‘উল্টোপথে গাড়ি চালালে এবার ব্যবস্থা’
স্টাফ রিপোর্টার : ‘উল্টোপথে গাড়ি চালালে এবার ব্যবস্থা ‘ নেয়া হবে। তিনি যেই হোন না কেন ট্রাফিক আইন ভঙ্গ করে উল্টোপথে গাড়ি নিয়ে গেলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন ঢাকার পুলিশ কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া। বুধবার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে ‘শব্দ দূষণ ও হাইড্রলিক হর্ন বন্ধে করণীয়’ নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পুলিশ কমিশনার বলেন, কয়েক সপ্তাহ আগে মাননীয় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের মিডিয়াতে স্পষ্টভাবে বলেছেন, কোনো মন্ত্রী-এমপির গাড়িও উল্টাপথে চলতে পারবে না। যদি আইন অমান্য করেন, তাহলে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।উল্টোপথে গাড়ি চলাচলে বাধা দিলে পুলিশকেও যে নাজেহাল হতে হয়, সে কথাও সংবাদ সম্মেলনে বলেন পুলিশ কমিশনার।
আমাদের কঠোর অবস্থানের পরও এখনও অনেক ক্ষেত্রে বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়। তথাকথিত প্রভাবশালী মহল এখনো উল্টোপথে গাড়ি চালাতে চায়। এতে পুলিশ বাধা দিলে তাদেরকে নাজেহাল করার অপপ্রয়াস আমরা দুঃখের সঙ্গে লক্ষ্য করছি। কিন্তু কোনো কিছুকে তোয়াক্কা না করে আমরা আমাদের পেশাদারিত্ব পালন করে যাচ্ছি।
পুলিশ কমিশনার বলেন, আমি বিনয়ের সাথে আপনাদের মাধ্যমে সবাইকে জানাতে চাই, পরিচয় যাই হোক, ট্রাফিক আইন ভায়োলেশন করলে, উল্টোপথে গেলে, সিগন্যাল ভায়োলেশন করলে, অবৈধ পার্কিং করলে তার বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করব। তবে ট্রাফিক ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা ‘রাতারাতি’ সম্ভব নয় বলেও মন্তব্য করেন আছাদুজ্জামান মিয়া।
আমি মনে করি ট্রাফিক ব্যবস্থার টেকসই উন্নতির জন্য ধাপে ধাপে এগোতে হবে। আমরা সেভাবে এগিয়ে যাচ্ছি। আমাদের একটু সময় দেন। গত এক বছরে যতটুকু অগ্রগতি হয়েছে, আরও এক বছরের মধ্যে ট্রাফিক আইন ভঙ্গের অপতৎপরতা ও অভ্যাস নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে।
নগরীর ট্রাফিক ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা আনতে গত এক বছরে যেসব উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, তাতে অনেক ক্ষেত্রে সফলতা এসেছে বলে দাবি করেন তিনি। ডিএমপি কমিশনার দাবি করেন, উল্টাপথে গাড়ি চলা, মোটরসাইকেলে তিনজন যাত্রী ওঠা, হেলমেট ব্যবহার না করা, বিভিন্ন ধরণের স্টিকার ব্যবহার করে ট্রাফিক আইন ভঙ্গ করা, হাইড্রলিক হর্নের অননুমোদিত ব্যবহার ‘অনেকটা কমে এসেছে’। নগরীর শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণে পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের অভিযানে গত এক বছরে ১০ হাজার হাইড্রলিক হর্ন জব্দ করা হয়েছে বলে তথ্য দেন তিনি।
যানজটকে রাজধানীর প্রধান সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, এর বিভিন্ন কারণ আছে। এক দিকে প্রয়োজনের তুলনায় রাস্তার সংখ্যা কম, অন্যদিকে উন্নয়নমূলক কাজের জন্য রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি। রিক্সার আধিক্য, ইউটিলিটি কাজের জন্য রাস্তা কেটে ফেলাসহ বহু কারণে যানজট প্রকট আকার ধারণ করে।
এর মধ্যে ট্রাফিক আইন লঙ্ঘন হলে যানজট ভয়াবহ আকার ধারণ করে বলে মন্তব্য করেন আছাদুজ্জামান মিয়া। নাগরিকদের মনোভাব নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ, এমনকি আফ্রিকার দেশেরও ট্রাফিক সিগন্যাল মানা হয়, কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমাদের দেশে ট্রাফিক সিগন্যাল কেউ মানতে চায় না।
আইন মেনে সুশৃঙ্খলভাবে কেউ গাড়ি চালাতে চায় না। কেউ ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার করতে চায় না। ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পারাপার হয়। হেলমেট ছাড়া মোটরসাইকেল চালানো হয়। ওয়ানওয়ে রোড মানে না, উল্টাপথে গাড়ি চালিয়ে যানজটকে ভয়াবহ আকারে নিয়ে যাওয়া হয়।তবে পুলিশ ব্যবস্থা নেওয়ায় এবং নগরবাসীর সহযোগিতায় ‘পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে’ বলে তিনি জানান।