আগাদেজের মেয়ে পণ্য
বিবিসি অনলাইনে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এসব মেয়েশিশুর জীবনের করুণ চিত্র তুলে ধরা হয়।
জাতিসংঘের মানব উন্নয়ন সূচকে নাইজারের অবস্থান সবচেয়ে নিচে অর্থাত্ ১৮৭তম। এ দেশে বাল্যবিবাহের হারও অন্য অনেক দেশের চেয়ে বেশি।
নাইজারের ২৪ শতাংশ মেয়েশিশুর ১৫ বছরের মধ্যেই বিয়ে হয়ে যায়। আর ১৮ বছরের মধ্যে প্রায় ৮০ শতাংশ মেয়েকে বিয়েতে বাধ্য করা হয়। দেশটিতে বসবাসরত ভিন্ন ভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে সাংস্কৃতিক ভিন্নতা থাকলেও এ বিষয়ে খুব একটা ভিন্নতা নেই। এর প্রধান কারণ দারিদ্র্য।
এখানকার মেয়েশিশুদের মোটা টাকার বিনিময়ে বিক্রি করে দেন তাদের অভিভাবকেরা। এ ছাড়া পরিবারের অন্নপ্রার্থী অনেকগুলো মুখের একটি মুখ কমে যায়।
হতভাগ্য আমিনাদের গল্প
এসব হতভাগ্য মেয়েরই একজন আমিনা (ছদ্মনাম), ১৫ বছর বয়সে যার বিয়ে হয়ে যায়। স্বামী তাঁকে ত্যাগ করেছেন। হাতে কোনো কাজও নেই। আমিনার মতে, ‘এখানে মেয়েদের স্বপ্ন দেখারও কোনো সুযোগ নেই।’ আমিনা বলেন, অধিকাংশ পরিবারই মেয়েদের বিয়ে দিতে বাধ্য হয়। কারণ তাঁদের আর কোনো উপায় থাকে না। কোনো ধনী পুরুষ যদি মোটা টাকার প্রস্তাব দেয়, তখন মেয়ে খুব ছোট হলেও তাঁরা বিয়ে দিয়ে দেন।
আয়েশা (ছদ্মনাম) নামের আরেক নারী জানান, ১৩ বছর বয়সে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়ে যায়। স্বামী প্রায়ই তাঁকে আটকে রাখতেন ও দুর্ব্যবহার করতেন। একবার টানা ১০ দিন শোয়ার ঘরে আয়েশাকে আটকে রাখা হয়েছিল। পরে ভাইয়ের সহায়তা পালিয়ে যান তিনি। ২১ বছর বয়সী আয়েশা এখন সেবিকা (নার্স) হওয়ার জন্য পড়াশোনা করছেন।
শারীরিক অসুস্থতা ও রোগবালাই
অল্প বয়সে বিয়ে হওয়ার কারণে এসব মেয়েশিশুর দ্রুতই সন্তান ধারণের ঝুঁকি তৈরি হয়। ফলে এদের ফিস্টুলাসহ নানা ধরনের স্ত্রীরোগের শিকার হতে হয়। নাইজারের রাজধানী নিয়ামের ডিমোল ক্লিনিকে এমন রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি।
ক্লিনিকটির পরিচালক সালামাতুও ত্রাওরের মতে, যেহেতু অধিকাংশই মানুষই অশিক্ষিত, তাই এ পরিস্থিতির পরিবর্তন হওয়া খুব কঠিন।
ধর্মীয় চাপ
মেয়েশিশুদের অল্প বয়েসের বিয়ে ঠেকাতে নাইজার সরকার আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছিল। তবে তা ধর্মীয় নেতাদের তোপের মুখে বাধাগ্রস্ত হয়।
আগাদেজের একটি মাদ্রাসার শিক্ষক শেখ আব্বাস ইয়াহিয়া বলেন, ইসলাম ধর্মের বিধান অনুযায়ী একটি মেয়ে যদি শারীরিকভাবে সমর্থ হয়, তবে তাকে নয় বছর বয়সেও বিয়ে দেওয়া যেতে পারে। মে ৩০, ২০১৪: