আফগান বধ-এবার ইংল্যান্ডকে হারানোর পালা
এস রহমান : আফগান বধ-এবার ইংল্যান্ডকে হারানোর পালা । আমরা আগেই বলেছিলাম এবার দেখাবে টাইগাররা।অবশেষে বাঘের ব্যাটিংয়ে জিতল টাইগাররা ১৪১ রানের বিশাল ব্যবধানে।এই জয়টা ১৪১ রানের বলেই ব্যাপক গুরুত্ব। কারণ, দ্বিতীয় ওয়ানডেটা যে দূর্ঘটনা এটা’ই প্রমাণ করলো টাইগাররা।
বাংলাদেশ এই বার্তা হচ্ছে আমরা এখন বড় দল! বাংলাদেশের তোলা ৬ উইকেটে ২৭৯ রানের জবাবে আফগানিস্তানকে অলআউট ১৩৮ রানে। রানে এটি বাংলাদেশের চতুর্থ বৃহত্তম জয়। ব্যাটে আসল নায়ক তামিম ইকবাল, ক্যারিয়ারের সপ্তম ওয়ানডে সেঞ্চুরি পেয়েছেন এ ম্যাচে। তাঁর সঙ্গে ১৪০ রানের জুটি গড়া সাব্বির রহমানকেও (৬৫) দিতে হবে কৃতিত্ব। শেষ দিকে ২২ বলে ৩২ তোলা মাহমুদউল্লাহ না থাকলে তো এত পুঁজি পাওয়া হয় না।
তবে বোলিংয়ে বাংলাদেশ সবাই মিলেই লড়ল। ৮ বছর পর ওয়ানডে খেলতে নামা মোশাররফ ২৪ রানে ৩ উইকেট নিয়ে সফলতম। তাসকিনের জোড়া উইকেট। মোসাদ্দেক, শফিউল, মাশরাফির একটি করে। যে ফিল্ডিং নিয়ে এত কথা হয়েছে, আজ সরাসরি থ্রোয়ে দুটি রান আউটও এল। দশে মিলে করি কাজের প্রতিচ্ছবি হয়ে থাকল বাংলাদেশের বোলিং।
তবে এর মধ্যে আলাদা করে বলতেই হবে মাশরাফির কথা। প্রথম উইকেটটি তুলে নিয়েছেন বলেই নয়; মাশরাফি নেতার মতোই নেতৃত্ব দিয়েছেন। অথচ একটা সময় সবার বুকে ভয়ের মৃদু স্রোত বয়ে গিয়েছিল—মাশরাফি কি আবারও…!
আফগানিস্তান ইনিংসের তৃতীয় ওভারের প্রথম বলটিতেই গগনবিদারী উল্লাসের ছাপ শেষ হয়েছে কি হয়নি, হঠাৎই চুপ পুরো স্টেডিয়াম। সম্ভবত স্তম্ভিত হয়ে পড়েছিল বাংলাদেশও। পায়ে ব্যথা পেয়ে যে মাটিতে পড়ে আছেন মাশরাফি বিন মুর্তজা।
আগের বলেই দুর্দান্ত সুইং ডেলিভারিতে মোহাম্মদ শেহজাদকে বোল্ড করেছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। পরের বলটি করতে গিয়েই পা ফেলতে হলো গড়বড়, মাশরাফি বসে পড়লেন মাটিতে। খেলোয়াড়েরা তাঁকে ঘিরে ছিলেন, ফিজিও এলেন। আর পুরো স্টেডিয়ামে তখন শঙ্কার রেণু উড়ছে, এত এত অস্ত্রোপচার করা পায়েই যে ব্যথা পেলেন মাশরাফি।
চাইলে ঘটনাটিকে এই সিরিজের বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি ধরে নিতে পারেন। দুর্দান্ত স্বপ্নযাত্রার মতো কাটানো একটি বছরের পর এই সিরিজ দিয়ে আবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরেছে বাংলাদেশ। তাতে সহযোগী দেশ আফগানিস্তানের সামনে এমন হোঁচট! সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচের কোনোটিতেই ভালো ক্রিকেট খেলেনি বাংলাদেশ। প্রথমটিতে শেষ কয়েক ওভারের দুর্দান্ত বোলিং প্রদর্শনীতে জয়, দ্বিতীয়টিতে তো হেরেই গেল।
আজ সিরিজ নির্ধারণী তৃতীয় ম্যাচে বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়াল, মাশরাফির মতো করেই। সব শঙ্কাকে দূরে ঠেলে আবার উঠে দাঁড়ান বাংলাদেশ অধিনায়ক, ওই ওভারেই আবার বোলিং করলেন সবাইকে অবাক করে দিয়ে।বাংলাদেশের এত বড় জয়ে অবশ্য অবাক হওয়ার কিছু নেই। বরং দ্বিতীয় ম্যাচ হেরে ৩ পয়েন্ট হারিয়ে ফেলাটার দুঃখটাই বেশি পোড়াচ্ছে।
২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতে ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হতে যাওয়া ইংল্যান্ড সিরিজের আগে কিছুটা স্বস্তিও উপহার দিল দেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের। সেই সিরিজে আবারও পয়েন্ট বাড়িয়ে নেওয়ার সুযোগ তো থাকছেই।ম্যাচের আগে কত সমীকরণ, কত হিসাব–নিকাশ। আজ হেরে গেলে র্যাঙ্কিংয়ের কী অবস্থা হবে, এ নিয়ে শঙ্কা। কারও কারও তো শঙ্কা আরও বড় চিত্রপটে—আফগানিস্তানের সঙ্গেই এমন খেলছে দল, তাহলে ইংল্যান্ডের সঙ্গে কী করবে? সব উত্তর আজ দিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। এখন ইংল্যান্ডকে হারানোর পালা!