• বৃহস্পতিবার , ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪

রাজনীতি ব্যবসা’য় ধরা হেলেনা জাহাঙ্গীরের বাসায় র‌্যাবের হানা


প্রকাশিত: ১০:৫৪ পিএম, ২৯ জুলাই ২১ , বৃহস্পতিবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ২১৬ বার

বিশেষ প্রতিনিধি/গুলশান প্রতিনিধি : চাকুরীজীবী লীগ নামে রাজনীতি ব্যবসা করতে গিয়ে ধরা খেলেন হেলেনা জাহাঙ্গীর। নানা অভিযোগের ভিত্তিতে এই ব্যবসায়ী বিতর্কিত হয়ে পড়েন। আওয়ামী লীগের পদ খোয়ানো এই ব্যবসায়ী হেলেনা জাহাঙ্গীরের বাসায় এবার অভিযান চালাচ্ছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) সন্ধ্যায় হেলেনা জাহাঙ্গীরের গুলশানের বাসায় অভিযান শুরু করে র‌্যাব। জাতিরকন্ঠ কে এ তথ্য জানিয়েছেন অভিযান পরিচালনাকারীরা।

সরেজমিন বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) রাতে হেলেনার গুলশানের বাড়ি নিচে গিয়ে র‍্যাব-১ এর একটি গাড়ি এবং র‍্যাবের একটি হাইএস ব্র্যান্ডের গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকতে দেয়া যায়। রাত সাড়ে ৮টার দিকে র‍্যাব সদস্যরা বাড়িটিতে প্রবেশ করে। পরে পৌনে ১০টার দিকে র‍্যাবের তিনজন নারী সদস্যরা ওই বাসায় প্রবেশ করেন। হেলেনা যে বাসাটিতে থাকেন সেটির মূল ফটক বন্ধ করে দিয়েছে র‍্যাব। কাউকে ভেতরে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। কথা বলতে রাজী হননি বাসার দারোয়ানও। বাইরে থেকে ভবনের নিচতলায় র‍্যাবের সাদা পোশাকের সদস্যদেরও দেখা গেছে।

জানা গেছে, ২৫ জুলাই (রোববার) আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক কেন্দ্রীয় উপকমিটির সদস্যপদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় তাকে। আইপি টিভি নামধারী জয়যাত্রা টেলিভিশনের প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও এই ব্যবসায়ী এবছর ১৭ জানুয়ারি উপকমিটির সদস্য হয়েছিলেন। তার আগে ২০২০ সালের ডিসেম্বরের দিকে তিনি কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হন।সম্প্রতি চাকরিজীবী লীগ নামে একটি সংগঠনের সঙ্গে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নাম যুক্ত করে নতুন সহযোগী সংগঠন গঠনের ঘোষণা দিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েন ব্যবসায়ী হেলেনা জাহাঙ্গীর। এ ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ব্যাপক সমালোচিত হন তিনি।

তার এমন কর্মকাণ্ডে বিব্রত হন খোদ আওয়ামী লীগেরই শীর্ষস্থানীয় নেতারা। এরই সূত্র ধরে শনিবার (২৪ জুলাই) হেলেনা জাহাঙ্গীরের সদস্য পদ আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক উপকমিটি থেকে বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মেহের আফরোজ চুমকি বলেন, একটা উপকমিটিতে থাকলে কাজ করার জন্য সবার সঙ্গে আলোচনা করতে হয়। তার কর্মকাণ্ডে উপকমিটি বিব্রত। তাই তাকে সদস্য পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে।

কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ছিলেন হেলেনা জাহাঙ্গীর।‌ কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ম. রুহুল আমিন বলেন, বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার জন্য গত মাসেই তাকে কারণ দর্শানোর চিঠি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ওই চিঠির জবাব দেননি তিনি। এজন্য নির্দিষ্ট সময় পর এটা স্বাভাবিকভাবেই অব্যাহতি হয়ে গেছে। কাজেই বলা যায়, বর্তমানে তিনি ওই কমিটিতে আর নেই।

ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে হেলানা জাহাঙ্গীর নিজেকে চাকরিজীবী লীগের সভাপতি দাবি করেন এবং সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মাহবুব মনিরের নাম উল্লেখ করেন। এমন ঘটনায় ফেসবুকজুড়ে সাধারণ মানুষের ভেতরে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।ফেসবুক ব্যবহারকারী তানজির আহমেদ সিহাব পোস্টে কমেন্ট করেন, আওয়ামী লীগের মতো একটা পুরোনো ঐতিহ্যবাহী দলকে নিয়ে আপনারা যা শুরু করেছেন এটা হাস্যকর। এখন যারা নব্য আওয়ামী লীগার তারা কখনো বুঝবে না, আওয়ামী লীগ যখন বিরোধী দল ছিল সেই সময় কত ত্যাগ ছিল আমাদের।

আরেকজন ফেসবুক ব্যবহারকারী আসিফুর রহমান বলেন, লোক হাসাচ্ছেন, আওয়ামী লীগকে ডোবাচ্ছেন। আজকে আওয়ামী লীগের খারাপ কিছু হলে এসব ভুঁইফোড় সংগঠনের কাউকে খুঁজে পাওয়া যাবে না।এদিকে হেলেনা জাহাঙ্গীরকেও কমেন্টে প্রায়ই মারমুখী হতে দেখা যায়। তবে হেলেনা জাহাঙ্গীরের অকস্মাৎ এমন ঘোষণায় মূল সংগঠনের নেতাকর্মীরা যে বিব্রত এটি তাদের উদ্ধৃতি থেকেই বোঝা যায়।