আনাতোলিয়া’র কপাল-১০১ বছর বয়সে সন্তানের মা !
ডেস্ক রিপোর্টার : বয়স ১০১। ঝুলে গেছে চামড়া, শরীর ভঙ্গুর। তবুও ইতালির আনাতোলিয়া ভার্তাদেলার জীবনে এখন উদযাপনের সময়। কিছুদিন আগেই তার কোল আলো করে এসেছে ফুটফুটে পুত্র সন্তান। যা সম্ভব হয়েছে ওভারি ট্রান্সপ্লান্টের মাধ্যমে। আর তা নিয়েই বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছেন শতায়ু এই বৃদ্ধা। খবর আনন্দবাজার।
বিতর্ক ওঠে ইউরোপীয় আইন অনুযায়ী ওভারি ট্রান্সপ্লান্ট বেআইনি। তবে কীভাবে এই অস্ত্রপচার করালেন বৃদ্ধা? আনাতোলিয়া জানিয়েছেন, তুরস্কের এক বেসরকারি হাসপাতালে তিনি এই অস্ত্রপচার করেছেন। যেখানে ডিম্বাশয় প্রতিস্থাপন নিয়ে ইউরোপীয় আইন কার্যকর নয়। তবে সেই ক্লিনিকের নাম প্রকাশ করতে চাননি তিনি। শুধু বলেন, ‘‘যারা আমার অস্ত্রপচার করেছেন সেই চিকিৎসকদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। এতো দিন ধরে আমার ভগবানের কাছে নিজেকে অপ্রয়োজনীয় মনে হতো।
৪৮ বছর বয়সে ডিম্বাশয়ের ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে আমি আর সন্তানের জন্ম দিতে পারিনি। মাঝে মাঝে ভাবতাম মাত্র ১৬টি সন্তানের জন্ম দেওয়ার জন্য ভগবান আমাকে শাস্তি দিচ্ছেন। কিন্তু ভগবানের কৃপায় আবারও আমি মা হতে পারলাম। ১৭তম সন্তান এলো আমার কোলে,’ কথাগুলো বলতে বলতে কেঁদে ফেলেছিলেন আনাতোলিয়া।
সত্যিই কি এই অদম্য ইচ্ছাপূরণ করতে বেআইনি পথে হাঁটলেন বৃদ্ধা? তাঁর চিকিৎক আলেক্সান্দ্রো পোপোলিচি জানান, ‘‘আমি বিচার করার কে? উনি ফুটফুটে এক শিশুর জন্ম দিয়েছেন। অবশ্যই এটা ভগবানের উপহার। তুরস্কে এই অস্ত্রপচার সম্পূর্ণ আইনি এবং বিশেষজ্ঞ চিকিৎকরাই তা করেছেন। এই বয়সেও উনার স্বাস্থ্য বেশ ভালো। আশা করছি আরও বেশ কিছু বছর উনি বাঁচবেন।’’
কী ভাবে মা হলেন আনাতোলিয়া?
‘‘১৯৯৮ সালে আমার স্বামী মারা গিয়েছেন। ইন্টারনেটে শুক্রাণুদাতা খুঁজতে গিয়ে ফ্রান্সেস্কোর (সদ্যজাতর নাম) বাবাকে পাই। ২৬ বছরের এক ক্যাথলিক যুবক। এটাই আমার কাছে যথেষ্ট ছিল। আমি শুধু চেয়েছিলাম আমার সন্তানকে যেন ক্যাথলিক চার্চ গ্রহণ করে। আমি ফ্রান্সেস্কোর বাবাকে বিয়ে করিনি। আমার সন্তানের জীবনেও ওর কোনও ভূমিকা থাকবে না। এই কথা আমি পোপকে লিখে জানিয়েছিলাম।
পোপের নামানুসারে সন্তানের নামও রেখেছি। আমার বিশ্বাস, পোপ আমাকে ক্ষমা করে দেবেন। এখনও আমি আমার মৃত স্বামীকে ভালোবাসি। যত দিন বাঁচবো ওর বিধবা হয়েই বাঁচতে চাই।’’ সদ্যজাতকে বুকে জড়িয়ে কথাগুলো বলে যাচ্ছিলেন লোলচর্ম মা।
বিশ্বে সবচেয়ে বেশি বয়সে মা হওয়ার নজির এখন আনাতোলিয়ার। এতো দিন এই নজিরের অধিকারী ছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার মালেগওয়ালে রামোকগোপা। ১৯৩১ সালের ৬ অক্টোবর তাঁর ২৫ ও ২৬তম (যমজ) সন্তানের জন্ম দেন তিনি। এর তিন দিন আগে ৯২ বছরের জন্মদিন পালন করেন মালেগওয়ালে।