• বুধবার , ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪

অতি গরিব বরিশালে-পরিসংখ্যান বিভাগের এইচআইইএস জরিপ-


প্রকাশিত: ১১:৫২ পিএম, ২৭ ডিসেম্বর ২৩ , বুধবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ১০৮ বার

স্টাফ রিপোর্টার : দেশে সর্বোচ্চ দারিদ্র্যের হার বরিশাল বিভাগে। ২০২২ সালে বরিশাল বিভাগে উচ্চ দারিদ্র্য রেখা অনুযায়ী দারিদ্র্য হার ২৬ দশমিক ৯ শতাংশে পৌঁছেছে। এছাড়া দেশে সর্বনিন্ম দারিদ্র্যের হার খুলনা বিভাগে। এই বিভাগে দারিদ্র্যের হার ১৪ দশমিক ৮ শতাংশ।বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পরিসংখ্যান ভবনের অডিটোরিয়ামে হাউজহোল্ড ইনকাম অ্যান্ড এক্সপেনডিচার সার্ভে (এইচআইইএস) ২০২২-এর চূড়ান্ত প্রতিবেদনে প্রকাশ করা হয়। প্রকাশিত প্রতিবেদনে এমন চিত্র উঠে এসেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, উচ্চ ও নিম্ন উভয় দারিদ্র্য রেখার মাধ্যমে প্রাপ্ত হিসাব অনুযায়ী ২০২২ সালে বরিশাল বিভাগে দারিদ্র্যের হার বিভাগগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ। যা উচ্চ দারিদ্র্য রেখা অনুযায়ী ২৬.৯ শতাংশ এবং নিম্ন দারিদ্র্য রেখা অনুযায়ী ১১.৮ শতাংশ।

বিবিএস জানিয়েছে, ২০২২ সালে অতি দারিদ্র্যের হার কমেছে। নিম্ন দারিদ্র্য রেখা ব্যবহার করে ২০২২ সালে অতি দারিদ্র্য হার জাতীয় পর্যায়ে ৫.৬ শতাংশ, পল্লি এলাকায় ৬.৫ শতাংশ এবং শহরাঞ্চলে ৩.৮ শতাংশ। যেখানে, ২০১৬ সালে নিম্ন দারিদ্র্য রেখা ব্যবহার করে অতি দারিদ্র্য হার ছিল জাতীয় পর্যায়ে ১২.৯ শতাংশ, পল্লি এলাকায় ১৪.৯ শতাংশ ও শহরাঞ্চলে ৭.৬ শতাংশ। ব্যাক-ক্যালকুলেশন পদ্ধতি ব্যবহার করে HIES ২০১৬ এর অতি দারিদ্র্য হার ছিল ৯.৩ শতাংশ (নিম্ন দারিদ্র্য রেখা)। সুতরাং দেখা যায়, বাংলাদেশে ২০১৬ থেকে ২০২২ সালে অতি দারিদ্র্যের হার (৩.৭ শতাংশীয় পয়েন্ট, হ্রাসের গতি ৩৯.৭৮ শতাংশ) ব্যাপকভাবে কমেছে।

বিবিএস বলছে, গত ছয় বছরে ঢাকা, খুলনা ও সিলেট বিভাগে দারিদ্র্যের হার বেড়েছে। এখন ঢাকায় দারিদ্র্যের হার ১৭ দশমিক ৯ শতাংশ, চট্টগ্রামে ১৫ দশমিক ৮ শতাংশ, রাজশাহীতে ১৬ দশমিক ৭ শতাংশ, সিলেটে ১৭ দশমিক ৪ শতাংশ, রংপুরে ২৪ দশমিক ৮ শতাংশ আর ময়মনসিংহে ২৪ দশমিক ২ শতাংশ।অন্যদিকে ঢাকায় নিম্ন দারিদ্র্য রেখা অনুযায়ী অতি দারিদ্র্যের হার ২.৮ শতাশ।

এছাড়া দেশে এখন সার্বিক দারিদ্র্যের হার ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ। ছয় বছর আগে অর্থাৎ ২০১৬ সালে দারিদ্র্যের হার ছিল ২৪ দশমিক ৩ শতাংশ। অন্যদিকে অতি দারিদ্র্যের হার ৫ দশমিক ৬ শতাংশ; যা ছয় বছর আগে ছিল ১২ দশমিক ৯ শতাংশ।

বিবিএস মহাপরিচালক মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন ত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও ব্রাকের চেয়ারম্যান, অর্থনীতিবিদ হোসেন জিল্লুর রহমান। প্রধান হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান উপস্থিত হতে পারেননি। তবে তিনি ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হন।

অর্থনীতিবিদ হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি বেশি খুলনা জেলায়। সেখানে দারিদ্র্যের হার বেশি হারে বাড়ার কথা। কিন্তু পাশের বিভাগে দারিদ্র্য সবচেয়ে বেশি। তিনি বলেন, দারিদ্র্য কমানোর প্রক্রিয়ায় দারিদ্র্যসীমার কিছুটা ওপরে থাকা জনগোষ্ঠীর সুরক্ষা বেশি জরুরি। কারণ, হঠাৎ যেকোনো ধরনের আঘাতে তারা দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে যেতে পারেন। তাদের সুরক্ষা দিতে পারলে দারিদ্র্য বিমোচন টেকসই হবে।

পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের যুগ্ম সচিব দীপংকর রায় বলেন, হয়তো মঙ্গার অভিবাসন হয়েছে। নদীর অববাহিকা ধরে তা বরিশালের দিকে গেছে। বরিশাল শস্যভান্ডার হিসেবে পরিচিত, সেখানে কেন দারিদ্র্য বাড়ল, তা নীতিনির্ধারকেরা ভেবে দেখতে পারে। দীপংকর রায় আরও বলেন, বরিশালে সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি সবচেয়ে বেশি। সেখানে দারিদ্র্য কমার কথা। আবার কেউ বলতে পারেন, দারিদ্র্যের হার বেশি বলেই সেখানে সামাজিক নিরাপত্তা বেশি। এটি আপেক্ষিক বিষয়।

অনুষ্ঠানে জরিপের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন বিবিএসের উপপরিচালক এবং খানার আয় ও ব্যয় জরিপ প্রকল্পের পরিচালক মহিউদ্দিন আহমেদ। বক্তব্য দেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব শাহনাজ আরেফিন, পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য কাউসার আহাম্মদ প্রমুখ।