‘অল্প বয়সী মেয়েরা আজকাল পালিয়ে বিয়ে করছে তাই…’
স্টাফ রিপোর্টার.ঢাকা: অল্প বয়সী মেয়েরা আজকাল পালিয়ে বিয়ে করছে, সে জন্যই বিয়ের বয়স কমানোর কথা ভাবা হচ্ছে—বিয়ের বয়স কমানোর পক্ষে এমন যুক্তি তুলে ধরেছেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তাঁর দাবি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর বিয়ের বয়স কমানোর জন্য মারাত্মক চাপ রয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে আয়োজিত স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি খাতে পাঁচ বছরমেয়াদি উন্নয়ন কর্মসূচির মধ্যমেয়াদি পর্যালোচনা অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ‘স্কুলগুলোয় মেয়েদের সংখ্যা অনেক বেড়েছে, এমনকি মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যেও মেয়েদের হার এখন বেশি। এ সবকিছুই গর্ব করার মতো ব্যাপার। ইদানীং বিয়ের বয়স নিয়ে কথা হচ্ছে। আপনারা পত্রপত্রিকা মারফত শুনেছেন। আসলে প্রধানমন্ত্রীর ওপর, বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলের মানুষের খুব চাপ। মেয়েরা নানা প্রয়োজনে বাইরে যাচ্ছে। তাদের মধ্যে পালিয়ে যাওয়ার প্রবণতা বাড়ছে, আকছার ঘটছে এসব ঘটনা। এটা বাস্তবতা।’
গত ২১-২৩ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লন্ডনে গার্ল সামিটে অংশ নেন। দেশে ফেরার পর সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, বাংলাদেশে মেয়েদের বিয়ের বয়স বর্তমানে যা আছে, তা কমানো উচিত। এ ক্ষেত্রে তিনি যুক্তরাজ্যের উদাহরণ টেনে বলেন, সেখানে মেয়েদের বিয়ের বয়স ১৬। বাংলাদেশে মেয়েদের বিয়ের বয়স ১৮, যা একটু বেশি হয়েছে। এরপর গত ১৫ সেপ্টেম্বর মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে ছেলেদের বিয়ের বয়স ১৮ ও মেয়েদের বিয়ের বয়স ১৬ করার পক্ষে মত দেন কেউ কেউ।
বিয়ের বয়স কমানোর এ খবর গণমাধ্যমে প্রকাশের পর বিভিন্ন পক্ষ থেকে সমালোচনা ওঠে। আর মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরাও নানা বক্তব্য দেন।
মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি বলেন, ‘দেশের আবহাওয়ায় মেয়েদের মাসিক তাড়াতাড়ি হয়। গ্রামে-গঞ্জে ১৮ বছরের মেয়েকে শিশু হিসেবে মানতে চায় না অনেকে। পড়াশোনাসহ বিভিন্ন কারণে ছেলেমেয়েদের একসঙ্গে চলাফেরা বেড়েছে। ফলে বিয়েবহিভূর্ত সম্পর্কের মধ্যে সন্তানের জন্ম হলে তার বৈধতা দেওয়াও কঠিন।’
তবে আজ স্বাস্থ্যসচিব এম এম নিয়াজউদ্দিন বলেন, কম বয়সে বিয়ের কারণে মাতৃমৃত্যুর ঘটনা ঘটছে, নারীরা নানা রোগে ভুগছেন। কাজেই এ বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উচিত নারীর স্বাস্থ্যগত দিক বিবেচনায় নিয়ে একটা প্রস্তাব দেওয়া।