আম্পায়ারদের কারণেই বিশ্বকাপ ক্রিকেটে ভারতের জয় হয়েছে-প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
বিশেষ প্রতিবেদক.ঢাকা : আম্পায়ারদের কারণেই বিশ্বকাপ ক্রিকেটের কোয়ার্টার ফাইনালে বাংলাদেশের বিপক্ষে ভারতের জয় হয়েছে বলে আইসিসির বাংলাদেশি প্রেসিডেন্ট মোস্তফা কামাল যে মন্তব্য করেছেন তাকে সমর্থন করেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক রিপোর্টে বলা হচ্ছে শেখ হাসিনা বরং মোস্তফা কামালের বক্তব্যে অনুমোদনই দিলেন যদিও তার এ বক্তব্য নিয়ে বিতর্ক রয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ত্রুটিপূর্ণ আম্পায়ারিং না হলে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের কোয়ার্টাল ফাইনালে ভারত বাংলাদেশকে হারাতে পারতো না, যদি না আম্পায়াররা কোনো ত্রুটি না করতেন।
বৃহস্পতিবার ভারত বাংলাদেশ ম্যাচ শেষে মোস্তফা কামাল বলেছিলেন, ‘আইসিসির সভাপতি হিসেবে নয়, একজন দর্শক হিসেবে বলছি, আমার কাছে মনে হয়েছে এই ম্যাচে খুবই বাজে আম্পায়ারিং হয়েছে। অনেক সিদ্ধান্তই ভুলভাবে বাংলাদেশের বিপক্ষে গেছে। খুব বাজে ছিল আম্পায়ারিং। এর পেছনে যদি অন্য রকম কিছু থাকে, আইসিসিকে তদন্ত করে দেখতে হবে।’ তিনি বলেন, বিষয়টি আমি আইসিসির পরবর্তী বৈঠকে উত্থাপন করবো। এমনও হতে পারে যে, আমি পদত্যাগ করেছি।
মোস্তফা কামাল আরো বলেন, ম্যাচে রোহিত শর্মা সর্বোচ্চ ১৩৭ রান করেন। অথচ রোহিতের ব্যাট থেকে ছোড়া বল যখন ক্যাচ হয় তখন তার রান হয়েছিল ৯০। কেবলমাত্র দুই আম্পায়ার আলিম দার ও ইয়ান গোল্ডের সিদ্ধান্তে রুবেল হোসেনের বলকে ‘নো’ ডাকায় ক্যাচ হয়েও বেঁচে যায় রোহিত শর্মা। আইসিসির সভাপতির ঐ বক্তব্য বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচার করা হয়।
আম্পায়ারদের তিনটি সিদ্ধান্ত নিয়ে ক্ষোভে ফুঁসছে গোটা বাংলাদেশ। তবে মূল ক্ষোভ, রুবেল হোসেনের বলকে ‘নো’ ডাকায় ক্যাচ হয়েও রোহিত শর্মার বেঁচে যাওয়া। টিভি রিপ্লেতে পরিষ্কার দেখা গেছে, বলটি ‘নো’ ছিল না। বিশ্বজুড়ে ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরাও একমত। মাইকেল হোল্ডিং, মার্টিন ক্রো, ভারতেরই ভি ভি এস লক্ষ্মণ থেকে শুরু করে অজিত আগারকার, এমনকি ওই ম্যাচের ধারাভাষ্যকার শেন ওয়ার্ন বলেছেন, বলটি ‘নো’ ছিল না। তবে আইসিসির প্রধান নির্বাহী একমত হতে পারছেন না! তিনি বলেন, ‘ওই নো বলের সিদ্ধান্তটি ছিল ৫০-৫০ সম্ভাবনার। ক্রিকেটীয় চেতনা বলে, আম্পায়ারের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত আর সেটিকে সবার সম্মান জানানো উচিত। ম্যাচ অফিশিয়ালরা কোনো এজেন্ডা বা এ রকম কিছু নিয়ে মাঠে নেমেছিলেন, এমন ধারণা পুরোপুরি ভিত্তিহীন।’
অথচ শিখর ধাওয়ানের ক্যাচ বা সুরেশ রায়নার এলবিডব্লু হয়তো ৫০-৫০ বলা যায়, কিন্তু রুবেলের বলটি যে নো ছিল না, এটি খালি চোখেই ধরা পড়েছে। আম্পায়ারের সিদ্ধান্তের প্রতি শ্রদ্ধা রাখা অবশ্যই ক্রিকেটের মৌলিক বিষয়। কিন্তু কোনো ভুল হয়ে গেলে, সেটা পরোক্ষে স্বীকার করাতেও তো দোষের কিছু নেই! আইসিসির প্রধান নির্বাহী ভুলের পক্ষে সাফাই গাইলে যন্ত্রণাটা যেন বেড়ে যায় আরও। অস্ট্রেলিয়ার ফেয়ারফ্যাক্স মিডিয়ার খবর, মোস্তফা কামালের মন্তব্যের জন্য নাকি আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও আলোচনা করেছেন দুই আম্পায়ার আলিম দার ও ইয়ান গোল্ড। আইসিসি’র সবুজ সংকেত পেলে তারা মামলা ঠুকে দিতে পারেন।