অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়েই তাসকিন সানি নিষিদ্ধের জবাব দেবে টাইগাররা
বিশেষ প্রতিবেদক : অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়েই তাসকিন সানি নিষিদ্ধের জবাব দেবে টাইগাররা । এমন কঠিন চ্যালেঞ্জের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে বাংলাদেশ। আজ বেঙ্গালুরুতে এমনটাই বললেন মাশরাফিরা। ‘তাসকিনের অ্যাকশনে সমস্যা নেই।’ ‘তাসকিনের অ্যাকশনে সমস্যা নেই।’ পুরো সংবাদ সম্মেলনে কথাটা মাশরাফি বিন মুর্তজা বলেছেন বারবার।
মাশরাফি আবেগী মানুষ। কিন্তু তাসকিনের ব্যাপারে জোর দিয়ে যে বলছেন, সেটা শুধু আবেগ থেকে নয়। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলছেন ১৫ বছর ধরে। সেই দেড় দশকের অভিজ্ঞতা থেকেই কথাটা বলেছেন মাশরাফি। শুধু আবেগপ্রবণ হলে আরাফাত সানির ব্যাপারেও একইভাবে জোর দিয়ে বলতেন।
দলের মানসিক অবস্থা এই মুহূর্তে ভালো নয়। সবকিছু এলোমেলো হয়ে আছে। একদম শেষ মুহূর্তে দলে যোগ দিয়েছেন দুজন নতুন খেলোয়াড়। সব মিলিয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে মাশরাফি। দলকে মানসিকভাবে চাঙা রাখাই এখন কঠিন।
তবু এই কঠিন পরিস্থিতিটাকেই প্রেরণার মন্ত্র বানাচ্ছেন মাশরাফি। বলছেন, আগামীকাল জয়ের জন্যই লড়াই করবে দল, ‘আমরা অবশ্যই মাঠে নামব জয়ের জন্য। সেটা যে-ই খেলুক না কেন। আমাদের প্রথম কাজই হবে জয়ের জন্য মাঠে নামা।’ সতীর্থদের সবাইকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়েও লড়াই করতে বললেন তিনি, ‘আমি সবার দিকেই তাকিয়ে আছি। বিশেষ করে টি-টোয়েন্টিতে দলের সবার ছোট ছোট অবদানেই ম্যাচে জেতা যায়। আমি প্রত্যেকটা খেলোয়াড়ের দিকে তাকিয়ে আছি।’
এখন পর্যন্ত এই গ্রুপে বাংলাদেশ আর অস্ট্রেলিয়াই জয় পায়নি। কালকের ম্যাচটি দুই দলের জন্যই বাঁচা–মরার। অস্ট্রেলিয়াও প্রাণপণ লড়াই করবে। এটা মাশরাফির চ্যালেঞ্জ আরও কঠিন করে তুলছে। কিন্তু মাশরাফি জানালেন, তাঁরা প্রস্তুত, ‘আমাদের গ্রুপটা অনেক বেশি কঠিন। অস্ট্রেলিয়া আছে। কাজটা এমনিতেই কঠিন ছিল, আরও কঠিন হয়ে গেছে। আমাদের অবশ্যই প্রথম চাওয়া থাকবে ম্যাচটা যেন আমরা জিততে পারি। ওভাবেই আমরা পরিকল্পনা করব।’
তাসকিন-সানিরা না থাকলেও দলের সঙ্গে থাকবেন। তাঁরা স্কোয়াডে আছেন ধরে নিয়েই খেলবে বাংলাদেশ। মাশরাফি সেটাই জানিয়ে দিলেন, ‘এখানে হয়তো কেউই ওভাবে অনুভব করতে পারবে না, আমরা কীভাবে আছি। তাসকিন বা সানির সঙ্গে আমরা শেষ সময়গুলো কীভাবে কাটিয়েছি। ওই ছেলেদের কষ্টটা আমরা অনুভব করতে পারছি।’
এই দুজনের জন্যই সতীর্থদের উজাড় করে দিতে বললেন মাশরাফি, ‘আমরা শতভাগ দিয়ে চেষ্টা করব। দুইটা ছেলে আমাদের সঙ্গে সময় কাটিয়েছে। এই দুটি ছেলেকে দেশে ফিরে যেতে হবে। হয়তোবা সানিরটা মেনে নেওয়া গেছে। আমরা মেনেও নিয়েছি।
কিন্তু তাসকিনেরটা বৈধ, এই বিশ্বাস আমাদের মধ্যে আছে। কিন্তু আমরা যেটা বিশ্বাস করি, সেটা তো বাস্তব হচ্ছে না। এখন তাকে চলে যেতে হচ্ছে। জিনিসটা এখন চাইলেও ভুলে থাকা কঠিন। এখন এই বাস্তবতা মেনে নিয়ে মাঠে নামতে হবে। এই মুহূর্তে এতটুকু বলতে পারি, আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা আমরা করব।’
‘তাসকিন-সানিকে নিষিদ্ধ
করা পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র’
ক্রিকেটার তাসকিন ও আরাফাত সানিকে আইসিসির অবৈধ ঘোষণার প্রতিবাদে মানববন্ধন করে বাংলাদেশ অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট ফোরাম। ছবি: সাজিদ হোসেনটি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ চলাকালে বাংলাদেশের তরুণ পেসার তাসকিন আহমেদ ও স্পিনার আরাফাত সানির বোলিং অ্যাকশন পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) অবৈধ ঘোষণা করেছে বলে মনে করে বাংলাদেশ অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট ফোরাম-বোয়াফ।
সংগঠনটির মতে, তাসকিন-সানির বোলিং অ্যাকশনকে পরিকল্পিতভাবে অবৈধ ঘোষণা করে ও তাঁদের নিষিদ্ধ করার মধ্য দিয়ে ষড়যন্ত্র ও ক্রিকেট নিয়ে নোংরা রাজনীতি অব্যাহত রেখেছে আইসিসি।
আজ রোববার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘তিন মোড়লের ক্রিকেট নিয়ে নোংরা রাজনীতি প্রতিহত ও আইসিসির ষড়যন্ত্র রুখে দাঁড়াতে ক্রিকেট ভক্তদের এগিয়ে আসার আহ্বান’ জানিয়ে আইসিসির বিতর্কিত সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেন বোয়াফ নেতৃবৃন্দ ও ক্রিকেট ভক্ত-সমর্থকেরা।
সংগঠনের সভাপতি কবীর চৌধুরী বলেন, ২০১৫ সালে বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে আম্পায়ারদের বিতর্কিত সিদ্ধান্তের মাধ্যমে বাংলাদেশ ক্রিকেটকে নিয়ে যে ষড়যন্ত্র শুরু করেছিল অস্ট্রেলিয়া, তাসকিন-সানির বোলিং অ্যাকশনকে পরিকল্পিতভাবে অবৈধ ঘোষণা করে নিষিদ্ধ করার মধ্য দিয়ে সেই ষড়যন্ত্র ও ক্রিকেট নিয়ে নোংরা রাজনীতি অব্যাহত রেখেছে আইসিসি। যা নিয়ে বিশ্বের কোটি কোটি ক্রিকেট-ভক্তর সঙ্গে বাংলাদেশের ১৬ কোটি ক্রিকেটপ্রেমীও মর্মাহত, লজ্জিত।
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন সংগঠনের উপদেষ্টা মোজাম্মেল হক, সহসভাপতি মিজানুর রহমান প্রমুখ।