• সোমবার , ১৮ নভেম্বর ২০২৪

অহেতুক হয়রানি ও জরিমানার প্রতিবাদে সুপার শপ মালিকরা রোববার থেকে ধর্মঘটে


প্রকাশিত: ৯:২৫ পিএম, ১৪ মে ১৬ , শনিবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৪২ বার

বিশেষ প্রতিবেদক  :   বৈষম্যমূলক নীতিমালার শিকার সুপার শপ মালিকরা কাল রোববার থেকে 27ধর্মঘটে যাচ্ছেন।এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ সুপার মার্কেট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব মো. জাকির হোসেন বলেছেন, তাঁরা অনর্থক হয়রানির শিকার হচ্ছেন।

সূত্র জানায়, পঁচা ও মেয়াদোত্তীর্ণ খাদ্যদ্রব্য বিক্রিরদায়ে রাজধানীর দুটি সুপারশপকে জরিমানা ও দণ্ডের প্রতিবাদে রোববার দেশব্যাপি ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে বাংলাদেশ সুপার মার্কেট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন।

আজ শনিবার বাংলাদেশ সুপার মার্কেট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব মো. জাকির হোসেন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়েছে। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘হাজার হাজার কর্মী, কৃষক ও উৎপাদনকারীর ভাগ্য এই বিকাশমান খাতের সঙ্গে জড়িত। অথচ সুপার মার্কেট খাত একদিকে বৈষম্যমূলক নীতিমালার শিকার, অন্যদিকে এই নীতির প্রয়োগে অনর্থক হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে।

নিরাপদ খাদ্যের নামে ভ্রাম্যমাণ আদালত সুপার মার্কেটে নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছেন। কেবল ভ্রাম্যমাণ আদালত নন, পুলিশ-র‌্যাব ও মিডিয়া নিয়ে বারবার অভিযান চালানো হচ্ছে। অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে খাদ্য পরীক্ষা করে জরিমানাও করা হচ্ছে। যেন অভিযানে সুপার মার্কেটগুলোকেই টার্গেট করা হচ্ছে।

এর মাধ্যমে ক্রেতাদের কাছে ভুল বার্তা দেওয়া হচ্ছে। যেন এই দোকানগুলোর উদ্দেশ্যই হচ্ছে ক্রেতাদের কাছে পঁচা বা ভেজাল পণ্য বিক্রি করা। যেসব কোম্পানি প্রচুর টাকা বিনিয়োগ করে তাদের অবকাঠামো ও ব্র্যান্ড তৈরি করেছে, তারা ইচ্ছাকৃতভাবে এমন কোনো কাজ করতে পারে না, যার ফলে তারা ক্রেতাদের আস্থা হারাবে। তাই নীতিমালায় বৈষম্য ও আইনের অপপ্রয়োগের মাধ্যমে হয়রানি’র প্রতিবাদে ১৫ মে সারা দেশে চেইন সুপার শপ বন্ধ থাকবে।’

বাংলাদেশ সুপার মার্কেট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন এই কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। ফলে ওই দিন সারাদেশের আগোরা, মীনা বাজার, স্বপ্ন, প্রিন্স বাজার, ক্যারি ফ্যামিলি, শপ অ্যান্ড সেফ, আলমাস, আমানাসহ অন্যান্য সুপার মার্কেট বন্ধ থাকবে।

উল্লেখ্য, পচা মাছ-মাংস এবং মেয়াদোত্তীর্ণ খাদ্যদ্রব্য বিক্রির উদ্দেশ্যে সংরক্ষণ করে রাখায় রাজধানীর দুটি সুপারশপ ও একটি ফাস্টফুডকে জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। গত বুধবার শান্তিনগরে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মশিউর রহমানের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালিত হয়। এ সময় খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। অর্থ দন্ড-প্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান তিনটি হলো আগোরা, মীনা বাজার ও কুপার্স।

খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ভ্রাম্যমাণ আদালত শান্তিনগরের আগোরা সুপারশপে বিক্রির জন্য রাখা পচা মাছ ও মাংস এবং মেয়াদোত্তীর্ণ খাদ্যদ্রব্য দেখতে পান। এ সময় প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক মনিরুল ইসলামকে দুই বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও দুই লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়।

পরে ওই এলাকার ফাস্টফুডের দোকান কুপার্সে অভিযান চালায় ভ্রাম্যমাণ আদালত। সেখানে মেয়াদোত্তীর্ণ পাউরুটি ও অন্যান্য খাবার রাখায় নিরাপদ খাদ্য আইনের ৩৩ ধারা অনুযায়ী, প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপককে ৩ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে তিন মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়। এরপর একই এলাকার মীনাবাজারে অভিযান চালিয়ে পচা মাছ-মাংস ও মেয়াদোত্তীর্ণ খাদ্যদ্রব্য রাখায় প্রতিষ্ঠানের অফিস ইনচার্জকে ৩ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে তিন মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়।

ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মশিউর রহমান বলেন, আগোরা সুপারশপ তিনটি অপরাধ করায় ওই প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপককে সাজা ও অর্থদণ্ড দেয়া হলো। এছাড়া মীনা বাজার ও কুপার্স একটি করে অপরাধ করায় তাদের শুধু অর্থদণ্ড দেয়া হয়েছে। খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ গঠনের পর দৃশ্যমান কোনো কাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি। এখন থেকে কাজ শুরু করা হলো। যা অব্যাহত থাকবে।’

এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মুশতাক হাসান ইফতিখার, পরিচালক ড. মোহাম্মদ খালেদ হোসেনসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।