• বৃহস্পতিবার , ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪

ব্যাংকিং খাতে ৩০ হাজার কোটি টাকা চুরি


প্রকাশিত: ৪:০১ পিএম, ২১ এপ্রিল ১৬ , বৃহস্পতিবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ১৩৯ বার

বিশেষ প্রতিবেদক  :  ব্যাংকিং খাতে গত ৭ বছরে ৬টি বড় ধরনের আর্থিক কেলেঙ্কারিতে ৩০ হাজার 1কোটি টাকার বেশি চুরি আত্মসাৎ হয়েছে বলে জানিয়েছে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)।
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীতে জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ‘ব্যাংকিং খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এ কথা জানায় সুজন। এতে দেশের ব্যাংকিং খাতে নানা অনিয়মের চিত্র তুলে ধরেন অগ্রণী ব্যাংকের ফিনএক্সেল ও সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ আবু নাসের বখতিয়ার আহমেদ।

সুজনের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, গত দেড় দশকে ব্যাংকিং খাতে ৯টি বড় ধরণের আর্থিক কেলেঙ্কারি হয়েছে। এর মধ্যে গত ৭ বছরের মধ্যেই ঘটেছে ৬টি বড় আর্থিক কেলেঙ্কারির ঘটনা। এই ৬টিতেই ৩০ হাজার কোটি টাকার বেশি চুরি বা আত্মসাৎ করা হয়েছে।

ব্যাংকিং খাতের সমস্যাগুলো তুলে ধরে এতে বলা হয়, বিনিয়োগ না বাড়ায় ব্যাংকগুলোতে প্রায় দেড় লাখ কোটি টাকা উদ্বৃত্ত পড়ে আছে। ব্যংকগুলো ঋণ দিয়ে তা আদায় করতে না পারায় সংকট তৈরি হচ্ছে; রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোতে বিপুল অঙ্কের খেলাপী ও মন্দ ঋণ রয়েছে; ব্যাংকগুলোর আইটি সেক্টর সুরক্ষিত না; আমানত সংগ্রহে অসম প্রতিযোগিতা; সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে পরিচালকদের অযাচিত হস্তক্ষেপ; বাংলাদেশ ব্যাংকসহ রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোতে সিবিএ নেতাদের দৌরাত্ম রয়েছে।

সৈয়দ আবু নাসের বখতিয়ার আহমেদ বলেন, ব্যাংকি খাতে নানা অনিয়ম, দুর্নীতি ও লুটপাটের ঘটনায় জনমনে আস্থাহীনতা ও উৎকণ্ঠা তৈরি হয়েছে। পুঁজিবাজার, হলমার্ক, বিসমিল্লাহ গ্রুপ, বেসিক ব্যাংক ও ডেসটিনি কেলেঙ্কারির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে প্রায় ৮০০ কোটি টাকা চুরির ঘটনা। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা উত্তরণে এবং ব্যাংকিং খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় এ খাতের বিদ্যমান সমস্যাগুলো চিহ্নিত করতে হবে।

অনিয়ম-দুর্নীতি রোধে ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় করণীয় সম্পর্কে সুজনের প্রতিবেদনে বলা হয়, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংস্কার ও স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত করা; বেসরকারি ব্যাংকে সুশাসন প্রতিষ্ঠা; কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া এবং অপরাধীদের শাস্তি দেওয়া; আর্থিক স্বচ্ছতার জন্য অভ্যন্তরীণ অডিট; ব্যাংকিং খাতকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখা; পরিচালক নিয়োগে সার্চ কমিটি গঠন; তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনগুলো বাস্তবায়ন; খেলাপী ঋণ রোধে ট্রাইব্যুনাল গঠন; ট্রেড ইউনিয়নের দৌরাত্ম বন্ধ; সৎ- নিষ্ঠাবান কর্মকর্তাদের উৎসাহিত করা এবং সচেতনতা বৃদ্ধি করা জরুরি।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা হাফিজ উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে গোলটেবিল বৈঠকে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমদ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা মির্জা আজিজুল ইসলাম, পুঁজিবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক আবু আহমেদ, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, সুজনের সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার প্রমুখ।