আদানির বিদ্যুতে ঘাপলা-দ্বিগুণ দামে কেনা হয়
বিশেষ প্রতিনিধি : ভারতের অন্যান্য উৎসের চেয়ে গড়ে প্রায় দ্বিগুণ দামে আদানির বিদ্যুৎ কিনেছে বাংলাদেশ। দেশে উৎপাদন সক্ষমতা ও চাহিদার বিবেচনায় যা দরকার ছিল না বলে মত বিশেষজ্ঞদের। তাদের মতে, বিদ্যুৎখাতের কেনাকাটা, চুক্তিতে বিদায়ী সরকার ব্যক্তি ও গোষ্ঠীস্বার্থকে গুরুত্ব দিয়েছে। যার পুনর্মূল্যায়ন জরুরি।গত বছর মার্চ মাসে ভারতের ঝাড়খন্ড প্রদেশের গোড্ডায় নির্মিত কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে আমদানি শুরু হয়।
আদানির ১৬০০ মেগাওয়াটের কেন্দ্র থেকে ২০২২-২৩ অর্থবছর বিদ্যুৎ কেনা হয়েছে গড়ে ১৪ টাকার বেশি দামে। অন্যদিকে ভারতের আরও ৪ উৎস থেকে যে ১০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি হয় তার গড় দাম ছিল ৮ টাকার নিচে।নিজস্ব ১০ হাজার মেগাওয়াট বাড়তি উৎপাদন সক্ষমতা বসিয়ে রেখে আদানির বিদ্যুৎ কেনার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন ছিল বরাবরই। এতে ক্যাপাসিটি চার্জ ও বৈদেশিক মুদ্রা খরচের চাপ বেড়েছে বলে মত বিশ্লেষকদের।
এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ারের সম্পাদক মোল্লাহ আমজাদ বলেন, ‘কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে এভাবে বাহিরে না করলেও চলত। আমরা নিজস্ব সম্পদ ব্যবহার করা থেকে বিচ্যুত হয়ে যাবার কারণে মূল পরিকল্পনাকে পাশ কাটিয়ে রাজনৈতিক ও গোষ্ঠী স্বার্থের বিবেচনায় একের পর এক প্রকল্প যে নেওয়া হয়েছে তার কারণেই কিন্তু এই সেক্টরের আজকে কিন্তু এই নাজুক অবস্থা।’
গত অর্থবছর দেশের কয়লা ভিত্তিক কেন্দ্রগুলো থেকে পিডিবি প্রতি ইউনিট ১৩ থেকে ১৬ টাকায় বিদ্যুৎ কিনেছে। বর্তমানে প্রতিটন কয়লার দাম কমে ১০০ ডলারের ঘরে।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ম তামিম বলেন, ‘এই মুহূর্তে কয়লার গড় খরচ, ফুয়েলের খরচ ৭টাকা পার কিলোওয়াট আওয়ার। আর ক্যাপাসিটি পেমেন্ট ৩টাকা পার কিলোওয়াট আওয়ার। তাহলে ১০টাকা হলো টোটাল উৎপাদন খরচ। বিদ্যুৎ উৎপাদনের যে কমার্সিয়াল মডেল আছে, চুক্তি যেগুলো আছে সেগুলো কীভাবে অপটিমাইজ করা যায়, তা চিন্তাভাবনা করে করা উচিত।’
বর্তমানে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে মোট বকেয়া ২২০ কোটি ডলার। ভারতের আদানিই পাবে ৭০ কোটি ডলার। এদিকে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর মোদি সরকার ভারতেও আদানির বিদ্যুৎ বিক্রির সুযোগ দিয়ে বিধিমালা সংশোধন করেছে।