আমাদের গড়ার তাকত আছে: মাহফুজ
ভাঙার প্রকল্প থেকে সরে এসে দিনকে দিন আমাদের গড়ার প্রকল্প হাতে নেওয়া উচিত। লীগ বা হাসিনা সে অর্থে কিছুই না, বরং আঞ্চলিক আধিপত্যবাদের এক্সটেনশন। আর আঞ্চলিক আধিপত্যবাদ তার হেজেমনি তৈরি করছে: মাহফুজ
বিশেষ প্রতিনিধি : অন্তর্বর্তী সরকারের দপ্তরবিহীন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম গতকাল বুধবার মধ্যরাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক স্ট্যাটাস দেন । নিজের ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্টে ‘গড়ার তাকত আছে আমাদের?’ শিরোনামে দেওয়া স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, ‘আমরা আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক আধিপত্যবাদ মোকাবিলা করছি, নিছক কিছু মূর্তি বা দালান নয়।মাহফুজ আলম যখন এই স্ট্যাটাস দেন তার কয়েক ঘণ্টা আগে থেকে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর ভাঙা শুরু হয়েছিল।
মাহফুজ আলম তাঁর স্ট্যাটাসে বলেন, ‘মূর্তি না ভেঙে আমাদের উচিত শত্রুদের শক্তির বিপরীতে পাল্টা চিন্তা, শক্তি ও হেজেমনি গড়ে তোলা। ভাঙার প্রকল্প থেকে সরে এসে দিনকে দিন আমাদের গড়ার প্রকল্প হাতে নেওয়া উচিত।’মাহফুজ আলম বলেন, ‘লীগ বা হাসিনা সে অর্থে কিছুই না, বরং আঞ্চলিক আধিপত্যবাদের এক্সটেনশন। আর আঞ্চলিক আধিপত্যবাদ তার হেজেমনি তৈরি করছে বাস্তবধর্মী রাষ্ট্রকল্পনা, দেশে এবং ডায়াসপোরায় দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি এবং রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলি শক্তিশালী করে। আমাদের পাল্টা হেজেমনিও এ তিনটি বিষয়ের ওপর নির্ভরশীল।’
মাহফুজ আলম বলেন, ‘ভাঙার পরে গড়ার সুযোগ এসেছে, কিন্তু অনন্ত ভাঙা প্রকল্প আমাদের জন্য ভালো ভবিষ্যতের ইঙ্গিতবহ নয়। গড়ার প্রকল্পগুলো খুব দ্রুত শুরু ও বাস্তবায়ন করা হবে। আপনারা গড়ার কাজে সক্রিয় হোন।’অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নে শিগগরই কাজ শুরু করবে উল্লেখ করে মাহফুজ বলেন, ‘আহত ও নিহতদের পুনর্বাসন এবং জুলাই গণহত্যার বিচারের কাজও চলমান। এ মাসেই এ কাজগুলো আরও গতি পাবে।’
মাহফুজ লেখেন, ‘ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ নিছক ভাঙা নয়, বরং বিকল্প গড়ারও লড়াই। নতুন বন্দোবস্তে আমরা ভাঙার চেয়ে গড়ার দিকে গুরুত্ব দিতে চাই।’
ফেসবুক স্ট্যাটাসে মাহফুজ আলম উল্লেখ করেন, ‘খুনি হাসিনার বক্তব্য প্রচার এবং এর প্রতিক্রিয়ায় সব রাজনৈতিক অস্থিরতার জন্য দায়ী থাকবে আঞ্চলিক আধিপত্যবাদ। এ জন্যই আমাদের উচিত, সৃজনশীল শক্তির বিকাশ ঘটানো এবং সার্বিকভাবে এ আধিপত্যবাদ মোকাবিলায় প্রতিক্রিয়া না দেখিয়ে দূরদর্শী পদ্ধতি নেওয়া। কারণ, এ লড়াই মাত্র শুরু হলো।’
মাহফুজ বলেন, ‘ভবিষ্যৎ পানে তাকান, ইতিহাস আমাদের সুযোগ দিয়েছে। আমাদের এবার জিততেই হবে আর জেতার উপায় একটাই—রাষ্ট্রকল্প, শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান এবং দক্ষ ও মর্যাদাবান মানবসম্পদ গড়ে তোলা।’ফেসবুক স্ট্যাটাসের সবশেষে আল্লাহ সবাইকে ‘ফেরাসত’ বা ‘দূরদৃষ্টি’ দিক, সে কামনা করেন অন্তর্বর্তী সরকারের এই উপদেষ্টা।