আলুর হিমাগারে ডিম কারসাজি
বিশেষ প্রতিনিধি : আলুর হিমাগারে ডিম সংরক্ষণ করে ভোক্তার পকেট কাটছে ব্যবসায়ীরা। এজন্য ভোক্তা দপ্তর কোথাও কোথাও জরিমানা করেই খালাস। কিন্তু ব্যবসায়ীদের মাত্রাতিরিক্ত ফায়দা হাসিলের ব্যাপারটি খতিয়ে দেখা হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী ক্রেতারা।কারসাজি করে আলুর হিমাগারে ডিম রাখা হয়েছে। প্রচণ্ড দাবাদাহের জন্য এভাবেই ডিম সংরক্ষণ করতে বাধ্য হয়েছেন কিশোরগঞ্জের ব্যবসায়ীরা।
তাদের দাবি, গরমে ডিম যাতে নষ্ট না হয়, সে জন্যই এই আপ্রাণ চেষ্টা।দেশে প্রতিদিন ডিমের চাহিদা প্রায় ৮ কোটি। পুষ্টিবিজ্ঞানীরা বলছেন, নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় এবং আলাদা করে ডিম সংরক্ষণ করলে পুষ্টিগুণের কোনো হেরফের হয় না।পুষ্টিবিজ্ঞানী ড. মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, এক থেকে তিনদিন বয়সী ডিম কোল্ড স্টোরেজে রাখতে হবে। তা যদি তিন মাসের জন্য সংরক্ষণ করতে হয়, তাহলে অবশ্যই ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার নিচে রাখতে হবে। আর যদি পাঁচ মাসের জন্য হয়, তাহলে তিন ডিগ্রির নিচে রাখতে হবে।
তবে এই সংরক্ষণকেই মজুত ভেবে হিমাগারে অভিযান চালায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। মহাপরিচালক জানান, দেশের প্রচলিত আইনে হিমাগারে ডিম সংরক্ষণ অবৈধ কিছু নয়। কিন্তু বাজার অস্থিতিশীল করার উদ্দেশ্যে মজুত করলে সেটা অপরাধ।জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, আলু আর ডিম সংরক্ষণের পদ্ধতি এক নয়। প্রথম কথা হচ্ছে আমরা যে গুদামগুলোয় যাচ্ছি তা আলুর গুদামঘর এবং সেখানে আলু থাকার কথা। অথচ আলুর গোদামে ডিম রাখা হয়েছে, এর অর্থ সেখানে একটা কারসাজি করছে।
নির্দিষ্ট ব্যাখ্যা না দিয়ে এভাবে অভিযান পরিচালনা অনৈতিক বলে দাবি কৃষি বিশেষজ্ঞদের। সাবেক কৃষি সচিব আনোয়ার ফারুক বলেন, ডিম কোনোভাবেই আপনি গরমে রাখতে পারবেন না। কী পরিমাণ তাপমাত্রায় রাখলে বাজারজাত করতে পারবেন, তিন-পাঁচ-সাতদিন সংরক্ষণে রাখা যায়, সেটির ব্যাখ্যা থাকা উচিত। কিন্তু সেই ব্যাখ্যা না দিয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে হানা দিয়ে তাদের জরিমানা বা পণ্য নষ্ট করা, আমি মনে করি অনৈতিক।এদিকে গরমে ডিম সংরক্ষণে সরকারের সুনির্দিষ্ট নীতিমালা দরকার বলে জানান খাত সংশ্লিষ্টরা।