অবশেষে মি.এলাহী কহিলেন-
বিশেষ প্রতিনিধি : বিদ্যুতের মূল্য ৩৫ পয়সা বৃদ্ধি নিয়ে অবশেষে মুখ খুলেছেন প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী। তবে তিনি এবার যা বললেন-তাতে দেশবাসী একদিকে বিস্মিত অন্যদিকে হতবাক। কারণ, তিনি বলেছেন, ”নিজস্ব বিবেচনায় বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি করেছে বাংলাদেশ অ্যানার্জি রেগুলেটরি কমিশন(বিইআরসি), এর সঙ্গে সরকারের কোনো সম্পর্ক নেই”।
এটা কি সঠিক বললেন মি. এলাহী ? এখানে বলা বাহুল্য বিইআরসি কি সরকারের নিয়োগের বাইরের কোন সংস্থা? সরকার’ই তাদের নিয়োগ দিয়েছে। কাজেই ওদের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে পার পেতে পারেন না মি. জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী।
কারণ, যে পদ্ধতি গ্রহণ করলে বিদ্যুতের দাম বাড়বে না বা কাদের কাছ থেকে বিদ্যুত কিনলে সরকারের ভর্তুকি কমবে কিংবা আরো কি কি পদ্ধতি গ্রহণ করলে বিদ্যুতের দাম সহনীয় থাকবে সেটা নিয়ে কোন সময় মি. এলাহীকে তৎপর থাকতে দেখা যায়নি।
মি এলাহী জানেন মহাজোট সরকারের সামনে নির্বাচন। বিরোধী শিবিরসহ সরকার বিরোধী নানা চক্র নানামুখি তৎপরতায় সরকারকে বিপাকে ফেলতে চেষ্ঠা করছে। এসময় তিনি বিদ্যুতের দাম বাড়ালেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলেছেন, এই দামটাতো একবছর পরও বাড়ানো যেত। সামান্য ৩৫ পয়সা কি না বাড়ালেই নয়??
প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী ইতিপূর্বে’ও সরকারকে বিপাকে ফেলার চেষ্ঠা করেছিলেন। তার বেফাঁস মন্তব্যে সরকার বিব্রত হয়েছিল। এটা তিনি ভুলে গেলেও দেশবাসী কিন্তু ভুলেননি। তেমনি এবার আসন্ন হাইভোল্টেজ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সরকারকে সমালোচনায় ফেলতে শেখ হাসিনার জনদরদী ইমেজ ক্ষুন্ন করতে তিনি বিদ্যুতের দাম ৩৫ পয়সা বাড়িয়েছেন।
অথচ তিনিই বলেছেন, ” বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি করা হলেও সরকারকে চার হাজার কোটি টাকার মতো ভর্তুকি দেয়া লাগবে। সরকার এটাকে ভর্তুকি বলে না, এটাকে বলা হয় মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে একটা বিনিয়োগ”। এখন প্রশ্ন এটা যদি সরকারের বিনিয়োগ হয়ে থাকে তাহলে এই মূল্যবৃদ্ধি আগামি নির্বাচনের পর কার্যকর করলে ক্ষতি কি??
যাহোক- শুক্রবার সকালে বিদ্যুৎ ভবনে সেক্টর লিডারদের দুইদিনব্যাপী কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেছেন, ” নিজস্ব বিবেচনায় বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি করেছে বাংলাদেশ অ্যানার্জি রেগুলেটরি কমিশন(বিইআরসি), এর সঙ্গে সরকারের কোনো সম্পর্ক নেই”।
তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী বলেন, বিদ্যুতের যে দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে, আমি মনে করি এটি খুবই সামান্য এবং মামুলি ব্যাপার; জনজীবনে এর প্রভাব পড়বে বলে মনে করি না। তিনি বলেন, বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি করা হলেও সরকারকে চার হাজার কোটি টাকার মতো ভর্তুকি দেয়া লাগবে। সরকার এটাকে ভর্তুকি বলে না, এটাকে বলা হয় মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে একটা বিনিয়োগ।
একই অনুষ্ঠান শেষে জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু বলেন, ২০০ ইউনিট পর্যন্ত ব্যবহারকারীদের এখন থেকে মাসে অতিরিক্ত ২০ থেকে ২৫ টাকা বিল দিতে হবে। এখন বিদ্যুতের যে দাম বৃদ্ধি হয়েছে তা গড়ে ৫ শতাংশের বেশি হবে না। তিনি আরো বলেন, এটি খুব বেশি কিছু নয়।
তবু হয়ত কিছুটা অ্যাফেক্ট পড়বে গ্রাহক পর্যায়ে। আমি মনে করি এটি সহনীয়। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম গড়ে ৩৫ পয়সা বা ৫ দশমিক ৩ শতাংশ বৃদ্ধি করার সিদ্ধান্তের কথা জানায় বিইআরসি, যা আগামী ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হবে।