আলাদা সংস্থাকে তদন্তের সুপারিশ
সরকার কর্তৃক আইন দ্বারা বর্তমানে বিভিন্ন তদন্ত ইউনিটে নিয়োজিত জনবলের সমন্বয়ে একটি পৃথক তদন্ত সার্ভিস গঠন। একটি স্বতন্ত্র, কার্যকর, দক্ষ, নির্ভরযোগ্য, জনবান্ধব এবং প্রভাবমুক্ত আলাদা তদন্ত সার্ভিস গঠনে সুপারিশ করেছে বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন।
বিশেষ প্রতিনিধি : বিচারব্যবস্থায় তদন্ত প্রক্রিয়ার যথাযথ ভূমিকা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে একটি স্বতন্ত্র, কার্যকর, দক্ষ, নির্ভরযোগ্য, জনবান্ধব এবং প্রভাবমুক্ত আলাদা তদন্ত সার্ভিস গঠনে সুপারিশ করেছে বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন। যেখানে বলা হয়েছে, এ সংস্থা হবে পুলিশ বাহিনী থেকে সম্পূর্ণ আলাদা।বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) কমিশনের প্রধান আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মোমিনুর রহমানের নেতৃত্বে বিচার বিভাগ সংস্কারের প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টা বরাবর হস্তান্তর করা হয়।
প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপে বলা হয়, সরকার কর্তৃক আইন দ্বারা বর্তমানে বিভিন্ন তদন্ত ইউনিটে নিয়োজিত জনবলের সমন্বয়ে একটি পৃথক তদন্ত সার্ভিস গঠন। সার্ভিস প্রতিষ্ঠা, ওই সার্ভিসে নিয়োগ ও কর্মের শর্তাবলী নিয়ন্ত্রণ এবং ওই সার্ভিসকে কার্যকর করার জন্য যাবতীয় বিধান, যতদূর সম্ভব, মূল আইনেই অন্তর্ভুক্তকরণ। ফৌজদারি কার্যবিধি, ১৮৯৮ এবং অন্যান্য যেসব আইনে ফৌজদারি অপরাধ তদন্তের উল্লেখ আছে সেসব আইনে সংশোধনী আনা এবং ১৮৬১ সালের পুলিশ আইন ও ১৯৪৩ সালের পুলিশ প্রণিধানমালা সংস্কার।
আরও বলা হয়, এ সার্ভিস হবে পুলিশ বাহিনী থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। তাদের নিয়োগ, চাকরির শর্তাবলী, নিয়ন্ত্রণ, বাজেট, অবকাঠামো ও আনুষঙ্গিক বিষয়াদি একটি স্বতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোভুক্ত হবে। দায়িত্ব পালন ও ক্ষমতা ব্যবহারে সার্ভিস স্বাধীন থাকবে।
এ সার্ভিস গঠনের জন্য নতুন আইন প্রণয়ন করতে হবে। ক্রান্তিকালীন সময়ে পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রেষণে নিয়োগ ও আত্মীকরণ; তদন্ত সার্ভিস স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দ্বারা পরিচালিত হলেও এর কর্মকর্তারা যাতে রাজনৈতিক প্রভাবের শিকার না হন, তার জন্য একটি উচ্চতর কমিশনের পূর্বানুমোদন ছাড়া তাদের চাকরিচ্যুত করা যাবে না।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার বিচার বিভাগকে স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও কার্যকর করতে প্রয়োজনীয় সংস্কার প্রস্তাব করার লক্ষ্যে গত ৩ অক্টোবর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার অনুমোদনক্রমে বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়।প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের হাতে বিচার বিভাগ সংস্কারের প্রতিবেদন তুলে দেন কমিশনের প্রধান আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মোমিনুর রহমান।
কমিশনের অন্য সদস্যরা হলেন, হাইকোর্ট বিভাগের সাবেক বিচারপতি এমদাদুল হক, ফরিদ আহমেদ শিবলী, সাবেক জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ আমিনুল ইসলাম, মাসদার হোসেন, সিনিয়র অ্যাডভোকেট তানিম হোসেইন শাওন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কাজী মাহফুজুল হক সুপন ও শিক্ষার্থী প্রতিনিধি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী আরমান হোসাইন।