আরব সংবাদপত্র বিলুপ্তির পথে!
২০১০ সালে নিজের লেখা বইয়ে গবেষক রস ডসন ধারণা করেছিলেন, ২০২৮ সালের মধ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ২০৩৪ সালের মধ্যে সৌদি আরব থেকে সংবাদপত্র বিলুপ্ত হবে। আর কাতারে সংবাদপত্র বিলুপ্ত হবে ২০১৭ সাল বা এরও আগে। তবে সম্প্রতি ডসন জানিয়েছেন, আরব বিশ্বে কবে নাগাদ সংবাদপত্র গুরুত্বহীন হয়ে পড়বে, সেটা নিয়ে নতুন করে ভাবার সময় এসেছে। আগের ধারণা করা সময়েরও কয়েক বছর আগে আরব বিশ্ব থেকে সংবাদপত্র বিলুপ্ত হবে বলে মনে করছেন তিনি।
দুবাইয়ে ‘আরব মিডিয়া ফোরাম’কে ডসন বলেন, ‘সংযুক্ত আরব আমিরাত ও সৌদি আরবে ইন্টারনেট ও সামাজিক মাধ্যমগুলোর ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তা দেখে মনে হচ্ছে, আমার আগের বলা তারিখগুলো সংশোধন করা দরকার। হতে পারে সেটা আগের সময়ের চেয়ে কয়েক বছর কম।’সম্ভাব্য সময়ের অনেক আগেই আরব বিশ্বের সংবাদপত্রগুলোর ছাপা সংস্করণ বিলুপ্ত হয়ে যাবে। এর কারণ অঞ্চলটিতে ইন্টারনেট ও সামাজিক মাধ্যমগুলোর ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তা। এক গবেষকের বরাত দিয়ে এ খবর প্রকাশ করেছে আল অ্যারাবিয়া নিউজ পোর্টাল।
আরব উপসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোতে সামাজিক মাধ্যমগুলোর ব্যবহারের হার খুব বেশি। সৌদি আরবের লোকজন গড়ে সবচেয়ে বেশি ইউটিউবে ভিডিও দেখে। সেখানে টুইটার ও ফেসবুকের ব্যবহারও খুব বেশি হয়। এ বিষয়গুলোই ডসনের আগের হিসাব সংশোধনের ক্ষেত্রে কাজ করছে। ডসনের ব্যাখ্যা, সংবাদপত্র তখনই ‘মরে গেছে’ বলা হয়, যখন বিজ্ঞাপন থেকে মোট রাজস্ব আয় ২ দশমিক ৫ শতাংশের নিচে নেমে আসে।
ডসনের ধারণার পরও অবশ্য আরব বিশ্বে বিজ্ঞাপন বাবদ যত অর্থ ব্যয় হয় এর বড় অংশ দখল করছে সংবাদপত্রগুলো। অন্য খাতগুলোর মতো আয়ের দিক থেকে ডিজিটাল মিডিয়া এখনো ছাপা পত্রিকাকে ছাড়িয়ে যেতে পারেনি। এমনকি আরব অঞ্চলের প্রবীণ সাংবাদিকেরাও সংবাদপত্রগুলোর মৃত্যুর ব্যাপারে ডসনের ধারণার সঙ্গে একমত নন।
সৌদি গেজেট-এর এডিটর অ্যাট লার্জ খালিদ আলমিনা অবশ্য ডসনের বক্তব্যের সঙ্গে অনেকাংশেই একমত। তিনি বলেন, ‘আমি দেখেছি সৌদি আরব ও এ অঞ্চলের যে সংবাদপত্রগুলোর আগে ১ লাখ ৪০ হাজার কপি বিক্রি হতো, সেগুলো কমে এখন ৪০ থেকে ৪৫ হাজারে নেমে এসেছে।’ তরুণ সমাজের ধরন পরিবর্তন এবং সংবাদপত্র ছাপা ও বিতরণ সমস্যা এর কারণ বলে মনে করেন খালিদ।