• রোববার , ১৭ নভেম্বর ২০২৪

আপন জুয়েলার্সের লম্পট পোলার ফের- সাড়ে ১৩ মণ স্বর্ণ ও হীরা বাজেয়াপ্ত


প্রকাশিত: ১১:৫৩ পিএম, ৪ জুন ১৭ , রোববার

নিউজটি পড়া হয়েছে ১০৮ বার

বিশেষ প্রতিনিধি : আপন জুয়েলার্সের লম্পট পোলার ফেরে মানসম্মান ধূলিস্যাত হয়ে গেল সেলিমের। একই সঙ্গে apon jualarse-www.jatirkhantha.com.bdখোয়া সাড়ে ১৩ মণ স্বর্ণ ও হীরা ।এগুলো বাজেয়াপ্ত করেছে সরকার। শুল্ক গোয়েন্দারা জাতিরকন্ঠকে জানিয়েছেন, আপন জুয়েলার্সের পাঁচটি বিক্রয় কেন্দ্র থেকে জব্দ করা অন্তত আড়াইশ’ কোটি টাকা মূল্যের সাড়ে ১৩ মণ স্বর্ণ ও ৪২৭ গ্রাম হীরা বাংলাদেশ ব্যাংকের (কেন্দ্রীয় ব্যাংক) ভল্টে জমা দেয়া হয়েছে।

রোববার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত বিক্রয় কেন্দ্রগুলো থেকে কঠোর নিরাপত্তায় এসব স্বর্ণ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট শাখায় হস্তান্তর করা হয়। রোববারই আপন জুয়েলার্সের সিলগালা করা বিক্রয় কেন্দ্রগুলো মালিকপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।shafath-sadman__www.jatirkhantha.com.bd

শুল্ক গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলছেন, আপন জুয়েলার্স কর্তৃপক্ষ এখন থেকে বিক্রয় কেন্দ্রগুলো খুলে বৈধভাবে স্বর্ণের ব্যবসা করতে পারবে।রোববার সকাল ৯টা থেকে শুল্ক গোয়েন্দাদের পৃথক প্রতিনিধি দল আপন জুয়েলার্সের গুলশানের দুটি, উত্তরা, ধানমণ্ডির সীমান্ত স্কয়ার ও মৌচাক মার্কেটের বিক্রয় কেন্দ্রে হাজির হয়। তারা মালিক পক্ষের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে জব্দ স্বর্ণালঙ্কারের তালিকা তৈরি করেন।

apon jualarse-www.jatirkhantha.com.bdআপন জুয়েলার্সের অন্যতম মালিক দিলদার আহমেদের ছেলে সাফাত আহমেদ বনানীর রেইনট্রি হোটেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রী ধর্ষণ মামলার প্রধান অভিযুক্ত। গত ৬ মে ওই মামলা দায়েরের পর আপন জুয়েলার্সের স্বর্ণ ব্যবসার বৈধতা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। এরই ধারাবাহিকতায় শুল্ক গোয়েন্দারা ওই পাঁচটি বিক্রয় কেন্দ্রে অভিযান চালিয়ে স্বর্ণগুলো জব্দ করেন।

শুল্ক গোয়েন্দারা বিমানবন্দরে অভিযান চালিয়ে গত কয়েক বছরে বিপুল পরিমাণ স্বর্ণ জব্দ করলেও দেশের ইতিহাসে এই প্রথম স্বর্ণের দোকানে অভিযান চালিয়ে এত বিপুল পরিমাণ অবৈধ স্বর্ণ জব্দ করলেন। অবৈধ স্বর্ণ বিক্রির বিষয়ে জানতে দিলদার আহমেদের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মইনুল খান জানান, অভিযানের সময় আপন জুয়েলার্সের মালিকপক্ষ সাড়ে ১৩ মণ স্বর্ণ ও ৪২৭ গ্রাম হীরার বৈধ কাগজ দেখাতে পারেননি। বৈধতা প্রমাণের সময় দিয়ে আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদ ও তার দুই ভাইকে শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তরের কার্যালয়ে তলব করা হয়।

দুই দফায় তারা সশরীরে হাজির হলেও বৈধ কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেননি। সর্বশেষ তারা ৩০ মে অধিদপ্তরে যে কাগজপত্র পাঠিয়েছিলেন, তা-ও বৈধ নয়। এ কারণে এই পাঁচটি বিক্রয় কেন্দ্র থেকে অবৈধ স্বর্ণ ও হীরা চূড়ান্তভাবে জব্দ করে নিয়ম অনুযায়ী শুল্ক গুদামের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত হয়।

শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের যুগ্ম কমিশনার সফিউর রহমান জানান, জব্দ করা স্বর্ণের মধ্যে যেগুলো গ্রাহকের, তা আলাদা রাখা হয়েছে। এগুলো কাগজপত্র যাচাই করে প্রকৃত গ্রাহককে ফেরত দেওয়া হবে।

এদিকে জব্দ স্বর্ণ কেন্দ্রীয় ব্যাংকে পাঠানোর খবরে বেশ কয়েকজন গ্রাহক বিক্রয় কেন্দ্রগুলোতে হাজির হন। তারা কাগজপত্র দেখালেও তাদের অলঙ্কার হস্তান্তর করা হয়নি। রোববার দুপুরে সীমান্ত স্কয়ারে আপন জুয়েলার্সের বিক্রয় কেন্দ্রের সামনে সৈয়দা পারভীন নামে এক গ্রাহক কাগজ দেখিয়ে বলেন, তিনি সাত ভরি অলঙ্কারের অর্ডার দিয়েছিলেন।

গত মাসে তা তাকে দেওয়ার কথা ছিল। মাত্র ২০ হাজার টাকা বাকি ছিল; কিন্তু এখনও সেই অলঙ্কার পাননি। একই বিক্রয় কেন্দ্রে নিশাদ রোজ নামের একজন গ্রাহক বলেন, তিনি ওই শাখাটিতে স্বর্ণালঙ্কার বিক্রি করেছিলেন। এখনও এক লাখ টাকা পাবেন।

গ্রাহকদের এসব বিষয়ে জানতে চাইলে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক নুরুল হুদা আজাদ বলেন, গ্রাহকরা অবশ্যই তাদের স্বর্ণালঙ্কার ফেরত পাবেন। তাদের তালিকা যাচাই হচ্ছে। আপন জুয়েলার্স কর্তৃপক্ষ তা ফেরত দিতে বাধ্য।