• বৃহস্পতিবার , ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪

প্রেমের অাঁকাবাঁকা লাইনে দগ্ধ সুমনের আর্তনাদ!


প্রকাশিত: ১১:২৭ পিএম, ২৩ এপ্রিল ১৭ , রোববার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৫০ বার

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার :  প্রেমের অাঁকাবাঁকা লাইনে দগ্ধ সুমন আর্তনাদ করছে হাসপাতালে ! জীবন 12মৃত্যুর সন্ধিক্ষণ ওর। রাজধানীর ধানমন্ডির ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে স্নাতক সম্পন্ন করেন যশোরের ছেলে সুমন কুমার পাল (২৬)। একই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ’র এক ছাত্রীর সঙ্গে দুই বছর আগে তাঁর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

সুমন হিন্দু হলেও তার প্রেমিকা মুসলিম। এতেই বাঁধে এক বিপত্তি। সুন্দর এক পরিণতির জন্য শর্ত জুড়ে দিয়েছিল সেই প্রেমিকা। পরিবারের ওপর নির্ভর হয়ে নয়, নিজের পায়ে দাঁড়িয়েই জয় করতে হবে প্রেমিকাকে। তাই মাস্টার্সে ভর্তি না হয়ে হন্যে হয়ে চাকুরি খুঁজতে থাকেন সুমন।

এদিকে স্বজনরাও তাকে প্রেমের পথ থেকে সরে আসতে বলছিলেন। এক সময় মুখ ফিরিয়ে নেয় প্রেমিকাও। এড়িয়ে চলতে শুরু করে সুমনকে। এমন এক পরিস্থিতির হতাশায় প্রেমিকার সামনে শরীরে কেরসিন ঢেলে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন তিনি। সুমনের ঘনিষ্ঠ একাধিক সূত্র এসব তথ্য জানায়।

শনিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে ধানমন্ডির সোবহানবাগ ডেন্টাল কলেজ হোস্টেলের পাশে ঘটনাটি ঘটেছিল। এরপর ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয় সুমনকে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তার শ্বাসনালীসহ শরীরে ৩৬ শতাংশ পুড়ে গেছে। অবস্থা সংকটাপন্ন। রবিবার তাকে লালমাটিয়ার সিটি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।

সুমনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর শ্রেণির ছাত্র কামরুল শিকদার। তিনি জাতিরকন্ঠকে বলেন, সুমন খুব ভদ্র ছেলে। সে কীভাবে এমনটি করলো তা আমারও মাথায় আসছিল না। পরে কিছুটা জেনেছি। বিবিএ-এর একটি মেয়ের সঙ্গে দুই বছর থেকে ওর প্রেম ছিল। মেয়েটি মুসলিম। এখন হয়ত নতুন করে টানাপোড়ান হয়েছে। তবে সুমনের মুখ থেকে কিছু শুননি।

সুমনের দুই বন্ধ বলেন, দুই বছর আগে মুসলিম মেয়েরি সঙ্গে সুমনের প্রেম হয়। অনার্স শেষ হতে না হতেই মেয়েটি সুমনকে চাকরি করে নিজের পায়ে দাঁড়াতে বলে। সুমন চাকুরির জন্য চেষ্টা করছিল। অন্যদিকে সুমনের বাড়ি থেকেও সম্পর্কটি মেনে নিচ্ছিল না। দেড় মাস আগে থেকে প্রেমিকাও সুমনকে এড়িয়ে চলতে শুরু করে।

এক মাস ধরে সে সুমনের সঙ্গে দেখাও করেনি। সুমন ধানমিন্ডর তল্লাবাগে থাকেন। প্রেমিকাও কাছাকাছি এলাকায় থাকেন। কয়েকদিন ধরেই সুমন তাঁর সঙ্গে দেখা করতে চাইছিলেন। কিন্তু সেই প্রেমিকা রাজি হয়নি। উল্টো সুমনের সঙ্গে সম্পর্কটি আর টেনে নিতে চান না বলে জানায় সে। এতে চরম হতাশায় পড়েন সুমন।

বন্ধুরা বলেন,  সুমন অনেক বুঝিয়ে তার প্রেমিকাকে শনিবার দেখা করতে রাজি করেন। সন্ধ্যায় সোবহানবাগ ডেন্টাল কলেজ হোস্টেলের পাশে দেখা হয় তাদের। সেখানেও প্রেমিকা সুমনকে জানিয়ে দেয়, এই সম্পর্ক আর এগিয়ে নিতে চায়না সে। এ সময় প্রেমিকার সামনেই নিজের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন সুমন।

হতাশা থেকে এ কাজ করলেও প্রেমিকা সুমনকে রক্ষা করার চেষ্টা করেনি বলেও অভিযোগ করেন বন্ধুরা। তাঁরা বলছেন, সুমন হিন্দু জেনেও ওই মেয়েটি তার সঙ্গে প্রেম করেছিল। সুমনের মানসিক অবস্থা ভালো যাচ্ছিল না। এরমধ্যে দুই বছর পরে প্রেমিকার কাছ থেকে আঘাত পেয়ে সে সহ্য করতে পারেনি। ঘটনার জন্য প্রেমিকাকেই দায়ী করেন তাঁরা।