• মঙ্গলবার , ২৬ নভেম্বর ২০২৪

অগ্রণী ব্যাংকের চার কুচক্রী মেরে দিয়েছে ১৫৬ কোটি টাকা


প্রকাশিত: ১১:০৯ এএম, ২৯ জুন ১৬ , বুধবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৯২ বার

 

সাইফুল বারী মাসুম : অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেডের ডিএমডি মিজানুর রহমান খানসহ চার কর্মকর্তার 1বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ১৫৬ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ অনুসন্ধানে হলমার্ক ফ্যাশন লিমিটেডসহ ১০ প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে (এমডি) জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

মঙ্গলবার দুদকের উপপরিচালক বেনজীর আহম্মদ স্বাক্ষরিত নোটিশ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোতে পাঠানো হয়েছে বলে সংস্থার জনসংযোগ বিভাগ জানিয়েছে। তাদের ১১ জুলাই দুদকে হাজির থাকতে বলা হয়েছে।

যেসব প্রতিষ্ঠানের এমডিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হয়েছে সেগুলো হলো- মাহিন টেক্সটাইলস লিমিটেড, পিনাকল টেক্সটাইল (প্রাইভেট) লিমিটেড, নকশি নিট কম্পোজিট লিমিটেড, হলমার্ক ফ্যাশন লিমিটেড, ইউএসএ ট্রেড ফ্যাশন লিমিটেড, ডন অ্যাপারেলস লিমিটেড, বিটিএল (বেস্ট ট্রেড লিঙ্ক), প্যারাগন নিট কম্পোজিট লিমিটেড, ইসলাম ফ্যাশন লিমিটেড ও ফারহান ফ্যাশন লিমিটেড।

দুদক সূত্র জানায়, অগ্রণী ব্যাংকের প্রধান শাখায় বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশেষ পরিদর্শনে ১৫৬ কোটি টাকার ঋণ জালিয়াতির তথ্য উঠে আসে। মাহতাবের মালিকানাধীন তিন প্রতিষ্ঠান বিটিএল, মাহিন টেক্সটাইল ও পিনাকল টেক্সটাইল ভুয়া কাগজপত্র ও বিলের বিপরীতে হলমার্ক গ্রুপ, প্যারাগন, নকশি ও অন্য কিছু প্রতিষ্ঠানের কাছে সুতা বিক্রি করেছে বলে উল্লেখ করে। এ ক্ষেত্রে পণ্যের উৎপাদন, লেনদেন ও সরবরাহের কিছুই না হলেও সোনালী ব্যাংককে ওই টাকা পরিশোধ করতে হয়েছে। অগ্রণী ব্যাংকের প্রধান শাখার কর্মকর্তাদের যোগসাজশে ওই সব ভুয়া বিল বিক্রি করা হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ওই পরিদর্শন প্রতিবেদনে বলা হয়, অগ্রণী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় থেকে ইস্যু করা বৈদেশিক বিনিময় বাণিজ্য ঋণের অর্পিত ক্ষমতা অনুযায়ী মহাব্যবস্থাপক পদমর্যাদার এক কর্মকর্তাকে রপ্তানি ঋণপত্রের বিপরীতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে ব্যাংকের অর্থায়ন না থাকলে সর্বোচ্চ পাঁচ কোটি টাকা পর্যন্ত মূল্যের স্থানীয় বিল ক্রয়ের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ক্ষমতার অপব্যবহার করে শাখা কর্মকর্তারা প্রতিষ্ঠান তিনটির ব্যাংক হিসাবে প্রায় ১৫৬ কোটি টাকা প্রদান করে। এ ক্ষেত্রে স্থানীয় বিল কিনে শাখার ঋণ পোর্টফোলিওকে ঝুঁকিপূর্ণ করা হয়।

সূত্র আরও জানায়, ঋণ কেলেঙ্কারি মধ্যে হলমার্ক গ্রুপ, প্যারাগন, নকশি ও অন্য কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের পণ্য সরবরাহের বিপরীতে সোনালী ব্যাংকের হোটেল শেরাটন শাখার এলসি ও স্বীকৃতিতে শাখা নির্ধারিত তিনটি প্রতিষ্ঠানের হিসাবে মোট ১০৮ কোটি টাকা মূল্যের ১০৫টি স্থানীয় বিল কেনা হয়। যার মধ্যে ৪২ কোটি টাকা মূল্যের ৪৫টি বিল মেয়াদোত্তীর্ণ অর্থাৎ খেলাপি হয়ে যায়। প্রতিষ্ঠান তিনটির হিসাবে মেয়াদোত্তীর্ণ বিল থাকা সত্ত্বেও বারবার তাদের বিল কিনে দায় বৃদ্ধির সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

ওই তিন প্রতিষ্ঠানের দেওয়া ঠিকানা অনুযায়ী সরেজমিন পরিদর্শনে গিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতিনিধিদলটি দুটি প্রতিষ্ঠানেরই কোনো অস্তিত্ব খুঁজে পায়নি। ওই কেলেঙ্কারির ঘটনায় জড়িত অগ্রণী ব্যাংকের প্রধান শাখার তৎকালীন মহাব্যবস্থাপক (বর্তমান ডিএমডি) মিজানুর রহমান খান, উপব্যবস্থাপক জহরলাল রায়, সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো. আবদুল আজিজ দেওয়ান ও এসপিও হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থার সুপারিশ করা হয়েছিল। তবে অদৃশ্য কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।