• শুক্রবার , ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪

এবার বসুন্ধরা গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যানকে ব্ল্যাকমেইল-ফেসবুক-ইউটিউবে প্রতারণা


প্রকাশিত: ১০:১০ পিএম, ২২ জুন ২২ , বুধবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৮৫ বার

বিশেষ প্রতিনিধি : এবার বসুন্ধরা গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যানকে ব্ল্যাকমেইল করছে এক প্রতারক। এই প্রতারক ফেসবুক-ইউটিউবে নিজেকে তিনি পরিচয় দেন “ওয়ান অব দ্য ইয়াংগেস্ট ম্যানেজিং ডিরেক্টর” এবং দেশের বৃহত্তম শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের “ভাইস চেয়ারম্যান” হিসেবে। ছবি হিসেবে নিজেরটা ব্যবহার করলেও বসুন্ধরা গ্রুপের পারিবারিক পরিচয় দিচ্ছেন এই প্রতারক। হাতে আসা তার ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্রে পরিচয় লেখা: নাম সিয়াম সোবহান সানভির (Siam Sobhan Sanvir), পিতা: আহমেদ আকবর সোবহান, মাতা: আফরোজা সোবহান। জন্মতারিখ: ২ ডিসেম্বর, ১৯৯২। জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর ৩৭৫৪৮৯৫৯৩৩। ঠিকানা উল্লেখ করা হয়েছে: বাসা/হোল্ডিং ১৪৩, গ্রাম/রাস্তা বসুন্ধরা, ডাকঘর ভাটারা, ভাটার, ঢাকা। জাতীয় পরিচয়পত্র ২ মে, ২০১৭ সালে হস্তান্তর করা হয় বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ফ্লুজি গার্মেন্টস নামের একটি অস্তিত্ববিহীন প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান হিসেবেও দাবি করছেন এই প্রতারক। আর এসব ভুয়া তথ্য দিয়ে বেশ কয়েকটি ফেসবুক আইডি, ফেসবুক পেইজ, ইউটিউব চ্যানেল, টুইটার ও লিকডইন একাউন্ট খোলা হয়েছে।

তার বিরুদ্ধে ভুয়া এই পরিচয় ব্যবহার করে সাধারণ মানুষকে হয়রানি ও প্রতারণারর অভিযোগ উঠছে। এ পরিস্থিতিতে আইনি ব্যবস্থা চেয়ে বুধবার রাজধানীর ভাটারা থানায় বসুন্ধরা গ্রুপের তরফে সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। ডায়েরিটি করেন বসুন্ধরা গ্রুপের প্রতিষ্ঠান ইডাব্লিউপিডি’র সিনিয়র অফিসার দেলদার আহমেদ।

ওসি বরাবর লেখা ডায়রিতে বলা হয়, “সিয়াম সোবহান সানবীর নামের এক ব্যাক্তি ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও ইউটিউব-এ বসুন্ধরা গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান পরিচয় দিয়ে একটি অ্যাকাউন্ট খুলেছেন। সেই একাউন্ট ও ফেসবুক পেইজ থেকে বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবসা সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয়ে পোস্ট দিচ্ছে। যার প্রমাণ সংযুক্তিতে দেয়া হলো। এছাড়া, বসুন্ধরা গ্রুপের মাননীয় চেয়াম্যান আহমেদ আকবর সোবহানকে নিজের পিতা ও আফরোজা সোবহানকে মাতা পরিচয় দিয়ে সিয়াম সোবহান সানবীর জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করেছেন। সম্প্রতি বিষয়টি আমাদের গোচরীভুত হয়। এমনকি সানবীর নামের লোকটি অসামাজিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়াচ্ছে বলেও নানা জায়গা থেকে খবর পাওয়া যাচ্ছে। এ ছাড়া Siam Sobhan Sanvir নামের ইউটিউব চ্যানেল থেকে নিয়মিত ভিডিও প্রকাশ করা হচ্ছে। এসব কর্মকাণ্ড বসুন্ধরা সুনাম ক্ষুণ্ন করছে।

