অসভ্যতা বরিশালে-মওলানার মাথায় মল
বরিশাল প্রতিনিধি : এবার চরম অসভ্যতা’র এক ঘটনায় বরিশালের কতিপয় ব্যক্তি মওলানার মাথায় মল ঢেলে দিয়ে উল্লাস করেছে। এ ঘটনায় ২ জনকে পাকরাও করেছে পুলিশ। জানা গেছে, বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার রঙ্গশ্রী ইউনিয়নের কাঠালিয়া ইসলামিয়া দারুসসুন্নাহ দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাওলানা আবু হানিফা (৫০) এ অসভ্যতার শিকার। বর্বররা মাওলানার মাথায় মল ঢেলে অপদস্থ করে উল্লাস করার ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেয়। এরপর তা ভাইরাল হওয়ায় ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে মিনজু ও বাদল নামে ২ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রবিবার (১৩ মে) দিবাগত রাতে বাকেরগঞ্জ থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারদের মধ্যে মিনজু (৪৫) বাকেরগঞ্জ উপজেলার ১২ নং রঙ্গশ্রী ইউনিয়নের কাঠালিয়া গ্রামের মৃত মো. হাসেম মুসল্লির ছেলে এবং দায়েরকৃত মামলার এজাহারভুক্ত ৫ নম্বর আসামি। অপরদিকে বেল্লাল (২৫) বাকেরগঞ্জ পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের নূর মোহাম্মদের ছেলে। তাকে ফেসবুকে প্রকাশিত লাঞ্ছনারর ভিডিও ফুটেজ দেখে গ্রেফতার করা হয়।
জড়িত অন্যান্যদের গ্রেফতারে রাতভর বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। জানা যায়, ইসলামিয়া দারুসসুন্নাহ দাখিল মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটি নির্বাচনে এক প্রার্থীর পক্ষাবলম্বনের অভিযোগে শুক্রবার (১১ মে) ফজরের নামাজের পর মাওলানা আবু হানিফা মসজিদ থেকে বের হলে তার মাথায় মলমূত্র ঢেলে দেয় পরাজিত প্রতিদ্বন্দ্বী জাহাঙ্গীর খন্দকার ও তার সহযোগীরা। এসময় মলমূত্র ঢেলে তারা উল্লাস করে। এ ঘটনায় রবিবার আবু হানিফা বাকেরগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অপদস্থ হওয়া মাওলানা আবু হানিফা ওই এলাকার মৃত ক্বারী আরশেদ হাওলাদারের ছেলে।
অভিযুক্ত অন্যরা হলেন জাহাঙ্গীর খন্দকার, আবু হানিফার ছোট ভাই জাকির হোসেন জাকারিয়া, মো. মাসুম সরদার, মো. এনামুল হাওলাদার, মো. রেজাউল খান, সোহেল খন্দকার ও মিরাজ হোসেন। এরা সকলেই ওই এলাকার বাসিন্দা।
মাওলানা আবু হানিফা তার লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, গত ফেব্রুয়ারি মাসে কাঠালিয়া ইসলামিয় দারুসসুন্নাহ দাখিল মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির নির্বাচন সম্পন্ন হয়। আবু হানিফা সভাপতি প্রার্থী এইচ এম মজিবর রহমানের পক্ষ নেন। নির্বাচনে মজিবর রহমান বিজয়ী হলে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী জাহাঙ্গীর খন্দকার আবু হানিফার উপর ক্ষুব্ধ হন। এরপর থেকেই তাকে বিভিন্ন সময় হুমকি ধমকি দিয়ে আসছিলো জাহাঙ্গীর খন্দকার ও তার সহযোগীরা। এর জের ধরে গত শুক্রবার ফজরের নামাজের পর আবু হানিফা মসজিদ থেকে বের হলে অভিযুক্তরা তার পথরোধ করে। বাদানুবাদের এক পর্যায়ে অভিযুক্তদের একজন তার হাত ধরে এবং অপর একজন তার মাথায় মল ঢেলে দেয়। এরপর একজন সেই মল আবার মাথায় ভালো করে মাখিয়ে দেয়। এ সময় তারা উল্লাসে মেতে ওঠে। পরে এই দৃশ্য মুঠোফোনে ধারন করে ফেসবুকে ছেড়ে দেয়া হয়। এতে চারিদিকে হৈ-চৈ পড়ে যায়।
রঙ্গশ্রী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বশির উদ্দিন বলেন, সমাজের সন্মানীত পেশার একজন ব্যক্তিকে এভাবে কেউ অপমানিত করতে পারে তা ভাবতেও ঘৃনা হয়। এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তিনি।
বাকেরগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল হক জাতিরকন্ঠকে জানান, মাদ্রাসা সুপার আবু হানিফা থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এ ঘটনায় মামলা দায়েরসহ অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করার চেষ্টা চলছে।