• শুক্রবার , ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪

ইমরানের ভয়ে অস্থির পাকিস্তান সরকার-রাজধানীজুড়ে কনটেইনার বাঁধ


প্রকাশিত: ৪:৩৩ পিএম, ২৪ নভেম্বর ২৪ , রোববার

নিউজটি পড়া হয়েছে ২৭ বার

 

 


কূটনৈতিক রিপোর্টার : পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খানের ভয়ে সরকারের যেন বেহাল অবস্থা বিরাজ করছে। ইমরানকে মুক্ত করতে ডাকা বাঁচা-মরার বিক্ষোভ আজ রোববার (২৪ নভেম্বর) ইসলামাবাদে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। পাকিস্তান সরকার এই বিক্ষোভ ঠেকাতে ইতোমধ্যে কড়া ব্যবস্থা নিয়েছে। এনিয়ে পাকিস্তানের বিভিন্ন জায়গাজুড়ে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

জিও নিউজের লাইভ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিক্ষোভ দমাতে ইতোমধ্যে ইসলামাবাদ পুলিশ বিভিন্ন গেস্ট হাউস, হোস্টেলে অভিযান চালিয়েছে। এসব জায়গা থেকে পিটিআইয়ের সমর্থক-কর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। রোববার পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এরই মধ্যে পাকিস্তান সরকার ইন্টারনেট ও মোবাইল ফোন সেবা বন্ধ করে দিয়েছে। আদালত ইমরান খানের দলীয় নেতা-কর্মী-সমর্থকদের ইসলামবাদে জমায়েত হওয়ার জন্য ইমরান খানের ‘চূড়ান্ত ডাক’কে অবৈধ বলে ঘোষণা করেছে। তবে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পাওয়া খবর অনুসারে, পিটিআই সমর্থকেরা এসব প্রচেষ্টা থোড়াই কেয়ার করছেন।

করাচি কোম্পানির সীমানা থেকে ৭০ জন, কোশার পুলিশ সীমানা থেকে ৬০ জন, বারাকাহু থেকে ২০ জন এবং রমনা পুলিশ স্টেশনের সীমানা থেকে ইমরানের দলের ২৪ জন সমর্থককে গ্রেপ্তার করে হাজতে নেওয়া হয়েছে। তারনল পুলিশ স্টেশন সীমানা থেকে ৪০ জন, লহি ভাইর পুলিশ স্টেশন সীমানা থেকে আরও ৪৫ জন পিটিআই’র কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে জিও নিউজ। এছাড়া ইসলামাবাদের দিকে যাওয়া পিটিআইয়ের বিভিন্ন কনভয় আটকে দেওয়া হয়েছে।

ইমরান খানের ডাকা এই বিক্ষোভ রুখে দিতে ইসলামাবাদে ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে। ইসলামাবাদের আইজি সতর্ক করেছেন যে, কেউ আইনশৃঙ্খলা এবং ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাঞ্জাবেও তিনদিনের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন জায়গায় মোবাইল ও ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে।

এক্সপ্রেস ট্রিবিউন বলছে, বিক্ষোভের জেরে ইসলামাবাদজুড়ে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ইসলামাবাদের প্রধানপ্রধান সড়কগুলো ঘিরে রাখা হয়েছে এবং রেড জোনে যাওয়ার দিকে রাস্তাগুলো ব্লক করা হয়েছে। এ ছাড়া শহরজুড়ে বিভিন্ন কনটেইনার রাখা হয়েছে। শ্রীনগর হাইওয়ে থেকে শুরু করে জিটি রোড, এক্সপ্রেসওয়েতে কনটেইনার রাখা হয়েছে। ডি-চৌক, ইসলামাবাদ বিমানবন্দর, এ-১১ পয়েন্টে প্রবেশাধিকার কমানো হয়েছে।

এলাকাগুলোতে নজরদারিতে দিতে রেঞ্জার, পুলিশ ও ফ্রন্টিয়ার কন্সটাবুলারি মোতায়েন করা হয়েছে। যেকোনো ধরনের বেআইনি বিক্ষোভ রুখে দেওয়ার সতর্ক বার্তা দিয়েছে ফেডারেল সরকার। করাচি পুলিশ তাদের সকল কর্মীদের ছুটি বাতিল করেছে। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মুলতানে তিন শতাধিক পিটিআই কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর আগে তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার বলেছেন, ইসলামাবাদে কেউ এলেই তাকে গ্রেপ্তার করা হবে। এদিকে পিটিআই’র কর্মকর্তারা জানিয়েছেন তারা যেকোনো ভাবেই হোক বিক্ষোভ করবেন এবং ইমরান খানকে জেল থেকে মুক্তি দিতে হবে।

পিটিআইয়ের এক্স হ্যান্ডেলে শেয়ার করা বিভিন্ন পোস্টের তথ্য অনুসারে, পেশোয়ারের জেলা সভাপতি ইরফান সেলিমের মিছিল, বান্নু থেকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী পাখতুন ইয়ার খানের নেতৃত্বাধীন মিছিল এবং খাইবার পাখতুনখাওয়ার মন্ত্রী ড. আমজাদ আলীর নেতৃত্বাধীন মিছিল ইসলামাবাদের পথে রয়েছে। পিটিআই দক্ষিণ পাঞ্জাবের সভাপতি সিনেটর আওন আব্বাস এবং জারতাজ গুল ওয়াজিরের নেতৃত্বে আরও একটি মিছিল যাত্রা করেছে।একটি পোস্টে পিটিআই জানিয়েছে, প্রতিবাদকারীদের ইংরেজি সাইনবোর্ড এবং প্ল্যাকার্ড বহন করতে হবে, যাতে তাদের বার্তা আন্তর্জাতিকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। এতে বলা হয়েছে, ‘ন্যায়বিচার, গণতন্ত্র ও সংবিধানসম্মত পাকিস্তানের জন্য আমাদের কণ্ঠস্বর যেন বিশ্বময় প্রতিধ্বনিত হয়!’