• শনিবার , ১৬ নভেম্বর ২০২৪

অবশেষে খলনায়ক এসপি বাবুলকে অব্যাহতি-নানা গুঞ্জন


প্রকাশিত: ৮:২৩ পিএম, ৬ সেপ্টেম্বর ১৬ , মঙ্গলবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ২৫৬ বার

বিশেষ প্রতিনিধি  :  অবশেষে পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তারের পদত্যাগপত্র কার্যকর করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। 1পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে তাকে পুলিশ বিভাগ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের পুলিশ শাখার উপ-সচিব ইলিয়াস হোসেন মহামান্য রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে তার এ অব্যাহতিপত্রে স্বাক্ষর করেন।

উল্লেখ্য, গত ৫ জুন ভোরে চট্টগ্রামের জিইসি মোড়ে এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা আক্তার মিতুকে গুলি ও ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয়। ঐ সময় বাবুল আক্তার পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতি নিয়ে ঢাকায় পুলিশ সদর দফতরে যোগ দেন। ঘটনার ১৯ দিন পর রহস্যজনকভাবে বাবুল আক্তরকে খিলগাঁওয়ের ভূইয়া বাড়ির শ্বশুর বাড়ি থেকে বাবুলকে পুলিশ আটক করে।
2
১৫ ঘণ্টা পর তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। এসপি বাবুল আক্তারকে পুলিশের আটক করা নিয়ে অভিযোগ ওঠে যে স্ত্রী মিতু হত্যার পেছনে তার হাত থাকতে পারে। ঐ ঘটনায় পুলিশ চট্টগ্রামে বাবুল আক্তারের দুই সোর্স আনোয়ার ও ওয়াসিমকে গ্রেফতার করে। বাবুল আক্তারের প্রধান সোর্স মুছা এখনও নিখোঁজ রয়েছেন। ৫ জুলাই চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় বাবুল আক্তারের দুই সোর্স নবী ও রাশেদ পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়।

২৫ জুন ঢাকার ডিবি কার্যালয় থেকে বাবুল আক্তার ছাড়া পেয়ে খিলগাঁওয়ে তার শ্বশুরবাড়িতে আশ্রয় নেন। তার দুই সন্তান আখতার মাহমুদ মাহির ও তাবাসুম তাসনিম টাপুরকে তিনি দেখাশুনা করছেন।

সূত্র জানায়, বাবুল আক্তার গত ৪ আগস্ট কাজে যোগ দেয়ার ইচ্ছা পোষণ করে পুলিশ সদর দফতরের ডিআইজি (প্রশাসন) অফিসে একটি আবেদনপত্র দেন। অপরদিকে, চাকরিতে অব্যাহতির আবেদন পত্র প্রতাহার চেয়ে ৯ আগষ্ট তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের সিনিয়র সচিব বরাবর একটি আবেদনপত্র দেন।
3
পুলিশ সদর দফতরের ডিআইজি (প্রশাসন) বরাবর লেখা আবেদনপত্রে তিনি লেখেন, ‘গত ৫ জুন আমার স্ত্রী আততায়ীর হাতে নিহত হন। ঐ ঘটনার সময় এবং পরবর্তীতে সরকার এবং আমার সহকর্মীদের কাছ  থেকে যে সহযোগিতা ও সহমর্মিতা পেয়েছি, তার জন্য আমি কৃতজ্ঞ।

ঘটনার আকস্মিকতায় বিপর্যস্ত আমি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনাক্রমে আমার শ্বশুরের বাড়িতে অবস্থান করি। সর্বোপরি, আমার দুটি ছোট ছোট বাচ্চা তাদের মাকে হারিয়ে এতটাই অস্বাভাবিক হয়ে যায়  যে, তাদের সঙ্গ দেয়া ছাড়াও একাধিকবার চিকিত্সকের শরণাপন্ন হতে হয়।

এই কঠিন সময়ের প্রতিটি পর্যায়ে আমি আমার শারীরিক ও মানসিক অবস্থা আমার উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করেছি। তারা উদারতার সঙ্গে আমাকে মৌখিকভাবে মা হারা দুটি বাচ্চার সাথে সময় কাটানোর এবং আমাকে মানসিক বিপর্যস্ততা থেকে উত্তরণের জন্য অকুণ্ঠ সহযোগিতা দিয়েছেন।

একজন সৎ অফিসার হিসাবে আমার এবং আমার সন্তানদের জন্য বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন আমার চাকরি। এমতাবস্থায়, আমি অদ্য ০৪/০৮/২০১৬ ইং তারিখ পূর্বাহ্ন হতে আমাকে অাগের দায়িত্বে পুনর্বহাল করতে চাই। এবং এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণে জনাবের মর্জি হয়।’

অন্যদিকে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ে দেয়া চাকরি হতে অব্যাহতির আবেদন প্রত্যাহারে তিনি বলেন,‘—- সেই সময় বিগত ২৪/০৬/২০১৬ ইং তারিখে পরিস্থিতির শিকার হয়ে অনিচ্ছাকৃতভাবে বাধ্য হয়ে আমাকে চাকরির অব্যাহতিপত্রে স্বাক্ষর করতে হয়।

স্ত্রীর মৃত্যুশোক, সদ্য মাহারা দুটি শিশুর ব্যাকুলতার প্রতিকূল ও বিপর্যস্ত মানসিক অবস্থায় অনিচ্ছাকৃতভাবে আমি চাকরি হতে অব্যাহতির আবেদনপত্রে স্বাক্ষর করি। একজন সৎ পুলিশ অফিসার হিসেবে এবং আমার সন্তানদের বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন এই চাকরি। এমতাবস্থায়, উক্ত অব্যাহতিপত্রটি প্রত্যাহারের আবেদন জানাচ্ছি, যা আমি স্বেচ্ছায় দাখিল করিনি।’