আজ ঝলসে উঠবে সাকিব মুশফিক,সাব্বির এবং বিপিএল সেনশেসন রনি
এস রহমান : বাংলাদেশ জিম্বাবুয়ে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টুয়েন্টি ম্যাচটি শুরু হবে রোববার বিকেল ৩টায়। আজ ঝলসে উঠবে সাকিব, মুশফিক, সাব্বির এবং বিপিএল সেনশেসন আবু হায়দার রনি।বছরের প্রথম ম্যাচটা শেষ পর্যন্ত ৪ উইকেটে জিতেছে টাইগাররা। তাই মাশরাফিদের আত্মবিশ্বাসও খানিকটা বেড়ে গেছে।
চার ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজেও সফরকারী জিম্বাবুয়েকে হোয়াইটওয়াশ করতে চায় স্বাগতিকরা। এজন্য দলের প্রতিটি সদস্যকে ব্যাটিংয়ে আরও উন্নতির তাগিদ দিয়েছেন অধিনায়ক মাশরাফি।দ্বিতীয় ম্যাচেই সেটি করতে চান টাইগার ব্যাটসম্যানরা। শনিবার বিকেলে প্রি-ম্যাচ প্রেস কনফারেন্সে তেমনটাই জানিয়েছেন বাংলাদেশ দলের অলরাউন্ডার সাব্বির রহমান।
সাব্বির বলেন, ‘আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে নতুন বছরের প্রথম ম্যাচেই আমরা জয় পেয়েছি। জিততে চাই পরের তিনটিতেও। প্রথমটির মত আগামীর ম্যাচগুলোও গুরুত্ব সহকারে খেলবে লাল-সবুজের দল।’দলের কম্বিনেশন ঠিক করা নিয়ে যে মিশনে নেমেছে বাংলাদেশ দল, তারই দ্বিতীয় পরীক্ষা রোববার। তবে ড্রেসিংরুমে কান পেতে পাওয়া খবর একাদশে কোনো পরিবর্তন থাকছে না। শুধু ব্যাটিং অর্ডারে কিছু ওলট-পালট হতে পারে। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে ফিরিয়ে আনা হতে পারে চার নম্বরে, সাকিব ওই ছয়েই আর শুভাগত সাত নম্বরে।
সফরকারী জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে শুক্রবার প্রথম টি-টোয়েন্টি জিতে চার ম্যাচ সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছে স্বাগতিক বাংলাদেশ। জয়ের ধারা অব্যাহত রাখতে রোববারের ম্যাচের আগে শনিবার কঠোর অনুশীলন করেছে মাশরাফি বাহিনী।
সিরিজ জয়ের স্বাদ পেতে ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডিং তিন বিভাগেই সমান গুরুত্ব দিয়ে অনুশীলনে ঘাম ঝরায় টাইগাররা। ব্যাটিং নিয়ে নেটে ঘাম ঝড়ান তামিম, সৌম্যরা।
স্পট লাইটে সাকিব, মুশফিক, সাব্বির থাকলেও দ্বিতীয় ম্যাচে অভিষেক হতে পারে বিপিএল সেনশেসন আবু হায়দার রনির। সেক্ষেত্রে নুরুল হাসান অথবা আল-আমিনকে একাদশের বাইরে থাকতে হতে পারে। ব্যাটিং অর্ডার পরিবর্তন করলেও পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলাটাই লক্ষ্য টাইগারদের।
পরিবর্তন জিম্বাবুয়ের ড্রেসিংরুমেও একটা এসেছে। সেখানে শনিবারই যোগ হয়েছেন তাদের নতুন কোচিং স্টাফ ব্যাটিং উপদেষ্টা মারভান আতাপাত্তু। মাত্র ১০ দিনের জন্য তাকে আনা হয়েছে। হয়তো বিপিএলে আতাপাত্তুর কোচিং অভিজ্ঞতাটা কাজে লাগাতে চাইছে জিম্বাবুয়ে।
আসলে, হারতে হারতে দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া জিম্বাবুয়ের একটা জয়ের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। রোববারের ম্যাচে তারা যে মরণকাঁমড় বসাতে চাইবে তা স্বাভাবিকভাবেই অনুমেয়।প্রথম ম্যাচের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেয়ে বাংলাদেশ দলের কোচ হাথুরুও বেশ সতর্ক। কিছুতেই প্রতিপক্ষের রান বাড়তে দেওয়া যাবে না।
সেদিন উদ্বোধনী জুটিতেই বড় স্কোর করেছিল জিম্বাবুয়ে। ম্যাচের ভিডিওফুটেজ আর পরিসংখ্যান ঘেঁটে বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্ট একটি ব্যাপারে একমত হয়েছে যে, খুলনার এই শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামের পিচ ব্যাটিং সহায়ক। সেখানে ব্যাটসম্যানরা কোনো একটি ভুল করলে সেটা লুফে নিতে হবে। সে সঙ্গে মানসিকভাবে ১৮০ থেকে ১৯০ রানের জন্য তৈরি থাকতে হবে ব্যাটসম্যানদের।
জিম্বাবুয়ের সঙ্গে এই সিরিজ জয়ের দৃশ্যমান একটি লক্ষ্য তো রয়েছেই, তার সঙ্গে একটা ছায়ালক্ষ্যও আছে। সেটা র্যাংকিংয়ের রেটিং পয়েন্ট। এই সিরিজের এক একটি ম্যাচ জিতলেই মিলবে ৩ রেটিং পয়েন্ট, আর একটি ম্যাচ ফসকে গেলেই কমবে ৫ রেটিং পয়েন্ট।
তাই সব বিচারে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচটি ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। নিজেদের কোনো ভুল যাতে জিম্বাবুয়ের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে না দেয় সেদিকে সতর্ক মাশরাফি। দলের প্রত্যেককে বলে দেওয়া হয়েছে বড় স্কোরের জন্য তৈরি থাকতে। প্রয়োজনে যে ব্যাটিং অর্ডারও বদলে যেতে পারে, সেটাও বলে দেওয়া হয়েছে, ‘আমি তিন নম্বরে ব্যাটিং করাটা বেশ উপভোগ করি। কারণ তখন পেস বোলাররা থাকে। তবে দলের প্রয়োজনে যেকোনো পজিশনেই আমি খেলতে প্রস্তুত। এজন্য আমি তৈরি’, সাব্বির রহমান রুম্মানের এ ঘোষণাতেই স্পষ্ট, হাথুরুর পরীক্ষা-নিরীক্ষা আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিয়েছে দলের ছেলেদের।
এখন আর কেউ এটা মনে করে নামে না যে, আমাকে ধরে ধরে ইনিংস এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। কোচ চাইছেন ব্যাটিং অর্ডার ভেঙেচুড়ে ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সাহসিকতা বাড়াতে, যেটা ধরা পড়ল শনিবার নেট ব্যাটিংয়ের অনুশীলনে। বড় বড় শট খেলায় ছেলেদের হাত যে কিছুটা রপ্ত হয়েছে, তা এই অনুশীলন দেখলেই পরিষ্কার হয়ে যায়!
সিরিজ নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চললেও মাশরাফি চান না একাদশে কোনো বদল আনতে। রোববার তিনি শুভাগতকে দিয়ে বোলিং করাতে চাইছেন। সে সঙ্গে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে চার নম্বরে আনার ব্যাপারে একমত হয়েছেন। কিন্তু ড্রেসিংরুমের এই ছকও বদলে যেতে পারে ম্যাচ পরিস্থিতির বিচারে।