• বৃহস্পতিবার , ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪

৫০ কোটি লিটার পানির অপচয় হয় ঢাকায়


প্রকাশিত: ১০:২১ পিএম, ১৭ জুলাই ২২ , রোববার

নিউজটি পড়া হয়েছে ১৩৪ বার

বিশেষ প্রতিনিধি : রাজধানীর বাসিন্দাদের পানি অপচয়ের হিসাব দিয়ে তাকসিম এ খান বলেছেন, এই অপচর না হলে ঢাকা ওয়াসা আরও কম দামে পানি সরবরাহ করতে পারত।রোববার সোনারগাঁও হোটেলে ঢাকা ওয়াসার ‘এলাকাভিত্তিক পানির মূল্য নির্ধারণ বিষয়ক টেকনিক্যাল স্টাডির (কারিগরি গবেষণা) ফলাফল’ অনুষ্ঠা‌নে তিনি অপচয়ের হিসাব দেন।তাকসিম বলেন, ঢাকা শহরে প্রতিদিন ২১০ কোটি থেকে ২৫০ কোটি লিটার পানি ব্যবহার হয়। আপনারা জেনে আশ্চর্য হবেন যে এর মধ্যে ৫০ কোটি লিটার পানিই অপচয় হয়।এই পানি অপচয় না হলে বিল আরও কম আসত। এই ৫০ কোটি লিটার পানি দিয়ে আরও ১০ লাখ থেকে ৩০ লাখ লোককে পানি দিতে পারতাম।রাজধানীর বাসিন্দাদের পানি সরবরাহকারী সংস্থা ঢাকা ওয়াসার তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে প্রতি ১ হাজার লিটার পানি উৎপাদনে ব্যয় হয় ২৫ থেকে ২৬ টাকা। আবাসিক গ্রাহকদের কাছে ১ হাজার লিটার পানি ১৫ টাকা ১৮ পয়সায়, আর বাণিজ্যিক গ্রাহকদের কাছে ৪২ টাকায় বিক্রি করা হয়।

এখন গ্রাহকের সামর্থ্য অনুযায়ী এলাকাভিত্তিক পানির মূল্য আলাদা করতে চাইছে ঢাকা ওয়াসা। এজন্যই গবেষণা চালানো হয়, যার ফল এদিন প্রকাশ করা হল।অনুষ্ঠানে বক্তব্যে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম অভিজাত এলাকায় বসবাসরত মানুষকে যে মূল্যে পানি দেওয়া হয়, বস্তিবাসী বা নিম্নবিত্তদের তার থেকে কম মূ্ল্য পানি সরবরাহের পক্ষে মত দেন।
তিনি বলেন, গরিব মানুষের কাছ থেকে রাজস্ব নিয়ে ধনীদের কম দামে পানি দেওয়ার সুযোগ নেই। এজন্য জোনভিত্তিক পানির মূল্য নির্ধারণ করতে হবে। আর শুধু পানি নয় গ্যাস, বিদ্যুৎ ও হোল্ডিং ট্যাক্সসহ অন্যান্য ইউটিলিটিক্যাল সার্ভিসের মূল্য নির্ধারণ হওয়া উচিৎ।

প্রকৌশলী তাকসিম বলেন, আমরা এই আলোচনা বেশ আগে থেকে শুরু করেছিলাম। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন যায়গায় মাননীয় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেছেন, গুলশানের অভিজাতরা যে টাকা দিবেন পানির জন্য, যাত্রাবাড়ীর কম আয়ের নাগরিকেরা কম টাকায় থেকে পানির জন্য একই টাকা দিবে সেটি বৈষম্যমূলক। কাজেই এর জন্য আমরা উদ্যোগ নিই।

অনুষ্ঠানে ওয়াসার চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা বলেন, ঢাকা ওয়াসা বাণিজ্যিকভাবে চলবে। বর্তমানে উৎপাদন খরচের চেয়ে বিক্রয় মূল্য কম। এ মূল্য বাড়াতে হবে। ঢাকা ওয়াসাকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে ভর্তুকি বাদ দিয়ে দাম সমন্বয় করতে হবে।ঢাকা ওয়াসার এমডির প্রশংসা করে চেয়ারম্যান বলেন, তাকসিম এ খান ২০০৯ সালে প্রথম নিয়োগ পেয়েছেন। তারপর তার উদ্যোগেই ‘ঘুরে দাঁড়াও ঢাকা ওয়াসা’ কর্মসূচি নেওয়া হয়। ঢাকা ওয়াসাকে ডিজিটাল ওয়াসা করা হয়েছে যেন মিটার রিডাররা উল্টাপাল্টা বিল করতে না পারে।

মন্ত্রী তাজুল ওয়াসার পানির দাম ‘যৌক্তিকভাবে’ বাড়ানোর পক্ষে মত দিয়ে বলেন, “আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর চট্টগ্রাম ছাড়াও ঢাকার আশপাশসহ খুলনা ও রাজশাহীতে ওয়াসার সেবা চালু হচ্ছে। তবে এই সক্ষমতা বাড়াতে গিয়ে দেশের টাকা ছাড়াও বিদেশ থেকে ঋণ নিতে হয়েছে। এ ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে ২০২৪ সাল থেকে ঋণের সকল টাকা পরিশোধ করতে হবে। তাই বর্তমানে ওয়াসার পানির মূল্য বাড়ানো যৌক্তিক।আমরা ছোটবেলা থেকে বলে আসছি, দশের লাঠি একের বোঝা। তাই আমরা গ্রাহকরা যদি ৫০/১০০ টাকা দিই, দেশ পাঁচ লক্ষ কোটি টাকা ভর্তুকি থেকে মুক্ত হল।সেবার মূল্যমান না বাড়লে মানসম্মত সেবা নিশ্চিত করা যায় না বলেও মন্তব্য করেন তাজুল।