আশা জাগিয়েও হতাশ করলো টাইগাররা
স্পোর্টস রিপোর্টার : বাংলাদেশ পারেনি। মাথা ঠান্ডা রেখে জয় তুলে নিয়েছে কুশল মেন্ডিসের দল। নিশাঙ্কার সেঞ্চুরিতে সিরিজে সমতা ফিরিয়েছে শ্রীলঙ্কা। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম দর্শকরা হতাশ।
তারা বলেছে, আশা জাগিয়েও হতাশ হতে হলো বাংলাদেশকে। সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে শ্রীলঙ্কার কাছে তিন উইকেটে হেরে গেছেন নাজমুল হাসান শান্তরা। ১৭ বল বাকি থাকতে জয়সূচক রান তুলে নেয় লঙ্কানরা। ১৮ মার্চের ম্যাচটি এখন হয়ে উঠল অলিখিত ফাইনাল। টি-টোয়েন্টি সিরিজেও শেষ ম্যাচের আগে ১-১ এর সমতা ছিল, যেখানে তৃতীয় ম্যাচ জিতে সিরিজ নিজেদের করে নিয়েছিল লঙ্কানরা।
বাংলাদেশের মনে হতে পারে, সুযোগ হাতছাড়া করেছে তারা। আবার শ্রীলঙ্কাও অবাক হতে পারে এটা ভেবে, এই ম্যাচ এতদূর গড়াল কী করে! দুই দলের মনেই প্রশ্ন জাগার মতো এক ম্যাচ হলো চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে। যেখানে নিজেদের মাথা ঠান্ডা রেখে জয় তুলে নিয়েছে কুশল মেন্ডিসের দল।
বাংলাদেশের দেওয়া ২৮৭ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই দলের খাতায় কোনো রান যোগ হওয়ার আগেই ফিরে যান আভিষ্কা ফার্নান্দো। ৪২ ও ৪৩ রানে পরপর অধিনায়ক কুশল মেন্ডিস ও সাদিরা সামারাবিকরামাকে হারিয়ে বিপাকে পড়ে শ্রীলঙ্কা। সেখান থেকে দলকে উদ্ধার করেন আরেক ওপেনার পাথুম নিশাঙ্কা ও পাঁচে নামা চারিথ আসালাঙ্কা। দুজনে মিলে ১৮৫ রানের দুর্দান্ত জুটিতে সব শঙ্কা উড়িয়ে দেন।
নিশাঙ্কা তুলে নিয়েছেন সেঞ্চুরি, ১১৩ বলে ১৩ চার ও তিন ছয়ে করেছেন ১১৪ রান। আসালাঙ্কা আউট হওয়ার আগে করেছেন ৯৩ বলে ৯১ রান, তার ইনিংসে ছিল ছয়টি চার ও চারটি ছয়। এই দুজন আউট হওয়ার পর অবশ্য আরেকবার ভয় উঁকি দিয়েছিল লঙ্কানদের মনে। তবে ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গার ১৬ বলে ২৫ রানের ইনিংস সেটিও দূর করে দেয়। শেষ পর্যন্ত ১৭ বল হাতে রেখেই সিরিজে সমতা ফেরায় সফরকারীরা। বাংলাদেশের হয়ে দুটি করে উইকেট নিয়েছেন শরিফুল ইসলাম ও তাসকিন আহমেদ। একটি করে উইকেট পেয়েছেন তানজিম হাসান সাকিব, মিরাজ ও তাইজুল।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের শুরুতে সৌম্য সরকার, শেষে তাওহিদ হৃদয়- এই দুজনের ব্যাটে শ্রীলঙ্কাকে বড় লক্ষ্য দেয় বাংলাদেশ। সাগরিকায় ৫০ ওভার খেলে সাত উইকেট হারিয়ে ২৮৬ রান সংগ্রহ করে নাজমুল হাসান শান্তর দল। সেঞ্চুরি থেকে মাত্র চার রান দূরে অপরাজিত থেকে যান হৃদয়। যদিও দলের সংগ্রহ নিয়ে যান বেশ ভালো অবস্থানে। সৌম্য সরকারও খেলেছেন ঝলমলে এক ইনিংস। শেষ পাঁচ ওভারে ৫৫ রান তুলেছে বাংলাদেশ।
টসে জিতে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান লঙ্কান অধিনায়ক কুশল মেন্ডিস। প্রথম ওভারের তৃতীয় বলেই কোনো রান না করেই ভেল্লালাগের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান লিটন দাস। টানা দুই ম্যাচে কোনো রান পেলেন না এই ডানহাতি ওপেনার। এরপর অধিনায়ক শান্ত দুবার জীবন পেয়ে করেছেন ৪০ রান। একবার তার ব্যাটে লেগে বল উইকেটের পেছনে ক্যাচ নিলেও আবেদনই করেনি শ্রীলঙ্কা। আরেকটি সুযোগ আসে স্লিপে নিশাঙ্কা ক্যাচ ছেড়ে দিলে।
শান্ত আউট হওয়ার পর ক্রিজে আসেন তাওহিদ হৃদয়। তার ক্যাচও ছেড়ে দেন কুশল মেন্ডিস। দারুণ খেলে এর মধ্যে হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন সৌম্য সরকার। রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে ব্যক্তিগত ৬৮ রানে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। এরপর নিজের মুখোমুখি হওয়ার দ্বিতীয় বলেই এগিয়ে এসে মারতে গিয়ে স্টাম্পিংয়ের শিকার হন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।
মুশফিক ও হৃদয় মিলে পঞ্চম উইকেটে যোগ করেন ৪৩ রান। মুশফিক ২৮ বলে ২৫ রান করে ফিরে যান। এরপর ছোট ছোট অবদান রেখেছেন মিরাজ, সাকিব ও তাসকিনরা। তবে মূল কাজ করেছেন তাওহিদ হৃদয়ই। শেষদিকে চার-ছয়ের বন্যা বইয়ে দিয়েছেন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। ১০২ বলে তিন চার ও পাঁচ ছয়ে ৯৬ রান নিয়ে অপরাজিত থাকেন হৃদয়। শ্রীলঙ্কার হয়ে ৪৫ রান দিয়ে চারটি উইকেট শিকার করেছেন ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা। দিলশান মাদুশাঙ্কা নিয়েছেন ৩০ রান দিয়ে দুই উইকেট।