যুগুলো নিয়ে দুটি দেশের মধ্যে ধারাবাহিক আলোচনা চলেছে, একে অপরের প্রতিশ্রুতিকে বিশ্বাসের সঙ্গে অনুসরণ করেছে। এবং এধরনের অনুসরণের মধ্যে সমস্যা সমাধানের গতিপথকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে নতুন দিগন্তের এক রুপান্তরে আর এর আড়ালে কাজ করেছে অসংখ্য অনুঘটক। এজন্যে দুটি দেশের সরকারই নিজেদের মধ্যে একটা আস্থার জায়গা সৃষ্টি করে নিয়েছে। এজন্যে শেখ হাসিনাকে বেশ কিছু শক্ত সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। বাংলাদেশের মাটিতে ভারতের বিরুদ্ধে কোনো সন্ত্রাসী তৎপরতা শক্ত হাতেই দমন করে দেখিয়েছেন শেখ হাসিনা। এমনকি ভারত বিরোধী যে রাজনীতি রয়েছে বাংলাদেশে তার বিরুদ্ধে সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছেন তিনি। শেখ হাসিনার এই কূটনৈতিক শাসন বা শাসন শৈলী ভারতের সঙ্গে তার একটা পারস্পরিক আস্থার ক্ষেত্র তৈরি করেছে।

এর ফলে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের স্থলসীমান্ত চুক্তির পথ প্রসারিত হয়েছে। এ নিয়ে যে দীর্ঘবিরোধ ছিল তা শেখ হাসিনার গঠনমূলক কূটনীতির একটা ধারাবাহিক প্রক্রিয়া বিষয়টিকে পরিবর্তন করতে বাধ্য করেছে। শেখ হাসিনা তার সরকারের শাসনামলে তৃতীয়বার পা দিলেও ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে অব্যাহত প্রক্রিয়া অনুসরণ করে চলেছেন। এবং চারদশক আগে ১৯৭৪ সালে সম্পাদিত স্থল সীমান্ত চুক্তি একটা বাস্তব রুপ পেতে যাচ্ছে এবং তা কার্যকর হতে শুরু করেছে। এরই পথ ধরে অপদখলীয় ভূমি বা সীমানা নির্ধারিত হয়নি এমন সীমান্ত সমস্যার সমাধানের পথ খুলে যাবে। দুটি দেশের মধ্যে এভাবে সীমান্ত ব্যবস্থাপনা নিয়ে কাজ করা সম্ভব হবে। সম্ভব হবে আরো অধিক দ্বিপাক্ষিক ইস্যু নিয়ে কার্যকর পথ অনুসরণ করা যেমন সীমান্ত সন্ত্রাস, অস্ত্র ও মাদক চোরাচালান রোধ করা।

ভারত ও বাংলাদেশ এখন সন্ত্রাস দমনের পাশাপাশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও সীমান্ত এলাকায় হাট বা বাণিজ্যে সম্প্রসারণের কাজও শুরু করতে পারে। দুটি দেশের মধ্যে যে সীমান্ত উত্তেজনা রয়েছে তার পরিবর্তে বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম দীর্ঘ এ সীমান্তে এখন সুযোগের অবারিত দ্বার উম্মোচন হতে পারে।
এর আগে আওয়ামী লীগ সরকার ভারতের সঙ্গে ১৯৯৬ সালে গঙ্গা পানি চুক্তি সম্পন্ন করে। এছাড়া ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্র সীমা বিরোধ নিস্পত্তি করে বাংলাদেশ। যা সম্ভব হয় হেগের আন্তর্জাতিক আদালত থেকে ফয়সালার মাধ্যমে। এভাবে বাংলাদেশ ১ লাখ ৩০ হাজার বর্গকিলোমিটারের সমুদ্র সীমা নিশ্চিত করে যা বাংলাদেশের সরকারের গতিশীল নেতৃত্ব ও আস্থার পরিচয় বহন করে। কারণ প্রতিবেশি দুটি দেশের সঙ্গে সমুদ্র সীমা নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল দশকের পর দশক ধরে। এটা সম্ভব হয় একটি রাষ্ট্র যখন সহযোগিতা ও স্বচ্ছতার সঙ্গে নির্ভয়ে এগিয়ে যাওয়ার জন্যে একটি ‘রুলস অব গেম’ অনুসরণ করে এবং অব্যাহতভাবে পররাষ্ট্রনীতি এমনভাবে পরিচালনা করে যা ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের তিস্তা, বাণিজ্য, নিরাপত্তা, জ্বালানি, যোগাযোগ অবকাঠামো, বিদ্যুৎ নিয়ে আরো সহযোগিতার পথ উম্মোচন করেছে।

এরফলে দেখা যাচ্ছে, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি পাচ্ছে বিশেষ করে বহুজাতিক সন্ত্রাসীদের প্রতিরোধ, সীমান্তে হতাহতের ঘটনা হ্রাস, বাণিজ্য বৃদ্ধি ও বিদ্যুৎ উৎপাদনের যৌথ বিনিয়োগে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের মধ্যে দিয়ে এধরনের সম্পর্ক ও তরঙ্গে আরো নতুন গতি সৃষ্টি করবে। এদিক থেকে নরেন্দ্র মোদির পূর্বসুরীরা ব্যর্থ হয়েছেন যেখানে, সেখানে মোদি আরো সামনে এগিয়ে গেছেন। এজন্যে তাকে জনসমর্থন আদায় করতে হয়েছে যার প্রতিফলন দেখা গেছে লোকসভায় স্থল সীমান্ত চুক্তি বিল পাশের মধ্যে দিয়ে। যা ঢাকা আরো অনেক আগেই সম্পন্ন করেছে বাস্তবতার তাগিদে। মোদির সফর তাই বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ককে আরো অধিক উচ্চতায় নিয়ে যাবে। এজন্যে বৃহত্তর কৌশলগত লক্ষ্যকে প্রাধান্য দিতে হবে। এভাবে দুটি দেশের দৃষ্টি যদি এক ও অভিন্ন লক্ষ্যে নিবদ্ধ হয়ে পড়ে তাহলে যারা এ কাজটি করবেন তারা সম্যক ধারণা নয় বরং বাস্তবমুখী হয়ে বিষয়গুলোকে আরো কার্যকর করে তুলতে অগ্রগামী হয়ে উঠবেন।

যদিও ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে এখনো তিস্তা চুক্তির সম্ভাবনা দৃশ্যমান হয়ে ওঠেনি তবুও এর সম্ভাবনা মোদির সফরের মধ্যে দিয়ে এক আস্থার পাটাতন সৃষ্টি করবে যেখানে দাঁড়িয়ে উভয় দেশ আরো সহযোগিতার নতুন নতুন দিগন্ত উম্মোচন করবে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারত ও বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ও উন্নয়ন একটা শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড় করাতে মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিয়েছে। এ প্রস্তুতির পর সম্পর্ক শক্তিশালী করতে দুটি দেশের অভিন্ন ইতিহাস, ভৌগলিক অবস্থান ও সংস্কৃতি এবং ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারতের সমর্থনের মত বিষয়গুলো বিবেচনা করা হচ্ছে। শেখ হাসিনার নীতি হচ্ছে অব্যাহত সহযোগিতা যা মোদির প্রতিবেশি দেশগুলোর সঙ্গে সার্বিক সম্পর্ক উন্নয়নে তাৎক্ষণিক সাড়া দিতে সাহায্য করেছে। যা পরবর্তী স্তরে নিয়ে যাবেন উভয় নেতা।