তার ফেসবুকের আইডি: https://www.facebook.com/siamsobhan.sanvir
তার ফেসবুক পেইজ: https://www.facebook.com/siamsobhan.sanvir
ইনস্টাগ্রাম একাউন্ট: https://www.instagram.com/siamsobhan/
ইউটিউব লিংক: https://www.youtube.com/c/SiamSobhanSanvir
লিংকডইন: https://www.linkedin.com/in/siam-sobhan-sanvir-90b39a232/

ডায়েরিতে আরো বলা হয়, প্রতারকের দুইটি মোবাইল নম্বর ওয়েবসাইটে পাওয়া যাচ্ছে। এগুলো হচ্ছে ০১৮৩৭৬৮৬০৭৭, ০১৯৮৪৫৯৪৮৪৪। ফোন করে দুইটি নম্বরই বন্ধ পাওয়া গেছে। ট্রুকলারে অনুসন্ধান করে দেখা যায় ০১৮৩৭৬৮৬০৭৭ নম্বরটি Sanvir Sobhan নামে সেইভ করা। পাওয়া গেছে অভিযুক্তের টুইটার একাউন্টও। https://www.twitter.com/SiamSobhan-টুইটারের এই লিংকে ঢুকে ঢুকে দেখা যায় কভার ছবির এক পাশে বড় করে লেখা: Siam Sobhan Sanvir, Vice Charman of Bashundhara Group.

তার ফেসবুক পেজ www.facebook.com/siamsobhan ঘুরে দেখা যায়, তিনি নিজের ছবি দিলেও বসুন্ধরা গ্রুপের লোগোর সাথে নিজেকে বসুন্ধরা গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান পরিচয়ে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন। একটি পোস্টে লেখা : প্রচণ্ড শীত কিংবা ঝড়-বৃষ্টি যা-ই থাক, প্রতিদিন সূর্যের আলো ফোটার আগেই জনগণের হাতে পৌঁছে যায় দেশের খবর। কিন্তু প্রতিনিয়ত যারা এই কাজ করেন তাদের খবর রাখে না কেউ, হাজারো কষ্টে কাউকে পাশে পান না তারা। বলছি পত্রিকার হকারদের কথা। বরাবরের মতো গণমাধ্যমের অন্তরালের এই নায়কদের পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে দেশের শীর্ষ শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপ। দুর্ঘটনা-অসুস্থতাসহ যেকোনো বিপদে সারাদেশের ১৫ হাজারের বেশি হকারের পাশে থাকবে বসুন্ধরা।

অভিযুক্তের ফেসবুকের একটি প্রোফাইল আইডির পরিচয় হিসেবে লেখা: Vice Chairman at Bashundhara Group, Studied at New York University, Went to New York Military Academy, Lives in New City, New York.

জানা যায়, সম্প্রতি এই প্রতারকের প্রতারণার শিকার হন দুই তরুণী। হাতে আসা একটি লিখিত অভিযোগপত্রে দেখা যায়, সম্প্রতি এক রিসোর্টে এই “ইয়াংগেস্ট ম্যানেজিং ডিরেক্টর” এর নামে ৭০ হাজার ৩৮ টাকার বিল আসে। এই প্রতারক ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নিয়ে আসছেন বলে বের হয়ে যান এবং যাওয়ার সময় দুই তরুণীর একজনের একটি দামি আইফোন নিয়ে যান। এ ঘটনায় ১১ জুন থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন তারা। থানায় অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে অভিযোগকারী এক তরুণী। এর আগেও দেশের মন্ত্রী, উপমন্ত্রী, সরকারি ঊর্ধতন কর্মকর্তা বা সরকারদলীয় বিভিন্ন নেতাদের নামে ফেসবুক একাউন্ট খুলে প্রতারণার অভিযোগ ওঠে বিভিন্ন জনের বিরুদ্ধে।