• শুক্রবার , ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪

আল জাজিরার প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের


প্রকাশিত: ৯:২৪ পিএম, ৫ ফেব্রুয়ারি ২১ , শুক্রবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ১৮৯ বার

স্টাফ রিপোর্টার : ২ ফেব্রুয়ারি কাতারভিত্তিক আন্তর্জাতিক টেলিভিশন চ্যানেল আল–জাজিরায় ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টারস মেন’ শিরোনামে প্রচারিত প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে এর প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন। আজ শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো পুলিশ অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিবাদে বলা হয়েছে, আল–জাজিরায় প্রচারিত খবর দুরভিসন্ধিমূলক ও অসৎ উদ্দেশ্যে প্রচারিত হয়েছে।

প্রতিবেদনে জনৈক ব্যক্তির বক্তব্য উপস্থাপন করা হয়েছে। সেখানে ওই ব্যক্তি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার উৎকোচ নিয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পদায়নের কথা উল্লেখ করেছেন। ওই ব্যক্তি এ ধরনের বক্তব্য দিয়েছেন নাকি কাট, কপি ও পেস্ট করে এ বক্তব্য তৈরি করা হয়েছে, সে সম্পর্কে অ্যাসোসিয়েশন নিশ্চিত নয়। তবে প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা গেছে, ওই ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে বিদেশে অবস্থান করছেন। বিদেশে থাকায় বর্তমান প্রজন্মের পুলিশিং এবং পুলিশের কার্যপদ্ধতি সম্পর্কে তাঁর কোনো স্বচ্ছ ধারণা নেই। বাংলাদেশ পুলিশের বর্তমান প্রজন্মের কর্মকর্তাদের সঙ্গে তাঁর কোনো ধরনের সম্পৃক্ততা নেই। সাক্ষাৎকারে পুলিশ সম্পর্কে তাঁর প্রদত্ত বক্তব্য কল্পনানির্ভর বলে প্রতীয়মান হয়েছে।
বিজ্ঞাপন

প্রতিলিপিতে উল্লেখ করা হয়, জনৈক ব্যক্তি তাঁর বক্তব্যে ডিএমপির এয়ারপোর্ট থানায় ওসি বদলি সম্পর্কে বক্তব্য দিয়েছেন। ডিএমপির এয়ারপোর্ট থানা-পুলিশের অধিক্ষেত্র অন্যান্য থানার মতো বিস্তৃত নয়। ডিএমপির ৫০ থানার আয়তনের দিক বিবেচনায় সবচেয়ে ক্ষুদ্রতম আয়তনের থানা এয়ারপোর্ট থানা। এই থানা এলাকায় অন্যান্য থানার চেয়ে কমসংখ্যক জনগণ বাস করেন। এ ছাড়া হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এয়ারপোর্ট থানার মধ্যে অবস্থিত হলেও এয়ারপোর্ট ও তৎসংলগ্ন সংরক্ষিত এলাকায় এয়ারপোর্ট থানা-পুলিশের কর্মপরিধি অত্যন্ত সীমিত। এয়ারপোর্ট ও সংলগ্ন সংরক্ষিত এলাকার নিরাপত্তাব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন), অ্যাভসেক, ইমিগ্রেশন পুলিশ, কাস্টমস, সিভিল অ্যাভিয়েশন, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, আনসারসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা দায়িত্ব পালন করে।

এ ক্ষেত্রে কোনো ধরনের অপরাধ সংগঠিত হলে বা যৌক্তিকভাবে কোনো ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের প্রয়োজন হলে সুরক্ষিত এয়ারপোর্ট এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাই দায়িত্ব পালন করে। কোনো ঘটনায় মামলা করার প্রয়োজন হলে সংশ্লিষ্ট সংস্থার প্রতিনিধি এয়ারপোর্ট থানায় অভিযোগ দাখিল করেন এবং গ্রেপ্তার ব্যক্তিকে থানায় সোপর্দ করেন। এয়ারপোর্টের সব ধরনের কার্যক্রম সিসিটিভি মনিটরিংয়ের আওতায় রয়েছে। বিভিন্ন পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তারা এয়ারপোর্ট থানার কার্যক্রম সার্বক্ষণিক নজরদারি করছেন। এয়ারপোর্ট এলাকায় নিরাপত্তা টহল কার্যক্রম আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন পালন করে।

আল–জাজিরার প্রতিবেদনে জনৈক ব্যক্তি তাঁর বক্তব্যে এয়ারপোর্ট থানার ওসি বদলি-পদায়নের ক্ষেত্রে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইজিপি ও ডিএমপি কমিশনারের কথা উল্লেখ করেছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী একজন সৎ, সজ্জন ও আদর্শ রাজনৈতিক ব্যক্তি হিসেবে সর্বমহলে সুপরিচিত। থানায় ওসি পদায়নের ক্ষেত্রে প্রশাসনিক কর্মপদ্ধতি অনুযায়ী তিনি কোনোভাবেই সম্পৃক্ত নন। সর্বমহলে গ্রহণযোগ্য একজন সম্মানিত ব্যক্তি সম্পর্কে এ ধরনের বক্তব্য অনভিপ্রেত ও অনাকাঙ্ক্ষিত। বর্তমান আইজিপি বেনজীর আহমেদ ‘ক্লিন ইমেজের’ একজন পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে সুপরিচিত। পুলিশপ্রধান হিসেবে তিনি বাংলাদেশ পুলিশের প্রশাসনিক কর্মপদ্ধতি অনুযায়ী থানায় ওসি বদলি-পদায়নের ক্ষেত্রে কোনোভাবেই সংশ্লিষ্ট নন। এর মাধ্যমে প্রতীয়মান হয়, ওই ব্যক্তির পুলিশে বদলি-পদায়ন সম্পর্কে ন্যূনতম ধারণা নেই।

ডিএমপির বর্তমান পুলিশ কমিশনার একজন দক্ষ কর্মকর্তা হিসেবে সুপরিচিত। তিনি পুলিশ কমিশনার হিসেবে যোগ দেওয়ার পরপরই থানায় আসা সেবাপ্রত্যাশীরা যাতে হয়রানির শিকার না হন এবং যথাযথ আইনি সেবা পান, সে লক্ষ্যে নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। সে ক্ষেত্রে থানায় ওসি বদলি-পদায়নে উৎকোচ গ্রহণের প্রসঙ্গের অবতারণা বাতুলতামাত্র। এতে প্রমাণিত হয় বাংলাদেশ পুলিশের অভ্যন্তরীণ বিষয় সম্পর্কে ওই ব্যক্তির কোনো ধারণাই নেই। এ ধরনের বক্তব্য ব্যক্তির কল্পনাপ্রসূত ও বানোয়াট।বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম এই প্রতিবেদনের নিন্দা জানিয়েছেন।