‘আমরা ৩০ ঘন্টা অবরুদ্ধ ছিলাম-সেনাবাহিনীর কারণে বেঁচে গেছি’
বিশেষ প্রতিনিধি সিলেট থেকে : সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলার শিববাড়ি এলাকায় ‘জঙ্গি আস্তানা’ ‘আতিয়া মহলে’ প্রায় ৩০ ঘণ্টা বন্দি থাকার পর ৭৮ জনকে সেনাবাহিনী উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৩টা থেকেই ওই ভবন ঘিরে ফেলেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
সকালে বোমা, গুলি আর গ্রেনেডের শব্দে ঘুম ভাঙে ওই ভবনের অনেক বাসিন্দার। ভবনে ‘জঙ্গি’ আছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছ থেকে এ তথ্য পাওয়ার পর থেকেই আতঙ্ক গ্রাস করে নেয় বাসিন্দাদের। তাঁরা সেখান থেকে মুক্তির পথ খুঁজছিলেন।
আজ শনিবার সকালে সেনাবাহিনীর প্যারাকমান্ডো দলের সদস্যরা সেখানে অভিযান চালান। সারা দিনে বিভিন্ন সময়ে সেখান থেকে প্রায় ৭৮ জনকে উদ্ধার করা হয় বলে গণমাধ্যমকে সন্ধ্যায় ব্রিফিংয়ে জানান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফখরুল আহসান। উদ্ধার হওয়াদের মধ্যে ৩০ জন পুরুষ, ২১ জন নারী ও ২৭ জন শিশু রয়েছে।
‘আতিয়া মহল’ থেকে উদ্ধার হওয়া বাসিন্দাদের সঙ্গে গণমাধ্যমকর্মীদের কথা বলতে দেওয়া হয়।
এদের মধ্যে ত্রিশোর্ধ্ব এক ব্যক্তি বলেন, ‘সকালে যখন হঠাৎ করে বিশাল শব্দ হলে আমাদের ঘুম ভাঙে। গ্রেনেডের শব্দে ঘুম ভাঙার পর আমার স্ত্রী ছেলেমেয়ে নিয়ে দৌড় দেয়। পরে আমি তাদেরকে ডেকে থামাই। তারপর দরজা লাগিয়ে আমরা বন্দি থাকি, উদ্ধার হওয়ার আগ পর্যন্ত আমরা বন্দি ছিলাম। সকাল ৯টা থেকে সাড়ে ৯টার মধ্যে সেনাবাহিনী গিয়ে আমাদের উদ্ধার করে নিয়ে আসে।’
২২ বছরের এক তরুণী বলেন, ‘সেখানে অনেক খারাপ অবস্থা ছিল, ভয় পেয়ে কান্নাকাটি করেছি। অনেক শব্দ হয়েছে, দরজায় ধাক্কা দিলেও খুলিনি।৩৫ বছরের আরেক নারী বলেন, ‘সেনাবাহিনীর তৎপরতার জন্য আমরা বেঁচে গেছি। তাঁরা যদি আধা ঘণ্টা পরে আসত তাহলে আর কেউ বাঁচতাম না। তবে জঙ্গিরা আমাদের কোনো সমস্যা করেনি। আমরা বুঝতেই পারিনি যে, আমাদের এখানে জঙ্গি আছে।’