আমরা সাবধানে গাড়ি চালাব:শপথ
স্টাফ রিপোর্টার : মে দিবসে গণপরিবহনের চালকদের ‘সাবধানে গাড়ি চালানোর’ শপথ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শাজাহান খান।বুধবার রাজধানীর দিলকুশার বক চত্বরে ফেডারেশনের এক শ্রমিক সমাবেশে তিনি বলেন, আজ মহান মে দিবসে আমাদের সকলের একটাই শপথ, আর কোনো দুর্ঘটনা নয়, আমরা সাবধানে গাড়ি চালাব।গণপরিবহনের চালকদের বেপরোয়া চালনার কারণে গতবছর বেশ কয়েকটি দুর্ঘটনা পুরো দেশের মানুষকে নাড়িয়ে দিয়ে যায়। অভিযোগ ওঠে, পরিবহন শ্রমিকদের কয়েকজন নেতা সরকারের মন্ত্রিসভায় থাকায় সড়কে শৃঙ্খলা ফেরানো সম্ভব হচ্ছে না।
দেশের পরিবহন শ্রমিক সংগঠনগুলোর শীর্ষ ফোরাম বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের নেতা শাজাহান খান তখন ছিলেন সরকারের নৌমন্ত্রী। আদালতের রায়ের প্রতিবাদে পুরো দেশের মানুষকে জিম্মি করে পরিবহন শ্রমিকদের আন্দোলন নিয়েও তাকে সমালোচিত হতে হয়েছিল।
সেই শাজাহান খান মে দিবসের সমাবেশে উপস্থিত পরিবহন শ্রমিকদের উদ্দেশে বলেন, সড়কে চালকরা সাবধানে গাড়ি চালাবেন। ওভারটেক করবেন না। মহান মে দিবসে এটাই হোক শপথ।সড়কে দুর্ঘটনা ঘটলে চালকদের না মেরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দেন এই আওয়ামী লীগ নেতা।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাই। তিনি সকলকে আহ্বান জানিয়েছেন কোনো দুর্ঘটনা হলে শ্রমিকদের, চালকদের মারবেন না। তিনি দুর্ঘটনার পর যানবাহন ভাঙচুর না করারও আহ্বান জানিয়েছেন।সড়ক দুর্ঘটনা ঘটলে তার দায় ‘এককভাবে’ চালকদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয় অভিযোগ করে শাজাহান খান বলেন, শ্রমিকদের নিয়োগপত্র থাকলে এককভাবে চালকদের দায়ী করার সুযোগ কমে যেত।
আজকে আমাদের দেশে শ্রমিকরা চাকরির নিয়োগপত্র নিয়ে আন্দোলন করছেন। এই আন্দোলন দীর্ঘদিন ধরে আমরা করে আসছি। আজও শ্রমিকদের নিয়োগপত্র নেই।পরিবহন মালিকদের হুঁশিয়ার করে তিনি বলেন, যে আইন করা হয়েছে, তাতে নিয়োগপত্র না দিলে মালিকদের জরিমানা হবে।বাংলাদেশ শ্রম আইনে বলা হয়েছে, লিখিত চুক্তি ও নিয়োগপত্র না দিয়ে গণপরিবহণে চালক বা কন্ডাক্টর হিসেবে নিয়োগ করতে পারবে না।
নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পর গত বছর পাস হওয়া সড়ক পরিবহন আইনেও চালক ও কন্ডাক্টর নিয়োগের ক্ষেত্রে লিখিত চুক্তি ও নিয়োগপত্র দেওয়ার বাধ্যবাধকতার কথা রয়েছে।একজন চালককে দিয়ে আট ঘণ্টার বেশি সময় একটানা গাড়ি না চালানোর এবং তাদের জন্য বিশ্রামের ব্যবস্থা করার যে নির্দেশনা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিয়েছেন, সে কথাও মনে করিয়ে দেন শাজাহান খান।
পথচারীর দোষে দুর্ঘটনা ঘটলে তার দায়ও শ্রমিকদের ওপর চাপানো হয় মন্তব্য করে শাজাহান খান বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা ঘটলে যে পরিমাণ টাকা জরিমানা করেন আদালত, আমি সবিনয়ে বলতে চাই, জরিমানা করার আগে চিন্তা করা উচিত এই পরিমাণ টাকা মালিক ও শ্রমিকরা দিতে পারবে কি না।এটাও ভাবতে হবে যখন কোনো পথচারী রাস্তার যেখানে সেখানে দিয়ে ইচ্ছামত পার হয়, তখন যদি কোনো দুর্ঘটনা ঘটে এই দায় কী চালকের নিতে হবে? এই বিচারের ভার আমি বিচার কাজে সংশ্লিষ্টদের উপর দিয়ে গেলাম।
ঢাকা মহানগর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মোহাম্মদ আলী শোভার সভাপতিত্বে এ সমাবেশে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুল ওদুদ নয়ন, সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলীসহ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের বিভিন্ন ইউনিটের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।সমাবেশ শেষে ফেডারেশনের নেতাকর্মীরা একটি মিছিল নিয়ে মতিঝিল, দৈনিক বাংলা, পুরানা পল্টন ঘুরে প্রেস ক্লাবে যান।