• শুক্রবার , ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪

পঞ্চগড়ে ১১০০ শীতার্থে শীতবস্ত্র দিল বসুন্ধরা


প্রকাশিত: ১০:৫০ পিএম, ১৯ ডিসেম্বর ২১ , রোববার

নিউজটি পড়া হয়েছে ১২৬ বার

পঞ্চগড় প্রতিনিধি : ঋতু পরিক্রমায় শীতের সবে শুরু। কিন্তু উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে শীত এসেছে আরও আগেই। উত্তরে হিমালয় পর্বতমালা কাছে হওয়ায় বরাবরই এ জেলায় শীতের প্রকোপ একটু বেশি। শীতের বেশিরভাগ সময় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বিরাজ করে এই জেলায়। গত এক সপ্তাহ ধরে পঞ্চগড়ের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করছে। সেই সাথে সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত কুয়াশায় ঢাকা থাকছে চারপাশ। অন্যান্য কোন প্রকৃতিক দুর্যোগ এই জেলার মানুষকে তেমন ক্ষতি না করলেও শীত নিয়ে আসে দুর্ভোগ। জেলার খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের অসহায় মানুষেরা শীতে কষ্টে দিন কাটান। প্রয়োজনীয় সংখ্যক শীতবস্ত্র না থাকায় সকাল ও সন্ধ্যায় খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করেন তারা। সরকারিভাবে জেলার জন্য যে পরিমাণ শীতবস্ত্র বরাদ্দ দেয়া হয়েছে তা জেলার বিরাট অঙ্কের দরিদ্র শীতার্তদের তুলনায় খুবই কম। তাই হাড়কাঁপা শীতেও অনেক দরিদ্র ও অসহায় মানুষের কাছে পৌছে না শীতবস্ত্র। এমন পরিস্থিতিতে এবারও পঞ্চগড়ের দরিদ্র শীতার্তদের পাশে দাঁড়িয়েছে দৈনিক কালের কণ্ঠ শুভসংঘ। বসুন্ধরা গ্ৰুপের সহযোগিতায় রবিবার পঞ্চগড় সদর, বোদা ও দেবীগঞ্জ উপজেলার আদিবাসীসহ মোট ১১০০ দরিদ্র মানুষের হাতে শীতবস্ত্র পৌছে দেয় শুভসংঘের সদস্যরা।

রবিবার বিকেলে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার বালাভির আদিবাসী পল্লীতে ২০০ আদিবাসীর হাতে শীতবস্ত্র তুলে দেয়া হয়। বোদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোলেমান আলী শীতার্তদের হাতে শীতবস্ত্র তুলে দেন। পৌষের শুরুতেই হাতে শীতবস্ত্র পেয়ে আদিবাসী পল্লী মলিন মুখগুলো ফোটে স্বস্তির হাসি। এ সময় বোদা প্রেসক্লাবের সভাপতি নজরুল ইসলাম, শুভসংঘের সভাপতি ফিরোজ আলম রাজিব, সহসভাপতি হৃদয় চন্দ্র সিংহ, সহসভাপতি ইমরান নাজির, সাধারণ সম্পাদক নুর ইসলাম আলিফ, সদস্য নয়ন খান উপস্থিত ছিলেন।

আদিবাসী বৃদ্ধা মঙ্গলী মুরমু বলেন, আমরা বরাবরই অবহেলিত। করোনার কঠিন সময়েও শুভসংঘ আমাদের হাতে ত্রাণ তুলে দিয়েছে। এবার পৌষের শুরুতেই তারা আবারো শীতবস্ত্র নিয়ে হাজির। বসুন্ধরা গ্ৰুপ ও শুভসংঘের এই ভালোবাসার কোন প্রতিদান হয় না। সৃষ্টিকর্তা তাদের মঙ্গল করুক।শিঙ্গামনি হেম্রম বলেন, শীত এলেই আমরা দুর্ভোগে পড়ে যাই। ঘন কুয়াশা আর ঠান্ডা বাতাসের কারণে কাজে যেতে পারি না। এই সময়ে কাজও তেমন পাওয়া যায় না। তাই খড়কুটো জ্বালিয়ে আগুন তাপাই। এখন এই কম্বল গায়ে দিয়ে রাতে শান্তিতে ঘুমাতেও পারবো বাইরে বের হতেও পারবো।


এদিকে সকালে দেবীগঞ্জ পাবলিক ক্লাব চত্বরে ২০০ জন ও দেবীগঞ্জ উপজেলার খোঁচাবাড়ি ঢাকাইয়াপাড়া মসজিদ চত্বরে আরও ২০০ জন এবং পঞ্চগড় সদর উপজেলা ও বোদা উপজেলার চারটি ভেন্যুতে ৫০০ জন দরিদ্র শীতার্তকে শীতবস্ত্র দেয়া হয়। এছাড়া বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে পথচারীদের শীতবস্ত্র তুলে দেন শুভসংঘের সদস্যরা।শুভসংঘ পঞ্চগড়ের সভাপতি ফিরোজ আলম রাজিব বলেন, শুভ কাজে সবার পাশের থাকায় অঙ্গীকার নিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আমরা এবার শীতে পঞ্চগড়ের কষ্টে থাকা খেটে খাওয়া ২ হাজার মানুষের হাতে আমরা বসুন্ধরা গ্ৰুপের সম্মানিত চেয়ারম্যান মহোদয়ের সহযোগিতায় শীতবস্ত্র পৌছে দিতে পেরেছি। আমরা খুঁজে খুঁজে প্রকৃত দরিদ্র শীতার্তদের হাতে শীতবস্ত্র তুলে দিয়েছি। এতগুলো মানুষকে শীতের উষ্ণতা দিতে পেরে আমরা অনেক খুশি। অসহায় মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে পেরেছি এটাই আমাদের বড় স্বার্থকতা।


দেবীগঞ্জ সরকারি কলেজের শিক্ষক নাসির উদ্দিন চৌধুরী বলেন, আমরা একটা বিষয় লক্ষ্য করেছি যখন মানুষের যেটা প্রয়োজন শুভসংঘ সেটা নিয়েই হাজির হয়। পঞ্চগড়ে পৌষের শীত চলছে। এই শীতে শীতবস্ত্র দেয়াটা জরুরি ছিলো। শুভসংঘ ও বসুন্ধরা গ্ৰুপ সেটিই করেছে।বোদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোলেমান আলী বলেন, আমরা সরকারিভাবে যে বরাদ্দ পাই তা বিরাট অঙ্কের দরিদ্র শীতার্তদের তুলনায় কম। তাই সরকারের পাশাপাশি বসুন্ধরা গ্ৰুপ ও শুভসংঘের মতো বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো এগিয়ে এলে পঞ্চগড়ের অসহায় দরিদ্র শীতার্তদের কষ্ট অনেকটাই কমে আসবে।