• বৃহস্পতিবার , ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪

বঙ্গবন্ধুর ছবি বিকৃতি-ডিজাইনারের দায় স্বীকার লতিফের উপস্থিতিতে


প্রকাশিত: ৮:৩৪ পিএম, ৭ ফেব্রুয়ারি ১৬ , রোববার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৯৫ বার

mp latif-www.jatirkhantha.com.bdসাইফুল চৌধুরী . চট্টগ্রাম : বঙ্গবন্ধুর ছবি বিকৃতির ঘটনায় আজ চট্টগ্রামে বিশ্ব বাণিজ্য কেন্দ্রে সংবাদ সম্মেলন করেন সাংসদ এম এ লতিফ। তাঁর উপস্থিতিতে ওই ঘটনার দায় স্বীকার করেন ডিজাইনার। বঙ্গবন্ধুর ছবি বিকৃতির জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত ছাপাখানা প্রতিষ্ঠানের ডিজাইনারকে দায়ী করেছেন সাংসদ এম এ লতিফ। ডিজাইনারও সাংবাদিকদের সামনে এ ভুলের দায় স্বীকার করে ক্ষমা চেয়েছেন।

আজ রোববার দুপুর দেড়টার দিকে বিশ্ব বাণিজ্য কেন্দ্রে বঙ্গবন্ধু সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলন ডেকে ডিজাইনারকে দায়ী করা ও তাঁর দায় স্বীকারের এ ঘটনা ঘটে। চট্টগ্রাম চেম্বার এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।

বঙ্গবন্ধুর ছবি বিকৃতির জন্য গতকাল শনিবার একই স্থানে সংবাদ সম্মেলনে নগর আওয়ামী লীগের বিরোধী পক্ষের প্রতি ইঙ্গিত করেছিলেন সাংসদ এম এ লতিফ। সাত বছর ধরে তাঁর বিরুদ্ধে চলা ধারাবাহিক ষড়যন্ত্রের অংশ বলেও দাবি করেছিলেন তিনি। সাংবাদিকেরা আজ এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার অতীত অভিজ্ঞতা থেকে মনে হয়েছিল, হয়তো তারা সম্পৃক্ত থাকতে পারে। এখন যেহেতু বিষয়টি উঠে এসেছে, সে জন্য অবশ্যই এখন এই অভিযোগ প্রত্যাহার করে নিচ্ছি।’

গত ৩০ জানুয়ারি বিশ্ব বাণিজ্য কেন্দ্র উদ্বোধন উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চট্টগ্রাম সফরকে ঘিরে বঙ্গবন্ধুর ছবিসহ ফেস্টুন টাঙানো হয় নগরের বিভিন্ন এলাকায়। এসব ফেস্টুনে বঙ্গবন্ধুর ছবি বিকৃত করা হয়েছে বলে সাংসদ এম এ লতিফের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। এ ঘটনার পর প্রতিদিন নগরীতে ছাত্রলীগ-যুবলীগের কর্মীরা সাংসদ এম এ লতিফের বিচার দাবিতে মিছিল-সমাবেশ করছেন।

চট্টগ্রাম আদালতে এম এ লতিফের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও সাংসদের সমালোচনা শুরু হয়।

সংবাদ সম্মেলনে সাংসদ এম এ লতিফ বলেন, ‘যারা কাজ (ফেস্টুন ও ব্যানার ছাপানোর) করেছে তাদের সবাইকে আমি অভিযুক্ত করেছি। বলেছি, তোমাদের বলতে হবে কীভাবে কী হয়েছে। গতকাল সন্ধ্যায় তারা স্বীকার করেছে। এ বিষয়টি তাদের মুখ থেকে আপনারা শুনুন।’ এ সময় হায়দার প্রিন্টার্সের গ্রাফিকস ডিজাইনার কবির হোসেন সাংবাদিকদের কাছে ছবি বিকৃতির ব্যাখ্যা দেন।

বঙ্গবন্ধুর ছবি বিকৃতির জন্য ক্ষমা চেয়ে কবির হোসেন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর চট্টগ্রাম সফরের সময় চেম্বারের আমন্ত্রণ পত্রসহ অনেক অনুষ্ঠানের কাজ ছিল আমাদের হাতে। সময়সীমা ছিল কম। ১০ ফুট লম্বা ও ৫ ফুট প্রস্থের ব্যানারের জন্য বঙ্গবন্ধুর দাঁড়ানো ভালো ছবি পাইনি।

তাড়াহুড়োর কারণে তখন মুজিব কোট পরা একজনের ছবি খুঁজছিলাম। চেম্বারের এসব ব্যানার লাগানোর দায়িত্বে থাকা রাজীব দাশের মুঠোফোন থেকে এমপি স্যারের ছবি নিই। পরে বঙ্গবন্ধুর মুখমণ্ডলের সঙ্গে ওই ছবির বডি জুড়ে দিই। এমপি সাহেব বিষয়টি জানতেন না।’ এ সময় সেখানে থাকা রাজীব দাশ বলেন, ‘ভুল করেছি আমি। আমি অপরাধী। ক্ষমা চাচ্ছি।’

কবির হোসেনের স্বীকারোক্তির পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন এম এ লতিফ। চট্টগ্রাম চেম্বারের প্রচারণায় আপনার নাম ব্যবহার করে কেন ফেস্টুন ছাপা হয়েছে?—সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ফেস্টুনে আমার লেখা। লেখক হিসেবে এবং শতবর্ষ উদ্‌যাপন কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবেই আমার নাম এসেছে। এটি আমার টাকায় হয়েছে। তবে চেম্বারের কাজে লেগেছে।’

সাংবাদিকেরা জানতে চান, উদ্‌যাপন কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে আপনার তত্ত্বাবধানে হয়েছে কাজগুলো, তাহলে আপনার ব্যর্থতা বা এই দায়ভার আপনি নেবেন কি না? লতিফ বলেন, ‘আমার শত সফলতার সঙ্গে ব্যর্থতার একটা অংশ থাকবে। কাজ করতে গেলে সফলতার পাশাপাশি ব্যর্থতা থাকে। এটা স্বাভাবিক।’

ভুল স্বীকার করায় ডিজাইনের বিরুদ্ধে আপনি ব্যক্তিগতভাবে বা চেম্বারের শতবর্ষ কমিটি থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না?—এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন,‘আদালতে মামলা হয়েছে। একই বিষয় নিয়ে একাধিক মামলা করার দরকার হয় না।’ নিজের মান হানি হয়েছে বলে উল্লেখ করে লতিফ বলেন, ‘আমি তো জাতির কাছে একেবারে নিলাম হয়ে গেলাম। আমার অনেক ক্ষতি হয়েছে।’

জামায়াতের সঙ্গে সম্পৃক্ততা নিয়ে অনেকেই অভিযোগ করেন আপনার বিরুদ্ধে?—জবাবে এই সাংসদ বলেন, ‘আমি ছোটবেলা থেকে কোনো দলের সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিলাম না। কেউ বলতে পারলে আমি এখান থেকে বা যেকোনো দায়িত্ব থেকে উঠে চলে যাব। রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে না পারলে কোনো না কোনো ব্র্যান্ডে ব্র্যান্ডিং করতে হবে, এটাই আমাদের এখানে হচ্ছে।’